আদৌ হবে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ? TET বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই মামলা হাইকোর্টে

আদৌ হবে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ? TET বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হতেই মামলা হাইকোর্টে

 

কলকাতা: দুয়ারে নির্বাচন৷ তার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ‘দুয়ারে দুয়ারে’ পৌঁছে যাতে চলেছে বাংলার ‘মা-মাটি-মানুষে’র সরকার৷ বাংলা ভোটের আগে ‘বেকারত্ব’ যাতে কোনও ভাবেই বিরোধী ইস্যু হতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই প্রাথমিকে সাড়ে ১৬ হাজার শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ২০১৭ সালের টেটের আবেদন জমা নেওয়ার পর এখনও পর্যন্ত পরীক্ষার দিন ঘোষণা না হলেও ২০১৪ সালের টেট প্রার্থীদের জন্য সুখবর শুনিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ৷ বিজ্ঞপ্তি জারি হতে না হতেই কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল আরও একটি মামলা৷ আর তাতেই আরও জটিল হতে চলছে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া, আশঙ্কা চাকরিপ্রার্থীদের৷

রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের নতুন বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল আরও একটি মামলা৷ প্রাথমিক টেট ‘অনলাইন এপ্লিকেশন’ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় ২৩ নভেম্বর ২০২০৷ জরুরি ভিত্তিতে মামলার অনুমতি হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের৷ পায়েল বাগের আবেদনে মামলায় শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে৷ শুক্রবার মামলার শুনানি হাইকোর্টে৷ মামলার শুনানির পর বোঝা যাবে, কোন পথে বইতে চলেছে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ভবিষ্যৎ৷ কেননা, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ সক্রান্ত একাধিক মামলা ঝুলে রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে৷ শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কয়েক হাজার মামলা রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে৷ অধিকাংশ মামলা এখনও  বিচারাধীন৷ মামলাকারীদের দাবি, যেহেতু প্রাথমিকে একাধিক মামলা বিচারাধীন রয়েছে, তার পরও কীভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তুতি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হল?

আবেদনকারী পায়েল বাগের আইনজীবী সুদীপ্ত দাস গুপ্তের বয়ান অনুযায়ী, ২০১৫ সালে ১১ অক্টোবর ১০ লক্ষ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেছিলেন৷ ২০১৬ সালে ৬০ হাজার পরীক্ষার্থীরা পাস করেছিল৷ ৪০ হাজার সফল প্রার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়ে ছিল৷ ২০ হাজার সফল প্রার্থী বিভিন্ন কারণে বাদ পড়েন৷ ২০১৫ সালের টেট পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ভুল থাকায় মামলা দায়ের হয়৷ ৩১০১০১৮ মামলায় প্রশ্ন ভুলে র যাঁরা উত্তর দিয়েছিল এবং মামলা করেছিল, তাঁদের ৬ নম্বর দিতে হবে নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়৷ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ১৩৮২০১৯ ডিভিশন বেঞ্চ মামলা করে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ৷ ডিভিশন বেঞ্চ খারিজ ১৩ আগস্ট ২০১৯৷ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ এসএলপি খারিজ হয়৷ আদালত অবমাননা মামলা রত্না বাগচী ও মানিক ভট্টাচার্য বিরুদ্বে মামলা দায়ের হয়৷ সেই মামলায় সশরীরে হাজিরার নির্দেশও দেওয়া হয়, জানুয়ারি ২০২০তে৷ পরে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাস বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ বহাল রাখে৷ পরে, চলতি মাসে ১৬৫০০ জন প্রার্থীদের চাকুরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পরে জারি হয় বিজ্ঞপ্তি৷ আগামী শুক্রবার মামরার শুনানি রয়েছে বিচারপতি সভ্যসচী ভট্টাচার্যের এজলাসে৷

ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ ২০১৪ সালে টেট প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের নথি যাচাই এবং বাছাই প্রক্রিয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়া কাজ শুরু করছে পর্ষদ৷ এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-সহ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে নির্দিষ্ট পর্ষদ৷ ২৫ নভেম্বর থেকে অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা৷ আবেদন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১ ডিসেম্বর৷ স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে টেট-২০১৪ পাস করা যোগ্য প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের নথি যাচাইয়ের জন্য অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে৷ এদিকে, এনসিটিইয়ের নিয়ম মেনে ২০১৪ সালের টেট পাস বিএড করা প্রার্থীদেরও নিয়োগে সুযোগ দিচ্ছে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু, সেই বিজ্ঞপ্তি জারি হতে না হতেই হাইকোর্টে দায়ের হল মামলা৷

পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী অনলাইন আবেদনের জন্য www.wbbpe.org-এ ওয়েবসাইটে যেতে হবে৷ ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর ২০২০-এর মধ্যে পর্ষদের ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে৷  আবেদন জমা দেওয়ার জন্য কয়েকটি বিষয় সহজ পদক্ষেপ করতে হবে৷ প্রথমে, পোর্টালে প্রবেশ করতে হবে, তারপর লিঙ্কে ক্লিক করুন৷ এবার টেট-২০১৪ সালের রোল নম্বর এবং জন্ম তারিখের তথ্য দিতে হবে৷ অন্যদিকে, D.El.Ed পড়ুয়াদের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের তরফে। বলা হয়েছে, ২০১৯-২০২১ সালের পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং সার্টিফিকেট দেওয়া শুরু হবে ২৬ নভেম্বর এবং চলবে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত।উল্লিখিত সরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রধানরা নির্দিষ্ট শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রেরণ করবেন রেজিস্ট্রেশন নং সহ। বোর্ড সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কোনও প্রতিনিধি বা অনুমোদিত ব্যক্তিকে অনুমতি দেবে না বোর্ডের কার্যালয়ে উপস্থিত থাকার জন্য, যদি না তাকে ডাকা হয় এসএমএস বা ই-মেইলের মাধ্যমে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *