কলকাতা: পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে এড়িয়ে রাজ্যে আরও একটি পৃথক নিয়োগ বোর্ড গঠনের প্রস্তাব পাঠাল বনদফতর৷ নতুন বোর্ডের নাম হবে ফরেস্ট রিক্রুটমেন্ট বোর্ড৷ ইতিমধ্যেই ওই বোর্ড গঠনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন পেতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে৷ এতদিন বন দপ্তরের সমস্ত নিয়োগ হত পিএসসির মাধ্যমে৷ কিন্তু, পিএসসিতে লাগাতার ‘দুর্নীতি’ ওঠার জেরেই কী নয়া বোর্ড গঠনের প্রস্তাব? প্রশ্ন তুলছেন চাকরি-প্রার্থীদের একাংশ৷
বন দপ্তর সূত্রে খবর, মূলত বন দপ্তরের নিচু তলার ফিল্ড অফিসার অর্থাৎ গ্রুপ সি কর্মীদের নিয়োগ হবে এই নতুন বোর্ডের মাধ্যমে৷ কর্মী সমস্যার সমাধানে বন দপ্তরকে এই রিক্রুটমেন্ট বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গঠন করার আগে এর পরিকাঠামো তৈরির উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে, যাতে অধুনালুপ্ত রাজ্য স্টাফ সিলেকশন কমিশনের মতো পরিণতি না হয় প্রস্তাবিত রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের৷ তাই, অন্য কেউ নয়, খোদ প্রিন্সিপ্যাল চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট (পিসিসিএফ)-কে ওই বোর্ডের চেয়ারম্যান করা হবে বলে প্রস্তাবে জানানো হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, বোর্ডের বিভিন্ন দায়িত্বে থাকবেন বন দপ্তরের অন্য শীর্ষ আধিকারিকেরা৷
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বন দপ্তরের নিচু তলায় শূন্য পদ দ্রুত পূরণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ফরেস্ট রিক্রুটমেন্ট বোর্ডকে তিনটি জোনে ভাগ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গ, সুন্দরবন ও জঙ্গলমহল। বন দপ্তরের বক্তব্য, স্থানীয় বেকারদের নিয়োগ করা গেলে হাতি তাড়ানো থেকে বন সুরক্ষা, সব ধরনের কাজই সহজে করা যাবে৷
সরকারি দপ্তরের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গতি আনতে ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী আইন করে স্টাফ সিলেকশন কমিশন (এসএসসি) গঠন করেন৷ ওই কমিশনকে সরকারি দপ্তরের নিচু তলায়, অর্থাৎ গ্রুপ সি ও ডি পদে নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাব-সহ বিভিন্ন কারণে কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশাসনের অন্দরেই প্রশ্ন উঠে যায়৷ শেষমেশ, গঠনের পাঁচ বছরের মাথায়, গত বছর মে মাসে রাজ্য সরকার এসএসসি-র অবলুপ্তি ঘটায়। গ্রুপ সি পদে নিয়োগের দায়িত্ব ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে৷ এবার পিএসির কাছ থেকে বন দপ্তরের নিয়োগ প্রক্রিয়া ছিনিটয়ে একটি পৃথক নিয়োগ বোর্ড গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