কলকাতা: ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী৷ রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ এবার সেই ইঙ্গিত, হুঁশিয়ারি মিলিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গিয়ে গোটা এক মাসের বেতন খোয়ালেন বহু শিক্ষক৷ বছরের প্রথম মাসে বেতেন না পেয়ে চূড়ান্ত বিপাকে আন্দোলনকারী পার্শ্বশিক্ষকদের একাংশ৷
স্থায়ীকরণ ও সম কাজে সম বেতনের দাবিতে বিধাননগরে পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের ব্যানারে ৩২ দিনের অনশন, ধর্নায় সামিল হয়েছিলেন রাজ্যের কয়েক হাজার পার্শ্বশিক্ষক৷ কিন্তু, শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন তুলে নেন পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের নেতৃত্ব৷ মার্চ মাসের মধ্যে বেতন সমস্যা না মিটলে ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছিল পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চ৷ কিন্তু, সেই সমস্ত হুঁশিয়ারি উড়িয়ে আন্দোলনকারী পার্শ্বশিক্ষকদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান দেখাল শিক্ষা দপ্তর৷
অভিযোগ, আন্দোলন করার দায়ে ঐক্যমঞ্চের আহ্বায়ক মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানুয়ারি মাসে বেতন পেয়েছেন মাত্র ৩৭৬ টাকা৷ বৈশাখী চট্টোপাধ্যায় কোনও বেতনই পাননি৷ ঐক্যমঞ্চের আরেক আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ ২১ দিনের বেতন পেয়েছেন৷ কোচবিহারে ১৩৯ জন, দার্জিলিঙে ৭০ জন, নদীয়ায় ২৬৫ জন নামমাত্র বেতন পেয়েছেন বলে অভিযোগ শিক্ষকদের৷
এর আগে আন্দোলনকারী পার্শ্বশিক্ষকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, স্কুলে অনুপস্থিত থাকলে বেতন কাটা হতে পারে৷ শিক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পর এসআইরাও স্কুলে গিয়ে পার্শ্বশিক্ষকদের উপস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেন৷ অনুপস্থিত পার্শ্বশিক্ষকদের শোকজ করাও অভিযোগ ওঠে৷ এবার সরাসরি আন্দোলনকারী পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন কেটে চরম বার্তা দিল রাজ্য৷ আর এই নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষোভ তৈরি হয়েছে শিক্ষক মহলে৷
এই প্রসঙ্গে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘‘আন্দোলন দমন করার উদ্দেশ্যে রাজ্য সরকারের এই ভূমিকাকে আমরা তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি। গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করার অধিকার সকলের রয়েছে। বেতন বন্ধ বা বেতন কেটে নিয়ে আন্দোলন দমন করার এই নীতি স্বৈরাচারী শাসকরা গ্রহণ করে থাকে। এ নীতি কোনোভাবেই আমরা সমর্থন করি না। এর ফলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ আরো বেশি করে পুঞ্জিভূত হবে। আমরা রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, অবিলম্বে আন্দোলনকারী পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন থেকে কেটে নেওয়া অর্থ ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’