কলকাতা: ঢাকঢোল পিটিয়ে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সভা থেকে শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন বর্ধিত হারে বেতন পাবেন প্রাথমিক শিক্ষকরা৷ শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণার পরপর বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল শিক্ষা দপ্তর৷ প্রাথমিক শিক্ষকদের লাগাতার ১৫ দিনের অনশন কর্মসূচির জেরে কার্যত চাপে পড়ে গ্রেড পে বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি জারি করে শিক্ষা দপ্তর৷ বিজ্ঞপ্তিতে ১ আগস্ট থেকে নয়া হারে বেতনক্রম চালু করার বিজ্ঞপ্তি জারি হলেও বর্ধিত বেতন পাননি বলে অভিযোগ প্রাথমিক শিক্ষকদের৷ বর্ধিত বেতন বিজ্ঞপ্তিতে যথাযথ প্রাপ্য থেকে বঞ্চনা সহ ফিটমেন ফ্যাক্টর নিশ্চিত করার দাবিতে ফের অসন্তোষ প্রাথমিক শিক্ষকদের৷ শিক্ষা দপ্তরের নয়া বিজ্ঞপ্তিতে ‘প্রতারণার’ অভিযোগ তুলে পুজোর মুখে ফের যুদ্ধ ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষকদের৷
প্রাথমিক শিক্ষকদের সংগঠন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাস প্রেস বিবৃতি জারি করে জানিয়েছেন, ‘‘গত দেড় বছর ধরে লাগাতার শিক্ষক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন গত ২৬ জুলাই একটি বেতন বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি হাতে পায়ে৷ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে জারি করা অর্ডারটি ও পরবর্তী অর্ডারের ব্যাখ্যা শিক্ষা দপ্তরের জয়েন্ট সেক্রেটারি যা দিয়েছেন তা অস্পষ্ট ও অদ্ভুত৷ এই অর্ডারটি বিবেচনা করে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলির ব্যাখ্যা খুব তাড়াতাড়ি জানতে চাইছি রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তরের কাছে৷’’
শিক্ষক সংগঠনের প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘‘এই অর্ডার অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষকদের শুধু গ্রেড-পে নয়, সঙ্গে পে ব্যান্ড পরিবর্তন হয়েছে৷ এটা রাজ্য সরকারি সরকারি স্বীকার করে নিয়েছে তাদের অর্ডার ও ব্যাখ্যায়৷ কিন্তু বাস্তব ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অনেক পুরানো প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড পে মাত্র ৩০০ টাকা বেড়েছে৷ যদিও আমরা কিছুদিন আগে ন্যূনতম আট হাজার টাকা বেতন বাড়বে বলে জানতাম৷’’
তাঁদের আরও দাবি, ‘‘পে-কমিশন দেওয়া হয় বিভিন্ন উপযুক্ত সূচক অনুসারে৷ পূর্ববর্তী বেতন কাঠামো সরকার সরকার কম মনে করে পূর্ববর্তী বেতনের সঙ্গে একটি সমানুপাতিক সূচক গুন করে নতুন বেতন নির্ধারণ করে৷ আশা করি এক্ষেত্রে সরকার মনে করছে আমাদের বেতন কাঠামো সঠিক নয় তাই বেতন কাঠামো পরিবর্তন সঠিক নয়৷ তাই বেতন কাঠামোর পরিবর্তনের ঘোষণা করেছে৷ এই কারণে আমাদের দাবি, উপযুক্ত সমানুপাতিক গুনিতকে আমাদের নতুন বেতন কাঠামোতে উন্নীত করা হোক৷ অর্ডারটি পুরোপুরি ফাংশনাল প্রমোশনাল অর্ডার মনে হওয়া সত্বেও কেন সাতটি ইনক্রিমেন্ট আমরা পাব না৷ তার কোন ব্যাখ্যা নেই৷’’
‘‘শিক্ষামন্ত্রী আমাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও বলেছেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য মাদ্রাসার ট্রেন্ড শিক্ষকদের সঙ্গে রাখবেন না৷ কিন্তু এই অর্ডার ও তার ব্যাখ্যা অনুসারে মাদ্রাসার সঙ্গে বঞ্চনা চরমে পৌঁছে গিয়েছে৷ আমাদের মনে হয়, পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রতারিত হচ্ছে৷ এই বঞ্চনা যদি প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙ্গে পুনরায় ঘটতে থাকে তবে আমরা অর্থাৎ উস্তির তরফে ফের রাস্তায় বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব’’ বলেও জানিয়েছেন উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাস৷