কলকাতা: সোশ্যাল মিডিয়ায় ফুড ইন্সপেক্টর পদে লিখিত পরীক্ষার ‘উত্তর’ ‘ফাঁস’ হতেই পাল্টা কর্মসূচির ঘোষণা চাকরিপ্রার্থীদের৷ সূত্রের খবর, সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘উত্তর’ ‘ফাঁস’ হওয়ার অভিযোগ তুলে আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করতে পারে পারেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে এই মামলা দায়ের তোড়জোড় শুরু গিয়েছে বলেও সূত্রে খবর৷
একটি চাকরিপ্রার্থী সংগঠনের প্রশ্ন, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার জেরে যদি D.EL.Ed পরীক্ষা বাতিল হতে পারে, তাহলে কেন পিএসসির ক্ষেত্রে তা কার্যকর করা হবে না কেন? সোশ্যাল মিডিয়ায় দুটি চিরকুটে ‘উত্তর’ ‘প্রকাশ’ হওয়ার অভিযোগ তুলে পরীক্ষা বাতিলের দাবিও তোলা হয়েছে৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সমস্ত নথিপত্র জোগাড় করে দায়ের হতে পারে মামলা৷ নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘আজ গোটা প্রশ্নপত্রই ফাঁস হয়ে গিয়েছে৷ কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস হল? এই ঘটনার দায় কার? তা জানতে আমরা মামলা দায়ের করছি৷ সর্বভারতীয় D.EL.Ed পরীক্ষার দুটি পেপার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার জেরে পরীক্ষা বাতিল করা হয়, তাহলে ফুড ইন্সপেক্টর নিয়োগ পরীক্ষায় একই ঘটনা ঘটলে কেন পরীক্ষা বাতিলের দাবি উঠবে না৷’’
ফুড ইন্সপেক্টর পদে লিখিত পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই সোশ্যাল মিডিয়া ছড়িয়ে পড়ল ‘উত্তর’৷ দু’টি চিরকুটে লেখা ‘উত্তর’! আর এই ছবি দেখেই চূড়ান্ত উদ্বেগে রাজ্যের কয়েক লক্ষ্য চাকরিপ্রার্থী৷ অনেকের মনেই ঘুরছে নানান প্রশ্ন! তাহলে কী ‘ফাঁস’ হয়ে গেলে PSC-র ‘প্রশ্নপত্র’! প্রশ্ন তুলছেন চাকরি-প্রার্থীদের একাংশ৷
চাকরি-প্রার্থীদের একাংশ বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ছবির সঙ্গে ‘মিল’ রয়েছে প্রশ্নেপত্রে৷ তাঁদের আশঙ্কা, তাহলে কী আগে থেকেই প্রশ্নপত্র জেনে ‘উত্তর’ লিখে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল পরীক্ষা কেন্দ্রে? প্রশ্ন ঘুরছে চাকরি-প্রার্থীদের অন্দরে৷ প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া রুখতে কি কাজে এল না পিএসসির নজরদারি? কেননা, এবার প্রেস অর্থাৎ প্রশ্নপত্র যেখানে ছাপা হয়েছে, সেখান থেকে ডাক বিভাগের মাধ্যমে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল৷ সাম্প্রতিক অতীতে পিএসসি’র একাধিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, একাধিক অসঙ্গতি সহ নানা বিপত্তি ঘটেছে৷ সেই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কড়া পদক্ষেপ নেওয়াও হয় এবার৷
মুখ বন্ধ খামে প্রশ্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় প্রশ্নপত্র৷ তারপরও কীভাবে এই ঘটল এই এমন ঘটনা? নাকি, গোটাটাই ‘গুজব’! বুঝে উঠতে পারছেন না চাকরিপ্রার্থীরা৷ এই ঘটনার কী আদৌ সত্যি তা নিয়েও রয়েছে সংশয়৷ বিভ্রান্তি ছড়াতেই পরীক্ষা শেষের পর কেউ এই কাজ ঘটিয়েছে কি না নিয়েও রয়েছে সন্দেহ৷ নাকি পুরোটাই ছবি সম্পাদনা করা হয়েছে? তবে, ভাইরাল হওয়া ছবি কোনও ভাবেই সত্যতা যাচাই করে দেখেনি আজ বিকেল ডট কম৷ গোটা ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সংগ্রহ করা৷ এই ঘটনার সত্যতা নিয়েও আজ বিকেল ডট কমের সন্দেহ আছে৷ তবে, এই নিয়ে অহেতুক বিভ্রান্ত হবে না৷ সন্দেহে হলে পিএসসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন৷ হতে পারে, গোটা বিষয়টিই পরিকল্পনা মাফিক করা হয়েছে, যাতে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে৷
পরীক্ষা শুরুর আগে আরও একটি বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়ে৷ খবরে প্রকাশ, খাদ্য দপ্তরের সাব-ইনস্পেক্টর পদের অ্যাডমিট কার্ড ডাউনলোড করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে ইন্টারভিউয়ের চিঠি! চিঠি পেয়ে রীতিমতো হতবাক চাকরিপ্রার্থী৷ মুর্শিদাবাদের লালবাগ শহরের বাসিন্দা ওই যুবক গৌরব পাণ্ডের মন্তব্য, “তিনদিন আগে ওই চিঠি হাতে পেয়ে অবাক হয়ে গিয়েছি৷ একেবারে ছবি-সহ ইন্টারভিউয়ের চিঠি।
পরীক্ষাতেই বসলাম না অথচ ইন্টারভিউ কী করে সম্ভব? বুঝতে পারছি না৷’’ কোথায় ভুল হয়েছে, এমটা ভেবে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের হেল্পলাইনে যোগাযোগ করেও মেলেনি সমাধান৷ হেল্পলাইনের ফোন করেও মেলেনি জবাব৷ ফলে, গোটা ঘটনায় হতভম্ব গৌরব পাণ্ড৷ এই ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ্যে আসতেই মাঠে নামেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান দীপঙ্কর দাশগুপ্ত৷ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘এক শ্রেণির মানুষ এভাবে নিয়োগের পরীক্ষাকে বানচাল করার চেষ্টা করছে৷ আমি বলছি ওই ইন্টারভিউ লেটার পুরোপুরি ভিত্তিহীন৷ যে নিয়োগের পরীক্ষা হয়নি তার ইন্টারভিউ হতে পারে নাকি? কমিশন থেকে কিছু করা হয়নি৷ পরীক্ষাকে বানচাল করার জন্য কয়েকজন এসব করছে৷’’
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও এবং একটি পোস্ট৷ ভাইরাল হওয়া ছবি ও ভিডিওটি কোনও ভাবেই সত্যতা যাচাই করে দেখেনি আজ বিকেল ডট কম৷