কলকাতা: সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে কর্মরত শিক্ষাবন্ধুদের বেতন বৃদ্ধির নামে রাজ্য সরকারের ‘প্রতারণা’, ‘প্রহসন’ ও ‘বঞ্চনা’র প্রতিবাদে সোমবার রাজ্যনজুড়ে প্রতিটি জেলা সদরে DEO ও DPO-দের কাছে ডেপুটেশ দিল শিক্ষাবন্ধু ঐক্যামঞ্চ৷ রাজ্যজুড়ে এই কর্মসূচির পাশাপাশি আগামী বুধবার বিকাশ ভবন ঘেরাও কর্মসূচিরও ডাক দেওয়া হয়েছে৷
জানা গিয়েছে, ওই দিন প্রকল্প অধিকর্তাকে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে৷ বিকাশ ভবন চত্বরে শিক্ষাবন্ধু ঐক্যমঞ্চের তরফে মহামিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে৷ মিছিলে শিক্ষাবন্ধুদের পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততিরাও অংশগ্রহণ করবেন৷ এর আগেও একই ভাবে শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত ভুখা মিছিলের আয়োজন করেছিল শিক্ষাবন্ধু ঐক্যপমঞ্চ৷ যদিও, এই কর্মসূচির পর শিক্ষাবন্ধুদের ৪০ শতাংশ ভাতা বৃদ্ধির কথাও জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী৷
এই বিষয়ে শিক্ষাবন্ধু ঐক্যবমঞ্চের তরফে নন্দ দুলাল দাস বলেন, ‘‘এতদিন জানা ছিল কৃষক, শ্রমিক, ক্ষেত-মজুর, প্রান্তিক চাষি, ভাগচাষি এঁরাই শুধু বিনা চিকিৎসায় না খেতে পেয়ে মারা যান, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে বলতে হচ্ছে বাংলায় এখন একেরপর এক সরকারি কর্মচারীরা বিনা চিকিৎসায় না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছেন৷ জ্বলন্ত উদাহরণ সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে নিয়জিত শিক্ষাবন্ধু, এস.এস.কে, এম.এস.কে, কম্পিউটার শিক্ষক, ভোকেশনাল শিক্ষক, আশাকর্মী প্রভৃতি। অর্ধমৃত অবস্থায় আছেন সিভিক, পার্শ্বশিক্ষক,চুক্তি ভিত্তিক শিক্ষক, চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারী প্রভৃতি। তাই এই ছিন্নমূল মানুষ গুলোকে বাঁচাতে কবি শঙ্খ ঘোষ সমকাজে সমবেতনের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছিলেন। চিঠিতে আরও যাঁরা স্বাক্ষর করেছিলেন, তাঁরা হলেন সুপ্রিমকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি ও মানবাধিকার কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অশোক গাঙ্গুলি, সমাজকর্মী বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, মীরাতুন নাহার, শাশ্বতী ঘোষ, অভিনেতা কৌশিক সেন, শিল্পী সমীর আইচ, পল্লব কীর্তনীয়া, মানবাধিকার আন্দোলনের অগ্ৰনী যোদ্ধা রণজিৎ শূর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বনামধন্য অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র, রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের অধ্যাপক ভাস্কর চন্দ্র দাস প্রমুখ। সংহতি জ্ঞাপন করেছেন মানবাধিকার আন্দোলনের প্রাণপুরুষ সুজাত ভদ্র। অথচ এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অতীতে কথা দিয়েছিলেন মাসে দুবার করে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বসবেন, তাঁদের মতামত নিয়ে রাজ্য চালাবেন। এই চিঠি যদি শঙ্খবাবুরা জ্যোতি বসু বা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দিতেন, তাহলে দু’জনেই শঙ্খবাবুর বাড়িতে উপস্থিত হয়ে যেতেন। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শঙ্খ ঘোষদের দেওয়া চিঠি উপেক্ষা করে বোঝালেন তিনি আছেন মমতাতেই। তাই শিক্ষাবন্ধু ঐক্যঠমঞ্চ এবার ডাক দিয়েছে ঐতিহাসিক মহামিছিলের। আগামী বুধবার হতে চলেছে সেই ঐতিহাসিক মহামিছিল৷ মিছিল যাবে বিকাশ ভবন। জমায়েত করুণাময়ী, বেলা ১২টা। স্মারকলিপি দেওয়া হবে শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্যের প্রকল্প অধিকর্তাকে। সর্বশিক্ষা মিশনের সমস্ত কর্মচারীবৃন্দ তাদের পরিবার-পরিজন ও সন্তান-সন্ততি সহ এই মিছিলে সামিল হতে চলেছেন৷’’