আজ বিকেল: উচ্চ প্রাথমিকে শূন্যপদ সংক্রান্ত জটিলতা থাকলেও চলতি মাসের শেষেই কপাল খুলতে চলেছে কয়েক হাজার চাকরি-প্রার্থীদের ভাগ্য৷ আগামী মাসের শুরুতেই একগুচ্ছ সুখবর দিতে চলেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ ঠিক কী কী সূচি প্রকাশ করতে চলেছে কমিশন?
জানা গিয়েছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসের শেষে অথবা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জারি হতে পারে নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগের দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং৷ ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীদের ভাগ্য খুলে জারি হতে পারে বিজ্ঞপ্তি৷ ফেব্রুয়ারিতে হতে পারে কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া৷ কমিশন সূত্রে খবর, নবম-দশমে প্রথম দফায় কমিশনকে প্রত্যাখ্যান করেছেন অন্তত ১৪১ জন চাকরিপ্রার্থী৷ নানান কারণে কাউন্সেলিংয়ে অনুপস্থিত ছিলেন অন্তত ১০৮৬ জন চাকরিপ্রার্থী৷ মনে করা হচ্ছে, ওই পদগুলিতে এবার কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ দিতে পারে কমিশন৷
একাদশ-দ্বাদশের তৃতীয় ও নবম-দশমের তৃতীয় দফা এবং শারীর শিক্ষা ও কর্মশিক্ষায় দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং এখনও ঢের বাকি৷ আপাতত নবম-দশমের দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া শেষ করতে বেশি তৎপর কমিশন৷ প্রধান শিক্ষকদের ইন্টার্ভিউ প্রক্রিয়া আপাতত হচ্ছে না৷ পিছিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল৷ কিছু আইনগত সমস্যা হচ্ছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে৷
অন্যদিকে, উচ্চ প্রাথমিকে শূন্যপদ বৃদ্ধির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন কর্মসূচির ডাক দিলেন কয়েক লক্ষ চাকরিপ্রার্থী৷ নিজের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিবাদ কাটিয়ে শূন্যপদ বৃদ্ধির দাবি ছিনিয়ে আনতে পথে নামার ডাক দেওয়া হয়েছে৷ দাবি পূরণ না হলে চাকরি-প্রার্থীদের তরফে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, হঠাৎ কেন এই দাবি?
সম্প্রতি সাংবাদিক বৈঠক করে SSC-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার বলেন, ‘‘উচ্চ প্রাথমিক স্তরে ১৩০৮০ জন নিয়োগ হবে জানুয়ারি শেষ অথবা ফেব্রুয়ারি প্রথমে৷’’ কিন্তু, কমিশনের বিবৃতি অনুযায়ী শূন্যপদের সংখ্যা নিয়ে চাকরি-প্রার্থীদের মধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷ অবিলম্বে শূন্যপদ বৃদ্ধি করে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দাবিতে চলতি মাসেরই শেষে বড়সড় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে৷
কিন্তু, কেন এই দাবি? উচ্চ প্রাথমিকে কমপক্ষে ৩০ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের দাবি তুলেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ কিন্তু, এই মুহূর্তে কমিশন ১৩০৮০ জনের নিয়োগের কথা ভাবছে৷ ফলে, এত কম সংখ্যক শূন্যপদে নিয়োগের ঘোষণা হতেই চাকরিপ্রার্থী মহলে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে৷ অবিলম্বে শূন্যপদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়ে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের বেশ কয়েকটি সংগঠন৷
উচ্চ প্রাথমিকে ২০১৪ সালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ১৪০৮৮টি শূন্যপদ ছিল৷ সেই শূন্যপদ বেড়ে ১৮ হাজার হতে পারে বলে অনুমান করেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ সঙ্গে আরও সাত হাজার শূন্যপদ যুক্ত হয়ে কমপক্ষে ২৫ হাজার আসানে নিয়োগ হবে বলে আশা করেছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ কিন্তু, কমিশনের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে ১৩০৮০ জনের নিয়োগের কথা ঘোষণা হতে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে৷ কেননা, এর আগেও একাধিকবার উচ্চ প্রাথমিকে ৩০ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই সুর চড়িয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ কিন্তু, বাস্তবে সেই দাবি আদৌ মেনে নেওয়া হবে কি না তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ ভোটের আগে নিয়োগ শেষ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷
এবিষয়ে এসএসসি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সভাপতি রাজা নন্দী বলেন, ‘উচ্চ প্রাথমিকে কমপক্ষে ৩০০০০ পদে ২০১৯ মার্চের মধ্যে নিয়োগের দাবিতে বিকাশভবন অভিযান হবে শীঘ্রই৷ সকল কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃত্ব ও মেম্বারদের ঐক্যবদ্ধ বৃহত্তর আন্দোলনে তৈরি থাকুন৷ সকলকেই জেলা মিটিং ও আন্দোলনে যেতে হবে৷ কমপক্ষে ১৫০০০ জনের জমায়েত চাই৷ এগিয়ে আসুন, নিজের আত্মশক্তিতে দাবি ছিনিয়ে নিতে৷’’
চাকরিপ্রার্থী অনুতোষ বড়পন্ডা জানান, ‘‘উচ্চ প্রাথমিকের শূন্যপদ বৃদ্ধির দাবিতে আমরা বিকাশ ভবনে ডেপুটেশন জমা দিয়েছিলাম৷ কিন্তু, আমাদের দাবি না মেনেই কমিশনের তরফে ১৩০৮০ শূন্যপদে নিয়োগের কথা জানিয়েছেন চেয়ারম্যান৷ এত কম শূন্যপদে নিয়োগ আমরা মেনে নেব না৷ অবিলম্বে পূর্ণ শূন্যপদের বর্ধিত তালিকা প্রকাশের দাবি জানিয়ে এই মাসের শেষ সপ্তাহে আমরা আন্দোলনে নামব৷’’
চাকরিপ্রার্থী জয়দীপ দত্ত বলেন, ‘‘কমিশনকে শূন্যপদ বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছি৷ ভোটের আগে নিয়োগ ও অবিলম্বে শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ না করলে ভবিষ্যতে এক মাসুল গুনতে হবে কমিশনকে৷ শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের জীবন নিশ্চিত করতে কমিশনকে এই মেনে নিতেই হবে৷’’
এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ এসএসসি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের সভাপতি রাজা নন্দী বলেন, ‘‘৩০ হাজার শূন্যপদে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আমরা অনর৷ অবিলম্বে কমিশন যদি উচ্চ প্রাথমিকের চূড়ান্ত শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ না করে, তাহলে ১৫ হাজার চাকরিপ্রার্থীকে নিয়ে কলকাতা অচল করে দেব৷’’