কলকাতা: কোভিড পরিস্থিতিতে স্কুল বন্ধ থাকলেও, জোড়কদমে চলছে অনলাইন ক্লাস৷ অথচ মাসের শেষে বেতন পাচ্ছেন না রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা৷ এই পরিস্থিতিতে সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা দফতরের সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন৷ স্কুল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালির কথাও জানান তাঁরা৷ পরে সংবাদমাধ্যম সূত্রে তাঁরা জানতে পারেন, এই বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু এর পরেও পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়নি বলে অভিযোগ তুললেন ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা৷
অভিযোগ, কলকাতা ও কলকাতা সংলগ্ন একাধিক স্বনামধন্য স্কুলগুলিতে বেপরোয়াভাবে শিক্ষক ছাঁটাই করা হচ্ছে৷ এমনকী মানসিকভাবেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নির্যাতন করা হচ্ছে৷ কোনও প্রতিবাদ করতে গেলেই ‘পাগল’ বলে সম্বোধন করা হচ্ছে তাঁদের৷ এই নিষ্ঠুরতার বিচার চেয়ে সরব ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন৷
তাঁরা জানান, সারা দেশে লকডাউন শুরু হওয়ার সময় থেকেই বেসরকারি স্কুলগুলিতে বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়েছে৷ অনেক স্কুলে বেতন দেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ আবার কোনও কোনও স্কুলে বেতনের ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ কেটে নেওয়া হচ্ছে৷ অথচ লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষকতার কাজ কিন্তু থেমে থাকেনি৷ নিজেদের দায়িত্ব তাঁরা পালন করে চলেছেন৷ পড়ানোর ভিডিয়ো করে নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে তা আপলোড করা হচ্ছে৷ ফলে ইন্টারনেটের খরচও বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে৷ এই খরচ বহন করতে হচ্ছে শিক্ষকদেরই৷ কিন্তু মাস গেলে ঠিক মতো বেতন আসছে না তাঁদের হাতে৷
দাবি, স্কুলগুলি ছাত্রছাত্রীদের থেকে রীতিমতো ফি আদায় করছে৷ পড়ুয়ারাও নির্দিষ্ট দামে স্কুল থেকে বই-খাতা ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র কিনছে৷ তা সত্ত্বেও নানা অজুহাতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতনের সিংহভাগ কেটে নেওয়া হচ্ছে বা বকেয়া রাখা হচ্ছে৷ এদিকে, স্কুলের ফি আদায় ও ফি-এর টাকা বাড়ানো নিয়ে অনেক জায়গায় অসন্তোষ দেখা দিয়েছে৷ তবে কিছু স্কুল ফি কমিয়ে দিয়েছে৷ আবার যেমন ফি বাড়ানোর পথে হাঁটেনি নারায়াণা৷ ভর্তির ফি নেওয়া হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা৷ মাসিক বেতন প্রায় ৫০০০ টাকা৷ তার পরেও এই স্কুলে শিক্ষকদের বেতনের ৭০ শতাংশ কেটে নেওয়া হচ্ছে৷
এই পরিস্থিতিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলন ছাড়া আর কোনও পথ দেখছেন না বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা৷ এমনতাবস্থায় ফের মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী সহ উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের কাছে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার আর্জি জানল ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন৷