কলকাতা: করোনার এই জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করেছে রাজ্য সরকার৷ অর্থ দপ্তরের নয়া সার্কুলারকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়ে, অনুমতি ছাড়া আগামী ৩ মাস কোনও নিয়োগ করা যাবে না৷ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্যের নয়া নির্দেশিকা ঘিরে এবার সিঁদুরে মেঘের দেখছেন বাংলার চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ চিন্তার বেড়েছে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে৷ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা৷
রাজ্যের নয়া নির্দেশিকায় জারি হওয়ার পর শুক্রবার রাতে ফেসবুক লাইভের মাধ্যে চূড়ান্ত উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাম যুব ছাত্র নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ৷ তিনি জানিয়েছেন, রাজ্যের নয়া নীতির জেরে চাকরিপ্রার্থীদের দুর্ভোগের মুখে পড়তে হবে৷ তাঁর কথায়, 'পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থমন্ত্রকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, তাদের অনুমতি ছাড়া কোনও নিয়োগের দায়িত্ব সরকার নেবে না। যদি সরকার চায়, অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ বা বিভিন্ন দফতরের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় কোনও সমস্যা হবে না সম্ভবত। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, পশ্চিমবঙ্গ গ্রুপ ডি রিক্রুটমেন্ট বোর্ড, পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের নিয়োগ পদ্ধতি অর্থমন্ত্রকের অনুমতি ছাড়া সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করবে না। বেকার যুবসম্প্রদায়ের কাছে এটা একটা বিরাট সমস্যা।'
এই মুহূর্তে উচ্চপ্রাথমিক নিয়োগপ্রক্রিয়া বন্ধ। ২০১২ ও ২০১৫ সালে পরীক্ষা হলেও কোনও নিয়োগ হয়নি। করোনা পরিস্থিতিকে সামনে এনে রাজ্য সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখতে চাইছে বলেই আঙুল তুলেছেন তিনি। এছাড়াও বাংলায় যে প্রকৃতই কর্মসংস্থান নেই, সেই অভিযোগও শোনা যায় বাম যুব ছাত্র নেতার বয়ানে। এদিন ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, 'লকডাউন মিটুক, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হোক। সবাইকে একটা কথাই বলতে চাই, দীর্ঘদিন বেকার যুবকদের পাশে থেকেছি আমরা। পিএসসি দুর্নীতি মঞ্চ, এসএসসি বাঁচাও কমিটির মাধ্যমে বারবার আন্দোলন করেছি। আমাদের লড়াই চলেছে।'
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নিয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা সময় যে লাগবে তা তাঁরা জানেন। তবে নিয়োগপ্রক্রিয়া দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ থাকা নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করেছেন ইন্দ্রজিৎবাবু। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, 'যদি এই সার্কুলার সত্যিই জারি হয়, তাহলে আমরা এর প্রতিবাদ করছি। যদি ভুয়ো হয়, তাহলে এটা নিয়ে কিছু বলার নেই।'
মেমোরেন্ডামে বলা হয়েছে, করোনা পরিস্থিতিতে নতুন করে কোনও প্রকল্প গ্রহণ করা হবে না৷ জরুরি ভিত্তিতে কোনও মেরামতি বা রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন না থাকলে বন্ধ রাখা হবে সব ধরণের নির্মাণ কাজ৷ জনস্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে কোনও পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হলে অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদন বাধ্যতামূলক৷ অর্থমন্ত্রকের অনুমতি চলতি কোনও প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হবে না৷ ৩০ জুন পর্যন্ত কোনও রকম গাড়ি, কমপিউটার, আইটি সম্পর্কিত জিনিসপত্র, আসবাব, এসি, ফ্রিজ, টিভি, অফিসের সরঞ্জাম কেনার অনুমতি দেওয়া হবে না৷
স্থগিত থাকবে চাকরির নিয়োগ৷ অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদন ছাড়া এই সময়ের মধ্যে নতুন করে চাকরিতে নিয়োগ করা হবে না৷ বন্ধ থাকবে চুক্তি ভিত্তিক লোক নিয়োগ৷ তবে বেতন, মজুরি বা পেনসনের ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম ধার্য করা হয়নি৷ সামাজিক জনকল্যাণ প্রকল্প যথা কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, খাদ্যশ্রী, জয় বাংলা, সামাজিক সুরক্ষা যোজনা, শিক্ষাশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী, বাংলা ফসল যোজনাকে নয়া নির্দেশনামার বাইরে রাখা হয়েছে৷ ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে নয়া নীতি৷