কলকাতা: দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান৷ সমস্ত জটিলতা কাটিয়ে উঠে অবশেষে রাজ্য সরকারের লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক এর পদে (এলডিসি) কর্মী নিয়োগের বিষয়ে সবুজ সংকেত দিল নবান্ন৷ পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে জটিলতা কাটিয়ে এই পরীক্ষা নেবে রাজ্য পাবলিক সার্ভিস কমিশন(পিএসসি)৷
দীর্ঘ ১৩ বছর পর পূর্ণাঙ্গভাবে ক্লার্কশিপ পরীক্ষার দায়িত্ব পেল পিএসসি৷ চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়রি ক্লার্কশিপ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পিএসসি৷ আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ছিল ২৫ মার্চ৷ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সবমিলিয়ে ৪ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের জন্য প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ আবেদন জমা পড়ে৷ কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় সংস্থা নির্বাচন নিয়ে৷
অর্থাৎ, স্টাফ সিলেকশন কমিশন (এসএসসি) না পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) পরীক্ষার দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এপর্যন্ত প্রায় ১০ মাস কেটে যায়৷ আবেদনকারীদের মধ্যে বাড়তে থাকে ক্ষোভ এবং অনিশ্চয়তা৷ তবে এবার একেবারে পাকাপাকিভাবেই পিএসসির হাতে এই পরীক্ষার দায়িত্বভার তুলে দিয়েছে রাজ্য সরকার৷
সূত্রের খবর অনুযায়ী, ২০২০-র জানুয়ারি মাসের শেষের দিকেই এই পরীক্ষা নেওয়া হতে৷ পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে বলায়েছিল, আবেদনকারীদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে মাধ্যমিক পাশ, পাশাপাশি কম্পিউটারে মৌলিক জ্ঞান এবং বাংলা-ইংরেজিতে টাইপিংয়ের দক্ষতাও যাচাই করা হবে৷ দায়িত্ব হাতে পাওয়ার পর ইতিমধ্যেই পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে পিএসসি৷
সূত্রের খবর, লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক(এলডিসি) নিয়োগের ক্ষেত্রে মূলত দু’টি পর্যায়ে লিখিত পরীক্ষা হবে৷ শেষে থাকবে কম্পিউটারে বাংলা এবং ইংরেজিতে টাইপিং টেস্ট৷ প্রথম পর্বের লিখিত পরীক্ষা হবে দেড় ঘণ্টার৷ ইংরেজি ও পাটিগণিতের উপর ৩০ নম্বর করে মোট ৬০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে৷ বাকি ৪০টি প্রশ্ন থাকবে জেনারেল স্টাডিসের উপর৷ পুরো পরীক্ষাটি হবে মাল্টিপল চয়েজের ওপর৷ এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে দ্বিতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা হবে বিস্তারিত বা লঙ আনসার টাইপ উত্তরের ভিত্তিতে৷
এই পর্যায়ে ৫০ নম্বরের ইংরেজি এবং ৫০ নম্বরের বাংলা অথবা অন্যান্য মাতৃভাষা (হিন্দি, উর্দু, নেপালি, সাঁওতালি) উপর দক্ষতা যাচাই করা হবে৷ দ্বিতীয় পর্যায় সফল প্রার্থীদের কম্পিউটার টাইপিং টেস্ট নেওয়া হবে৷ সেখানে এক মিনিটের ভিত্তিতে ইংরেজিতে ২০টি এবং বাংলায় ১০টি করে শব্দ টাইপ করতে হবে৷
টাইপিং টেস্ট সহ এই তিনটি পরীক্ষার নম্বর মিলিয়ে তৈরি হবে মেধা তালিকা৷ এরই ভিত্তিতে ভিত্তিতেই সফল প্রার্থীদের পদে নিযুক্ত করা হবে৷ পরীক্ষার সার্বিক স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে, একইসঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে উত্তরপত্র নকল কিংবা অন্যান্য অসৎ উপায় অবলম্বনের ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকটি কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কমিশন৷
পিএসসি পরীক্ষার জন্য রাজ্যের মোট ২৭টি কেন্দ্রকে চিহ্নিত করেছে কমিশন৷ সেগুলি হল– কলকাতা উত্তর, কলকাতা দক্ষিণ, বারুইপুর, ডায়মন্ডহারবার, বারাকপুর, বারাসত, কৃষ্ণনগর, হাওড়া, চুঁচূড়া, বর্ধমান, আসানসোল, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর, তমলুক, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, সিউড়ি, বহরমপুর, মালদহ, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, শিলিগুড়ি, কালিম্পং, দার্জিলিং৷