আজ বিকেল: প্রতিভা এমনই এক সহজাত প্রবৃ্ত্তি, যা বেশিদিন প্রচ্ছন্নে থাকে না। আর এহেন প্রতিভার আত্মপ্রকাশ ঘটলে তার বিস্তৃতি যে আলোড়ন ফেলবে, তা বলাই বাহুল্য। টাইম ম্যাগাজিনের বিচারে ২০১৮-র সেরা ২০জন বুদ্ধিমান কিশোর-কিশোরীর তালিকায় জায়গা করে নিল তিন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। এমনিতেই বুদ্ধি বৃত্তিতে চিরকালই এগিয়ে রয়েছে ভারতীয়রা, তার সঙ্গে যদি প্রতিভার যোগসূত্র ঘটে তো তাহলে কথাই নেই। এক্ষেত্রেও তাই-ই ঘটেছে প্রতিভার জোরে সেরার আসন ছিনিয়ে নিয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান কিশোরী কাব্য কোপ্পারাপু ও কিশোর ঋষভ জৈন। তৃতীয়জন হল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক অমিকা জর্জ। তাদের কৃত্তিত্ব দেশ কালের সীমানা ছাড়িয়ে আজ বিশ্বের দরবারে সমাদৃত। মানব কল্যাণে এই কিশোর কিশোরীরা কি ছাপ রাখল চলুন একবার দেখে নিই।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
১৯৮৪: ফিরে দেখা ‘শিখ বিরোধী দাঙ্গা’র বিভীষিকা
ক্যানসারের থেকে দূরারোগ্য ব্যাধি আর কিছু হয় না, এই তথ্য সর্বজনবিদিত। সেই ক্যানসার নিরাময়ের ওষুধ তৈরিতে গোটা বিশ্বে চলছে বিবিধ গবেষণা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাফল্যের স্ফুলিঙ্গ দেখা গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় বিন্দুর শামিল। তবুও গবেষণার অন্ত নেই। চিকিতসাক্ষেত্রে যুগান্তকারী সাফল্য অর্জনে সবাই ব্রতী হয়েছেন। এই কাজে পিছিয়ে নেই খুদে বিজ্ঞানীরাও। তারই প্রমাণ কিশোর ঋষভ নিজে। সে প্যানক্রিয়াটিক ক্যানসারের দ্রুত নির্ণয় পদ্ধতি উদ্ভাবন করে ফেলেছে। এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে ভাবতে এক সফটওয়্যার টুল তৈরি করে ফেলেছে ওই কিশোর, যা ক্যানসার আক্রান্ত প্যানক্রিয়াসকে সহজেই চিনিয়ে দেবে। চিকিতসকরাও রোগাক্রান্ত ব্যক্তিকে পরীক্ষা করার সময় এই টুলের সাহায্য নিলে উপকৃত হবেন। আক্রান্ত ব্যক্তির প্যানক্রিয়াস ঠিক কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ক্যানসার তাঁর শরীরে কতটা বিস্তার লাভ করেছে, তা স্পষ্ট বোঝা যাবে। যারফলে প্রয়োজনীয় চিকিতসার দ্রুত বন্দোবস্ত করা সম্ভব হবে। বছর ১৪-র ঋষভ অষ্টম শ্রেণিতে পাঠরত। এই বয়সেই মানব কল্যাণের স্বার্থে তার যুগান্তকারী পদক্ষেপ গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। তাই চলতি বছরে টাইম ম্যাগাজিনে কৃতিত্বের সাক্ষর রাখা২০জন কিশোর-কিশোরীর তালিকায় উঠে এসেছে ঋষভ জৈনের নাম।
যাঁরা ছেলে মেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষা দেননি, তাঁদের কী হবে? চিন্তায় নাসিরুদ্দিন শা
একইভাবে মস্তিষ্কের ক্যানসার নির্ণয়ে নয়া কম্পিউটার সিস্টেম তৈরি করে নজর কেড়ে নিয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক কাব্য কোপ্পারাপু। বছর আঠেরোর কিশোরী কাব্য হার্ভার্ডের ছাত্রী। এই বয়সেই সে ব্রেন ক্যানসার নির্ণয় সহায়ক কম্পিউটার সিস্টেম আবিষ্কার করে ফেলেছে। যার কাজই হল ব্রেনের টিস্যুগুলির স্লাইড পরীক্ষা করে রোগের প্রসার সম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া। আক্রান্ত রোগীর মস্তিষ্কের টিস্যুর ঘনত্ব, রং থেকে শুরু করে টেক্সচার পর্যন্ত সবই জানিয়ে দেবে এই সিস্টেম। বলা বাহুল্য এই একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকে