কলকাতা: উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় নজিরবিহীন যুক্তি তুলে ধরল স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ আর কমিশনের যুক্তিও কার্যত মান্যতা দিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ আর তার জেরে নতুন করে শুরু হয়েছে চর্চা৷ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে মেধা তালিকা প্রকাশের কথা ছিল কমিশনের৷ কিন্তু, আজ মামলার শুনানিতে মেধা তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে নয়া যুক্তি কমিশনের৷
আজ কমিশনের তরফে আদালতকে যুক্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়া প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে না কমিশন৷ ইন্টারভিউয়ের আগে প্রার্থীদের তালিকা নম্বর দিয়ে প্রকাশ করা হলে পরীক্ষক ব্যবস্থায় পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠতে পারে৷ তাতে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে৷ ফলে, ইন্টারভিউয় প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ার পর্যন্ত তা প্রকাশ করা সম্ভব নয়৷ কমিশনের এহেন যুক্তির প্রাথমিক মান্যতাও দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷
এসএসসিকে স্বচ্ছতা প্রমাণে শেষ সুযোগ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷ ১০ জুলাই বিকেল ৫টার মধ্যে উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টার্ভিউয়ে ডাক পাওয়া ২৪ হাজার ৫৬৪ জনের নম্বর সহ নামের তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট৷ আজ ছিল এই মামলার শুনানি৷ কিন্তু, মামলার শুনানিতে কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, তা কোনও ভাবেই এখন ওই মেধা তালিকা প্রকাশ করতে পারবে না৷
এর আগে উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য সাফ জানিয়ে দেন, উচ্চ প্রাথমিকে ইন্টার্ভিউয়ে ডাক পাওয়া সমস্ত প্রার্থীর টেট নম্বর ও অ্যাকাডেমিক স্কোর সহ তালিকা কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে৷ কারা কত নম্বরের ভিত্তিতে ডাক পেয়েছেন, তাও পরিস্কার হয়ে যাবে৷ ২০১৬ সালে এসএসসির রুল অনুযায়ী তালিকা প্রকাশের নির্দেশও দেওয়া হয়৷
ইন্টার্ভিউ শুরু হলেও উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীকে ইন্টার্ভিউতে ডাকার অভিযোগ তুলে দায়ের হওয়া মামলার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োদের উপর স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য৷
নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ দিলেও ইন্টার্ভিউ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার ছাড়পত্র দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের মামালার ভিত্তিতে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তীব্র কটাক্ষ করে আদালত৷ মামলাকারীদের অভিযোগ, কম নাম্বর পাওয়া সত্ত্বেও প্রশিক্ষণহীন এক চাকরিপ্রার্থীকে ডাকা হয়েছে৷ কিন্তু, কমিশন যখন বলছে, প্রশিক্ষণ-হীনদের কোনও ভাবেই সুযোগ দেওয়া হবে না, তখন কেন কাউকে কাউকে ডাকা হচ্ছে? উদাহরণ হিসাবে আজ মামলাকারীদের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, আয়েশা খাতুন নামের এক অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীকে ডাকা হয়েছে৷ কিন্তু, গত ২৮ জুন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কমিশন জানিয়েছিল, কোনও অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্তকে ডাকা হবে না৷ কিন্তু, তার পরও কেন এই ঘটনা? কমিশনের তরফে এই ঘটনায় খারিজের চেষ্টা করা হয়৷ তবে, তা টেকেনি৷ আদালতের তরফে সব পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়৷ ইন্টার্ভিউ চললেও মামলার নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ করা যাবে বলে এদিন সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়৷