শ্রীনগর: জঙ্গি নাশকতা কিম্বা এয়ার স্ট্রাইক সেনার শহিদ হওয়া যেন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। তাই পেটের টানে সেনাবাহিনীতে যোগ দিলেও সেখানে দেশসেবা সবসময় দ্বিতীয় স্থানেই থেকে যায়। কিন্তু উপত্যকার সাম্প্রতিক জঙ্গি হানার ঘটনা এই ধারণাকে অনেকটাই উলটে পালটে দিয়েছে।
এমনিতেই ভারত পাক বৈরিতার মাঝে পড়ে কাশ্মীরের বাসিন্দাদের জীবনে কোনওরকম সুস্থিতি নেই। তার উপরে সেনাবাহিনীর স্থায়ী অবস্থানের কারণে উপত্যকাবাসীদের সমস্যার অন্ত নেই। মাঝে মাঝেই বিচ্ছিন্নতাবাদীদের আক্রমণ ঠেকাতে ও জঙ্গি সন্দেহে তল্লাশির সময় প্রায় বিনা কারণেই সেনার বিরাগভাজন হয়ে পড়েন স্থানীয়রা। তাই কাশ্মীরীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর একটা দ্বন্দ্ব রয়েই যায়। তাইতো পাথর ছোঁড়ার ঘটনা যেমন বিরল নয় তেমনই নির্বিবাদে সেনার গুলিতে নির্দোষের প্রাণহানি আকছারই ঘটে।
J&K: Mubassir Ali, one of the aspirants, says, “I am here to join Indian Army to serve the country & my family. Wing Commander Abhinandan was captured by Pakistan army but then he came back to India. This has given hope to youth & inspired them to join Indian Army.” pic.twitter.com/qUNGkXzkUB
— ANI (@ANI) March 9, 2019
কিন্তু সেনার সঙ্গে দ্বন্দ্ব যেমনই থাক বায়ুসেনার পাইলট অভিনন্দন বর্তমান পাকিস্তান থেকে দেশে ফেরার পরই উপত্যকার যুব সমাজের মধ্যে নয়া উদ্দীপনার সঞ্চার হয়েছে। তাঁর দেশের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করতে উদ্যোগী হয়েছেন, প্রায় ২০০০ যুবক ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে ইতিমধ্যেই কাজকর্ম শুরু করেছে। উপত্যকায় নিরাপত্তার জন্য স্থানীয়দের সহযোগিতার প্রয়োজন, এবার সেই যুবসমাজের তরফেই সেনায় যোগদানের আগ্রহ দেখা গেল।
পাকিস্তানের ডোডা জেলার এক স্টেডিয়ামে এদিন ভারতীয় সেনার উদ্যোগে নিয়োগ ব়্যালির আয়োজন করা হয়। এই মুহূর্তে স্থানীয় বাহিনীতে ৫৭টি আসন শূন্য রয়েছে, সেই শূন্যস্থান পূরণ করতেই এদিন নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রাথমিক আয়োজন করা হয়। টেরিটোরিয়াল বাহিনীতে যোগ দিতে স্টেডিয়ামে কাশ্মীরি যুবকদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।সবমিলিয়ে প্রায় ২০০০ জন যুবককে এদিন নিয়োগের লাইনে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে।
সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে আসা যুবক মুবাস্সির আলি জানান, দেশের সেবা করতেই সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চাই।আর সেজন্যই আজ এখানে এসেছি। আর এক নিয়োগ প্রার্থী নওয়াজ আহমেদ বলেন, সেই শৈশব থেকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার প্রবল ইচ্ছে বহন করে চলেছি। এরমধ্যে ১২-১৩ বার পরীক্ষাও দিয়েও অকৃতকার্য হয়েছি। কিন্তু হাল ছাড়িনি,যতদিন নিয়োগের বয়সসীমা না পেরিয়ে যাচ্ছে ততদিন চেষ্টা করে যাব। শুধু দেশ সেবার জন্যই নয়, নিজে ও পরিবারের সদস্যদের মুখে অন্ন তুলে দিতেও সেনাবাহিনীতেই যোগ দিতে চান তিনি। উল্লেখ্য,কাশ্মীরী যুবকদের এহেন ইচ্ছেকে ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবেই দেখছে বিএসএফ।