কলকাতা: ছ’মাসের বেতন কমিশন ঢাকঢোল পিটিয়ে কার্যকর হয়েছে ৫০ মাস অতিক্রম করে৷ জানুয়ারি মাসের বর্ধিত বেতন থেকে উধাও মহার্ঘ ভাতা৷ প্রশ্নের মুখে বকেয়া মহার্ঘতার ভবিষ্যৎ৷ বর্ধিত বেতন মহার্ঘ ভাতার অনুপস্থিতি নতুন করে বাড়িয়েছে বিতর্ক৷ আর সেই বিতর্ক আরও বেড়েছে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশের৷ শিক্ষা দপ্তরের বিলম্বিত ভূমিকায় জানুয়ারি মাসের বর্ধিত হারে বেতন থেকে বঞ্চিত হলেন রাজ্যের বহু বিদ্যালয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী৷
শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানুয়ারি থেকে নতুন পে কমিশন লাগু হয়েছে৷ রাজ্যে রোপা-২০১৯ প্রকাশ হয়েছে গত ২৫ সেপ্টেম্বর৷ সরকারি কর্মচারীদের জন্য যথেষ্ট সময় আগে থেকে অপশন এবং ফিকশেশন সাবমিট করার সুযোগ দেওয়া হলেও শিক্ষক, শিক্ষিকা শিক্ষাকর্মীদের জন্য শিক্ষা দপ্তর থেকে রোপা-২০১৯ প্রকাশিত হয়েছে গত ১৩ ডিসেম্বর৷ অর্থাৎ সরকারি কর্মচারীদের থেকে প্রায় ৮০ দিন পর৷ এরপর শিক্ষা দপ্তর থেকে শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের অনলাইনে অপশন ও ফিকশেশন জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় গত ১৪ জানুয়ারি রাত থেকে৷ কিন্তু, সার্ভার বিভ্রাটের জেরে অপশন, ফিক্সেশন সাবমিটের জন্য শিক্ষকদের রাতের পর রাত জেগে কাজ করতে হয়৷ বহু বিভ্রাট ও ভোগান্তির পর শেষ পর্যন্ত অনলাইনে তা সাবমিট করে বিদ্যালয়গুলি ডিআই অফিসে হার্ডকপি জমা দেন৷ এই বিভ্রাটের কারণে বর্ধিত বেতন থেকে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা বঞ্চিত হতে পারেন বলে আগেই প্রতিবেদন প্রকাশ করে আজ বিকেল ডট কম৷ এবার সেই আশঙ্কা সত্যি করে এবার বছরের প্রথম মাসের বর্ধিত বেতন খোয়ালেন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ৷
শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের এই সমস্যা প্রসঙ্গে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানান, ডিআই অফিসে হার্ডকপি জমা দেওয়ার পরও বহু জেলায় একসঙ্গে এত বিদ্যালয়ের ভেটিংয়ের কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে ডিআই অফিসের কর্মচারীদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়৷ বহু শিক্ষক এক্ষেত্রে সাহায্যও করেন৷ বর্ধিত বেতন পাওয়ার জন্য বহু জেলায় এ নিয়ে স্বজনপোষণ দুর্নীতির অভিযোগও আসছে৷ শেষ পর্যন্ত অপশান, ফিক্সেশন সাবমিট করা সত্ত্বেও বহু বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষাকর্মীকে জানুয়ারি মাসে পুরনো বেতনে থাকতে বাধ্য করা হল৷ অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদ্যালয় অথবা শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের কোনো ত্রুটি নেই৷ শিক্ষা দপ্তরে ভেটিং না হওয়ার কারণে এই বিভ্রাট৷
তাঁর আরও দাবি, এই সমস্যার মূল কারণ শিক্ষা দপ্তর থেকে ৮০ দিন পর রোপা প্রকাশ৷ প্রথমদিকে তৎপরতা না দেখিয়ে একেবারে শেষ পর্যায়ে তৎপরতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়৷ এ ব্যর্থতার সম্পূর্ণ দায় শিক্ষা দপ্তরের একেবারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের৷ দাবি করছি, যেসব শিক্ষক শিক্ষাকর্মী পুরানো বেতনে থাকতে বাধ্য হলেন তাঁদের বকেয়াসহ ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই বর্ধিত বেতন দিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হোক৷