কলকাতা: পার্শ্বশিক্ষকদের পর এবার আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের পেটাল পুলিশ৷ সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার সমকাজে সমবেতনের দাবি জানিয়ে অনশন কর্মসূচি শুরু করার আগেই বিশাল পুলিশ বাহিনী অধ্যাপকদের কর্মসূচি ভণ্ডুল করে দেয় বলে অভিযোগ৷ চালানো হয় লাঠি৷ করা হয় গ্রেপ্তার৷
আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের সংগঠনের সভাপতি শ্রীদাম ঘোষ ও রাজ্য সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছেন, ‘‘আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের সমকাজে সমবেতন, ৬৫ বছর বয়স পর্যন্ত কাজের অধিকার সহ অন্যান্য দাবিতে CUTAB-এর নেতৃত্বে আজ সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের আমরণ অনশন কর্মসূচিতে পুলিশ অত্যাচার করেছে৷ সকাল থেকেই অধ্যাপকদের অনশন কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দেয়৷ জোর খাটিয়ে পুলিশ অনশনকারীদের সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে উৎখাত করে দেয়৷ এ এক আজব রাজ্য৷ এই সরকার কাজ করিয়ে নিয়ে ন্যায্য বেতন দেবে না, পথে নেমে দাবি আদায়ের গণতান্ত্রিক অধিকারও কেড়ে নিচ্ছে৷ বাধ্য হয়ে অধ্যাপকরা ওয়েলিংটন মোড় স্তব্ধ করে দিলে পুলিশ দলে দলে অধ্যাপকদের গ্রেপ্তার করে৷ এমনকী পুলিশের বিশাল বাহিনী সংগঠনের রাজ্য অফিসে বসে থাকা অসুস্থ অধ্যাপকদের ও গ্রেপ্তার করে৷’’
সংগঠনের আরও অভিযোগ, ‘‘লালবাজার সেন্ট্রাল লকআপে অধ্যাপকরা অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন৷ ইতিমধ্যে লালবাজারে পুলিশ লক আপে এক জন অধ্যাপিকা গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ কাল গোটা রাজ্যে কালা দিবসের ডাক দেওয়া হয়েছে৷ সারা রাজ্যজুড়ে কলেজে কলেজে কাল ক্লাস বয়কট চলবে।’’
তাঁদের আরও দাবি, ‘‘সমকাজে সমবেতনের গণতান্ত্রিক দাবি এমাসের মধ্যে না মানলে সারা রাজ্য জুড়ে আন্দোলন চলবে। প্রয়োজনে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্লাস বয়কট করতে বাধ্য হবো৷ আন্দোলন চলাকালীন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর যতটুকু ঘোষণা সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি, তাতে অধিকাংশ অধ্যাপকের বেতন কমে যাচ্ছে৷ সরকারের এই ঘোষণাতে অধিকাংশ অধ্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন৷ আমরা শিক্ষা মন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করুক৷ যাতে বেতন না কমিয়ে পে স্কেল চালু করুন৷ সারা রাজ্যের শুভ বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন সরকারের এই গণতন্ত্র হত্যাকারী আচরণের বিরুধ্যে প্রতিবাদে সামিল হোনl আমাদের পাশে দাঁড়ান৷’’
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘প্রাথমিক থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। গণতান্ত্রিক শিক্ষক আন্দোলনের উপর পুলিশি নির্যাতনে কাউকেই রেয়াত করছে না এই সরকার। পশ্চিমবঙ্গের সর্ব স্তরের শিক্ষকদের নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে এর জবাব দেওয়ার সময় এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী একদিকে শিক্ষকদের সম্মান দিতে বলেছেন, বিদ্যাসাগরের গলায় মালা দিচ্ছেন আর উল্টোদিকে পুলিশ দিয়ে পৈশাচিক ভাবে শিক্ষক নিগ্রহ করাচ্ছেন। এই দ্বিচারিতা চলতে পারে না।”
হওড়ার প্রশানিক সভা থেকে কলেজের পার্টটাইম শিক্ষকদের নিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ জানান, পার্ট টাইম শিক্ষকদের নতুন নামকরণ নতুন নাম দেওয়া হচ্ছে৷ স্টেট এডেড হিসাবে তাঁদের নামকরণ করা হবে৷ কলেজ চুক্তিভিত্তিক গেস্ট টিচারদের দুই ক্যাটাগরিতে ভাগ করার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ যোগ্যতা থাকলে ক্যাটাগরি ওয়ান, যোগ্যতা না থাকলে ক্যাটাগরি ২ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে৷ ইউজিসির রুল অনুযায়ী প্রশিক্ষত ও অপ্রশিক্ষতদের দু’ভাগে ভাগ করে বেতন কাঠামো নির্দিষ্ট করাও আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর৷