নয়াদিল্লি: দীর্ঘ আইনি জট, সুপ্রিম কোর্টের রায় ঘোষণা ৪ মাস পর ভারতীয় মহিলা সেনা অফিসারদের জন্য পার্মানেন্ট কমিশনের নির্দেশ জারি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক৷ ভারতীয় মহিলা সেনা অফিসারদের সুরক্ষা দিয়ে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট৷ সেই রায়ের পর অবশেষে ভারতীয় সেনার মহিলা অফিসারদের জন্য পার্মানেন্ট কমিশনের নির্দেশ জারি করল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক৷
সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী ভাবে নিয়োগের ব্যবস্থা কার্যকর করতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের ওই রায়ে কমব্যাট উইং ছাড়া সেনাবাহিনীর সব স্তরে আগামী তিন মাসের মধ্যে এই নিয়ম চালু করতে বলা হয় কেন্দ্রকে। শর্ট সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) আওতায় যে সমস্ত মহিলা ১৪ বছরের বেশি সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন, তাঁদের স্থায়ী কমিশনে শামিল করতেও কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হলেও, স্থায়ী কমিশন গঠন করা হয়নি বলে সম্প্রতি আদালতের দৃষ্টিআকর্ষণ কারর পর কেন্দ্রকে আরও একমাস সময় দেয় সুপ্রিম কোর্ট৷ সেই সময়সীমা পূরণ হওয়ার আগেই সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী ভাবে নিয়োগের ব্যবস্থা কার্যকর করল রাজনাথ সিংয়ের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক৷
চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, কমান্ডিং অফিসার পদে মহিলাদের বঞ্চনা করা চলবে না৷ শর্ট সার্ভিস কমিশনের ভিত্তিতে যে অফিসাররা নিযুক্ত, তাঁদের পার্মানেন্ট কমিশনের জন্য বিবেচনা করতে হবে৷ পার্মানেন্ট কমিশনের পর রয়েছে কমান্ডিং অফিসার৷ জানা গিয়েছে, ওই পার্মানেন্ট কমিশন সেনাবাহিনীর মোট ১০টি শাখার আওতাভুক্ত হবে৷ দ্রুত নির্বাচক কমিটি গঠন করা হবে বলে খবর৷
গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঐতিহাসিক রায়ে আদালত জানিয়েছিল, সেনাবাহিনীতে মহিলারা যাতে পুরুষদের মতো সমান সুযোগ-সুবিধা পান, সে দিকে নজর দিতে হবে৷ সেনা বাহিনীতে মহিলা নিয়োগের এই মামলার শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, 'মহিলারা শুধু বাড়ির কাজই করতে পারেন, এই ধরনের প্রাচীন ধারণা অত্যন্ত বিরক্তিকর৷ এই ধারনা ভেঙে ফেলুন৷'
এর আগে হাইকোর্টের রায় ছিল, সেনাবাহিনীতে পুরুষদের মতোই সমান অধিকারে নিয়োগ করতে হবে মহিলাদেরও৷ কিন্তু এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্র৷ হাইকোর্টের রায়ই বহাল রাখে শীর্ষ আদালত৷ প্রসঙ্গত, ভারতীয় সেনাবাহিনীতে চিকিৎসা ক্ষেত্রের বাইরে অন্য ভূমিকায় মহিলাদের নিযুক্তি শুরু হয় ১৯৯২ সালে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত স্থায়ী কমিশনড অফিসার পদে অর্থাৎ কুড়ি বছর কাজ করার সুযোগ মহিলারা পাননি। পদোন্নতি বা পেনশনের সুযোগ ছাড়া শুধুমাত্র ১৪ বছর কাজের সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা৷