নয়াদিল্লি: আনলেন, পাশ করালেন, ভোটে জিতবেন?
ভোটের ঠিক মুখে আর্থিকভাবে দুর্বলদের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ চালু করার উদ্যোগ নিয়ে অসংখ্য প্রশ্ন উঠেছে। এটা কি ভোটের আগে ললিপপ? রাফালে আরো অনেক সমস্যা জর্জর ইস্যু থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতেই কি এই ললিপপ!
বিলের ইতিবৃত্ত
জেনারেল ক্যাটিগরির জন্য সংরক্ষণ বিল মঙ্গলবার পাশ হয়েছে লোকসভায়। পরের দিন বর্ধিত অধিবেশন ডেকে তড়িঘড়ি রাজ্যসভায় বিল পাশ করিয়ে নেয় সরকার। সোমবার কোটার বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু একে আইনে পরিণত করতে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন। সেই মতো সংবিধানের (১২৪ তম সংশোধনী) বিল ২০১৯ মঙ্গলবার লোকসভায় পাশ হয়েছে। পরে রাজ্যসভায় পাশ হয়। এখন রাষ্ট্রপতির সই ও আইন হওয়া সময়ের অপেক্ষা। এতে জেনারেল ক্যাটিগরির ছেলেমেয়েদর শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ দেওয়া হবে।
আসরে মোদী
বুধবার এই বিল নিয়ে প্রচারে নামেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কথায়, এই কোটা বিল ঐতিহাসিক। যারা সরকারের কাজ নিয়ে মিথ্যাচার করেন, এটা তাঁদের জন্য মুখের মতো জবাব। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এতে বঞ্চিত, দলিত ও উপজাতি সম্প্রদায়ের স্বার্থ লঙ্ঘিত হবে না।
কেন তাড়াহুড়ো ?
লোকসভা ভোটের সেমিফাইনালে বিজেপির ল্যাজে গোবরে অবস্থা হয়েছে। সামনেই লোকসভা। রাফালে থেকে কৃষক সমস্যা নিয়ে জেরবার অবস্থা মোদী। তাই ঘুরে দাঁড়াবার মতো মজবুত কোনো হাতিয়ার চাইছিলেন তিনি। তিন তালাক বহুদিন চেষ্টা করেও আইন করতে পারেননি। প্রতিবারই রাজ্যসভায় এসে মুখ থুবড়ে পড়ে তিন তালাক। এবারও তাই হল, তাই বর্ধিত অধিবেশন ডেকে সংরক্ষণ সংশোধনী পাশ করিয়ে নিল সরকার। এই নিয়ে এখন লোকসভা ভোটের প্রচারে নামবে তারা।
বিরোধীদের আওয়াজ
কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরযেওয়ালা বলেন, ভোটের আর ১০০ দিন বাকি। আর এখন অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির কথা মনে পড়ল মোদীর।
রাজনৈতিক গিমিক
মৃতপ্রায় সরকারের এটা রাজনৈতিক গিমিক বলে মনে করছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ‘ওব্রায়েন।
আরেকটা জুমলা
এটা মোদীর আরেকটা জুমলা বলে কটাক্ষ সমাজবাদী পার্টির নেতা জাভেদ আলির।
এটা ললিপপ না মোদীর উদারতা? এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ মোদী যদি অনেক আগে কোটা চালু করতেন, তাহলে হয়ত এই প্রশ্ন উঠত না। তিনি তখন সত্যিই বিরোধীদের মুখের মতো জবাব দিতে পারতেন। বড্ড দেরি হয়ে গেল না? তাঁকে ললিপপ প্রতিদান দেবে না তো দেশবাসী!