নতুন শিক্ষক নিয়োগে ‘না’, শিক্ষামন্ত্রীর ইঙ্গিতে ফের জারি বিদ্রোহ

কলকাতা: চলতি নিয়মে নতুন করে আর হবে না শিক্ষক নিয়োগ৷ নতুন নিয়ম চালু করে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ চলতি নিয়োগ যেমন চলছে তেমন চলবে৷ তবে চলতি ব্যবস্থায় নতুন করে আর শিক্ষক নিয়োগ করা হবে না৷ নিয়োগের স্বচ্ছতা আনতে নয়া বিধি আগামীতে কার্যকর হবে বলে সাফ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ এই মর্মে আসতে

13050d26fdb86d85ade78804188de34d

নতুন শিক্ষক নিয়োগে ‘না’, শিক্ষামন্ত্রীর ইঙ্গিতে ফের জারি বিদ্রোহ

কলকাতা: চলতি নিয়মে নতুন করে আর হবে না শিক্ষক নিয়োগ৷ নতুন নিয়ম চালু করে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ চলতি নিয়োগ যেমন চলছে তেমন চলবে৷ তবে চলতি ব্যবস্থায় নতুন করে আর শিক্ষক নিয়োগ করা হবে না৷ নিয়োগের স্বচ্ছতা আনতে নয়া বিধি আগামীতে কার্যকর হবে বলে সাফ জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ এই মর্মে আসতে চলেছে বিজ্ঞপ্তি৷ শিক্ষামন্ত্রীর এহেন পরিকল্পনা ঘিরে চাকরিপ্রার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে জমতে শুরু করেছে৷

শিক্ষামন্ত্রীর এহেন ইঙ্গিত ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে চলছে মন্তব্য চালাচালির পর্ব৷ অনেকেই বলছেন, শিক্ষামন্ত্রী নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে চেয়ে যে নতুন বিধি আনতে চাইছেন৷ তবে, এই ব্যবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে স্বীকার করে নিলেন শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতা রয়েছে? অনেকেই বলেছেন, এভাবে বিধি বদল করে আদৌ কি শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি কাটানো সম্ভব?

শিক্ষক নিয়োগে বিধি বদল প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন কর্মরত শিক্ষকদের একাংশ৷ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘আজ একটি টিভি চ্যানেলকে এসএসসির বিধি বদল প্রসঙ্গে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ এসএসসি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য প্রমাণ করল, রাজ্যের উচ্চ প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চরম দুর্নীতি চলছে৷ সম্প্রতি উচ্চ প্রাথমিকের মেধা তালিকার দুর্নীতি সহ সর্ব স্তরের নিয়োগের প্রচুর দুর্নীতি ও অনিয়ম সামনে এসেছে৷ যার অধিকাংশই সমাধান হয়নি৷ সরকারের উচিত অবিলম্বে সমস্ত অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত সত্য সামনে আনা ও দোষীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দেওয়া৷’’

শিক্ষক নিয়োগে নতুন নিয়মের সম্ভবনা প্রসঙ্গে শিক্ষক নেতা অনিমেষবাবুর আরও দাবি, ‘‘শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে একজন প্রার্থীর দক্ষতা যাচাই করার জন্য ব্যাখ্যা মূলক প্রশ্নের ব্যবস্থা করা অবশ্যই যুক্তিযুক্ত৷ কারণ, একজন প্রার্থীর বাংলা বা ইংরেজি অথবা সাহিত্যের দক্ষতা, MCQ-এর মাধ্যমে বোঝা যায় না৷ আবার একজন অঙ্ক বিষয়ের প্রার্থীর MCQ-এর উত্তর বের করতেও পুরো অঙ্কটা করতেই হয়৷ ইন্টারভিউয়ের মার্কস ৫-এর বেশি রাখা উচিত নয়৷ কারণ এতে দুর্নীতি কম হবে৷’’

শিক্ষক নিয়োগে এবার নতুন পদ্ধতি আসতে চলেছে৷ আর সেই কারণে, নতুন বিধি না আসা পর্যন্ত পুরানো ব্যবস্থায় নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ হবে না৷ বদল আসবে পরীক্ষা ব্যবস্থা৷ কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া সরলীকরণ করা হবে৷ এই মর্মে তৈরি হচ্ছে শিক্ষক নিয়োগের নতুন পদ্ধতি৷ পরিবর্তিত বিধি অনুযায়ী, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার সম্ভবনার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ এই মর্মে এসএসসি ও পর্ষদকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে খবর৷

লিখিত পরীক্ষার উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন৷ তবে, চলতি নিয়মে নতুন করে কোনও শিক্ষক নিয়োগ করা না হলেও চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলি চলবে৷ নতুন বিধি অনুযায়ী প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগে নিয়মে বদল করা হবে৷ নতুন বিধি না আসা পর্যন্ত নতুন করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি উপর বিধিনিষেধ চালুর ভাবনায় চলতি বছরে নতুন করে টেট বা এসএলএসটি হওয়ার সম্ভবনা কম বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

লাগাতার মামলা, নিয়োগ ঘিরে অসঙ্গতির অভিযোগের জেরে শিক্ষক নিয়োগে নতুন পদ্ধতি আনার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ শনিবার এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘নতুন করে আর হবে না শিক্ষক নিয়োগ৷ নতুন নিয়ম চালু করে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনা হবে৷ চলতি নিয়োগ যেমন চলছে তেমন চলবে৷ তবে বর্তমান নিয়োগের যে ব্যবস্থা চালু আছে তা আর আগামীতে কার্যকর হবে না৷ কীভাবে শিক্ষক নিয়োগ ত্বরান্বিত করা যায় সেটা আমরা দেখছি৷ আরও বেশি স্বচ্ছতা আনতে আমরা পদ্ধতি পরিবর্তন করছি৷ কাউন্সেলিংয়ের জটি পদ্ধতির জেরে অনেক সমস্যা, সময় লেগে যাচ্ছে৷ এই সমস্যা মেটাতে লিখিত পরীক্ষায় বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে৷ একটি কাউন্সিলিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷’’

গত বাজেট অধিবেশনে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রী নিজে ঘোষণা করেছিলেন, শিক্ষক নিয়োগে যেভাবে আইনি জটিলতা বাড়ছে, এই নিয়ে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আমূল পরিবর্তন আনা হতে পারে৷ আরও সরলীকরণ করা হতে পারে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ওয়েটিং লিস্ট তুলে দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেছিলেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *