কলকাতা: জেলায় জেলায় চলছে ভোট কর্মীদের বিক্ষোভ৷ পর্যপ্ত নিরাপত্তা ছাড়া ভোটের কাজ বয়কটের ডাক সরকারি কর্মচারীদের৷ প্রশিক্ষক বয়কট থেকে শুরু করে অবরোধ-বিক্ষোভে উত্তাল বাংলা৷ এই পরিস্থিতি দাড়িয়ে অবশেষে বড় ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের৷
সোমবার ভোটকর্মীদের আশ্বস্থ করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ডঃ আরিজ আফতাব জানান, প্রতিটি বুথে থাকবে পর্যপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী৷ ভোট কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য সমস্ত রমক ব্যবস্থা নেবে কমিশন৷ প্রতিবুথে সশস্ত্র বাহিনী থাকবে৷ মোবাইল ভ্যানও থাকবে৷ কোথায় কোনও আশান্তি হলে কড়া ব্যবস্থা নেবে কমিশন৷ এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ডঃ আরিজ আফতাব বলেন, ‘‘কোনও ভয় নেই৷ সব বুথেই থাকবে পর্যন্ত নিরাপ্তা৷’’ তবে, সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছুই জানানো হয়নি৷
অন্যদিকে, আজ দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে গিয়ে বাংলার প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানিয়ে আসেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ কমিশনের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে ভোট কর্মীদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি৷ একই সঙ্গে বাংলার ভোটারদের নিরাপত্তার জন্য সমস্ত বুথে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়েও আর্জি জানান তিনি৷
কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে সর্বত্র ভোট করানোর দাবিতে ভোট কর্মীদের বিক্ষোভ সর্বত্র চলছে। সোমবার এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে মালবাজার শহরে। শহরে সুভাষিনী বালিকা বিদ্যালয়ে বসেছে ভোটকর্মীদের প্রশিক্ষণ শিবির।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে ভোট কর্মীরা আসতে শুরু করেন। প্রথমার্ধের প্রশিক্ষণের পর আচমকা ভোট কর্মীরা নিরপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। জনৈক ভোট কর্মী বলেন, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমরা কেউ রাজ কুমার হতে চাই না। সবার ঘর সংসার আছে। বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান মালের এসডিও সিয়াদ এন, বিডিও বিমানচন্দ্র দাস ওসি শান্তা শীল। তারা ভোটকর্মীদের বুঝিয়ে শান্ত করেন। পরে আবার দ্বিতীয় দফার প্রশিক্ষণ শুরু হয়।
অন্যদিকে, মনোনয়নপত্র জমা শুরু হওয়ার পর হাওড়া ও উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী রুটমার্চ শুরু করবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। আগামী ১০ এপ্রিল উলুবেড়িয়া ও হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রে ভোটের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হবে ও মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে। চলবে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত। তখন থেকেই এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হবে। তবে এই জেলার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র ও শ্রীরামপুর লোকসভার দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য কত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী পাওয়া যাবে তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের কর্তারা এখনও নিশ্চিত নন। ়
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এই ব্যাপারে এখনও কিছু জানানো হয়নি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ এপ্রিল প্রথম দফার ভোট হয়ে যাবে। ওই বাহিনী দ্বিতীয় দফার ভোটের জন্য চলে যাবে। নতুন করে কিছু বাহিনী আসার কথা আছে। তাদের এই জেলাগুলিতে রুটমার্চের জন্য পাঠানো হবে। হাওড়া ও উলুবেড়িয়া কেন্দ্রে ভোট হবে ৬ মে। তখন পর্যাপ্ত বাহিনী থাকবে বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা মনে করছেন।
জেলা প্রশাসনের এক অফিসার বলেন, এখনও এই জেলার জন্য সাধারণ পর্যবেক্ষক বা পুলিস পর্যবেক্ষক নিয়োগ হয়নি। মনোনয়নপত্র জমা হওয়ার পর এই জেলার জন্য পর্যবেক্ষক ও পুলিস পর্যবেক্ষক নিয়োগ হবে। তখন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে পরামর্শ করেই বাহিনী মোতায়েন করা হবে। তবে এখনও পর্যন্ত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই জেলায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোনও রাজনৈতিক দলই এই নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানায়নি। সেই রিপোর্টও কমিশনে পাঠানো হয়েছে।