দাঁড়িয়েও ক্যানসারের ভয়াবহতার সামনে নতজানু গোটা পৃথিবী। আর মস্তিষ্কের ক্যানসার তার মধ্যে অন্যতম। গত তিরিশ বছরেও এর সমাধান মেলেনি। মস্তিষ্কের ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা ঠিক কতদিন রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করে সুস্থ থেকেছেন বা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন, তাই নিয়েই গবেষণা করছিল কাব্য। যার ফলে এই শক্তিশালী কম্পিউটার সিস্টেমের উদ্ভাবন।
ব্যতিক্রমী নিয়মের বালাই – নাম কাশ্মীর, এবার রাষ্ট্রপতির শাসন উপত্যকায়
আমেরিকাকে আমরা প্রথম বিশ্বের দেশ হিসেবেই জানি। যেখানে অভাব মানুষের ক্রয়ক্ষমতাকে সংকীর্ণ করে রেখেছে,এটা ভাবতেই অবাক হয়ে যায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের বাসিন্দারা। তবে অবাক হলেও সত্যি যে দারিদ্র নামক সামাজিক ব্যধির থাবা মার্কিন মুলুকেও প্রভাব বিস্তার করেছে। সেই থাবার শিকারে সবথেকে বেশি ভুক্তভোগী দুঃস্থ পরিবারের কিশোরী ও মহিলারা। মেয়েদের শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়ার অন্যতম ঋতুস্রাব। এই সময়ে ঋতুমতি কিশোরী থেকে শুরু করে মহিলা সকলের জন্যই বিশেষভাবে হাইজিনিক স্যানিটারি ন্যাপকিন আবশ্যিক। কিন্তু সেই আবশ্যিকতায় থাবা বসিয়েছে অভাব অনটন। তাই যেখানে পেটের ভাত জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেখানে স্যানিটারি ন্যাপকিন বাহুল্য বৈকি। বছর উনিশের ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক অমিকা জর্জ মহিলাদের বন্ধু হয়ে এই সার্বিক সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে। অমিকা এই সমস্যার নাম দিয়েছে ‘পিরিয়ড প্রভার্টি’। দুঃস্থ পরিবার গুলির কিশোরী ও মহিলাদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন সরবরাহ করুক সরকার।এই দাবি তুলে প্রায় দু লক্ষ মার্কিন নাগরিকের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি আবেদন পত্র জমা করেছে সে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রি পিরিয়ডস ক্যামপেন শুরু করতেই সরকারী নীতি নির্ধারণের মাথাদের বিষয়টি নজরে এসেছে। তাঁরাও অমিকা জর্জের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানালে সরকারি তরফে উদ্যোগ শুরু হয়ে যায়। যারফলে এই প্রথম মার্কিন মুলুকে সরকারি বদান্যতায় দুঃস্থ পরিবারের মহিলা ও কিশোরীদের মধ্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি চালু হল।
‘উন্নয়নের জোয়ারে’ও মমতার শহরে বাড়ছে ‘গরিবে’র সংখ্যা
তার উদ্যোগ সফল হওয়াতে খুশি অমিকা। এক সাক্ষাতকারে সে জানিয়েছে, ‘স্কুলে যখন দেখতাম মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে বেশ কিছু পড়ুয়া ক্লাসে আসছে না,তখনই অবাক হই। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি তাদের পরিবার আর্থিক ভাবে দুর্বল। ঋতুস্রাবের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে পারে না,তাই তারা স্কুল কামাই করে। মার্কিন সরকার এই বিষয়ে অবগত থাকলেও সমস্যার সমাধানে কখনও উদ্যোগী হয়নি।’ অমিকার এই সাধু প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছে টাইম ম্যাগাজিন।তাই চলতি বছরে বিশ্বে্র প্রভাবশালী ২০জন কিশোর কিশোরীর তালিকায় ঋষভ,কাব্যর পাশাপাশি যোগ হয়েছে অমিকার নামও।