কল্যাণী: ফের পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুললেন পার্শ্বশিক্ষকরা৷ অনশন মঞ্চে পুলিশি তাণ্ডবের অভিযোগে তোলপাড় নদীয়া কল্যাণী৷ পার্শ্বশিক্ষকদের অভিযোগ, আজ সন্ধ্যায় অনশনমঞ্চের আলো নিভিয়ে শিক্ষিকাদের পোশাক ছিঁড়ে তাণ্ডব চালিয়েছে পুলিশ৷ করা হয়েছে শ্লীলতাহানী৷ ছেঁড়া হয়েছে ব্লাউজ৷
অভিযোগ, কোনও মহিলা পুলিশ কর্মী না আনিয়ে শিক্ষিকাদের উপর তাণ্ডব চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ৷ নির্বিচারে করা হয়েছে লাঠিচার্জ৷ পুলিশি তাণ্ডবের প্রতিবাদে কল্যাণী স্টেশন লাগোয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবরোধ করে রেখেছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার ক্লাস বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে৷
ছিল দীর্ঘ বঞ্চনার দাবিতে পথে নামার ডাক। নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে পথে নেমেছিলেন প্রায় কয়েক হাজার শিক্ষক। জাতীয় পতাকা বুকে আগলে রাজপথেই গেয়ে ওঠেন ‘উই শ্যাল ওভার কাম।’ জাতীয় সংগীত গেয়ে শিক্ষকেরা জানিয়ে দিলেন, তাঁরা চান তাঁদের পূর্ণ অধিকার৷ বিকাশ ভবন অভিযানে বাঁধা পাওয়ার দুর্যোগ মাথায় নিয়ে খোল আকাশের নীচে রাত কাটানোর পর এবার শনিবার সকাল থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে বসলেন পাশ্বশিক্ষকদের৷ কল্যাণি স্টেশন চত্বরে অদূরে বাসস্ট্যান্ডে অনশনে বসেন কয়েকশো শিক্ষক৷
শহর কলকাতা অনশন কর্মসূচি বাঁধা পেয়ে কল্যাণীতে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা করা হয় পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের তরফে৷ অভিযোগ, অনশন শুরু হওয়ার সাত ঘণ্টা পর তাণ্ডব চালায় পুলিশ৷ অনশন মঞ্চ ফাঁকা করতে বেপরোয়া লাঠিচার্জ করা হয়৷ বাদযাননি শিক্ষিকারাও৷ তাঁদেরও হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ৷ পুলিশ-শিক্ষকদের খণ্ডযুদ্ধে এক শিক্ষিকার পোশাক ছিঁড়ে যায় বলেও অভিযোগ৷ লাঠিচার্জেও অভিযোগ ওঠে৷ আলো নিভিয়ে পুলিশি মারের প্রতিবাদে সোমবার থেকে পার্শ্বশিক্ষকরা ক্লাস বয়কট করবেন বলে ঘোষণা করেছে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চ৷
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সম্পাদক কিংকর অধিকারী৷ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ছিঃ, পুলিশের এই বর্বরতা, তাণ্ডব আচরণের তীব্র ধিক্কার জানাই। এইভাবে কোনদিন আন্দোলন দমন করা যায় না। দোষী পুলিশ অফিসারদের চিহ্নিত করে শাস্তি দিতে হবে।’’
মুর্শিদাবাদের শিক্ষক নেতা তন্ময় ঘোষ পার্শ্ব শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন৷ বলেন, ‘‘ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য পার্শ্বশিক্ষকদের অনশন করতে হচ্ছে৷ এটাই তো লজ্জার৷ তার উপর রাতে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অন্ধকারে শিক্ষকদের মারধর ও শিক্ষিকাদের শ্লীলতাহানি ঘটনার মতো বর্বরোচিত ঘটনা চরম নিন্দনীয়! সভ্য সমাজ শাসকের এহেন নির্লজ্জ আচরণ মেনে নেবে না! মাননীয়ার উচিত পার্শ্বশিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার সাপেক্ষে সমস্যার দ্রুত সমাধান করা৷’’