আজ বিকেল: একের পর এক ‘কেলেঙ্কারি’! আর তাতেই জেরবার স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ পরপর তিনটি মামলায় এই চূড়ান্ত বিড়ম্বনায় কমিশনের কর্তা৷ রাত পোহালেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে কমিশনকে৷ একদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে শিক্ষক নিয়োগে ‘অনিয়ম’ ও অন্যদিকে প্রধানশিক্ষক নিয়োগে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ এবং উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষক নিয়োগ মামলা প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চলছে কমিশন৷ আগামিকাল সোমবার জোড়া মামলার শুনানি৷ দু’টি মামলায় কমিশনের জবাব জানতে চেয়েছে আদালত৷ সোমবার মামলার ভিত্তিতে কী দেবেন কমিশনের কর্তারা? তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা৷ জোড়া মামলার ধাক্কা সামলে আদৌ পরবর্তী নিয়োগ সম্ভব? তা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে চাকরিপ্রার্থী মহলে৷
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে ইতিমধ্যেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের কৈফিয়ত তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে কেন কাজ হয়নি, উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় শুক্রবার বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় তার উত্তর চেয়েছেন বলে আদালত সূত্রে খবর৷ জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী শীর্ষ আদালতে রাজ্য জানিয়েছিল, যোগ্য ৩৬ হাজার ১৪০ জনকে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু হাজার তিনেক চাকরিপ্রার্থী মামলা করে জানান, পরীক্ষায় পাশ করা সত্ত্বেও তাঁদের নিয়োগ করা হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের অন্তর্বর্তী নির্দেশ ছিল, মামলা চলাকালীন নতুন নিয়োগের পরীক্ষা নিলেও ফল প্রকাশ করা যাবে না। কিন্তু এসএসসি সেই নির্দেশ মানেনি বলে অভিযোগ ওঠে৷
অন্যদিকে সোমবার কমিশনের চেয়ারম্যানকে আদালতে তলব করা হয়েছে৷ অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগের রুল না মেনে নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগ হয়নি৷ প্রকাশিত হয়নি মেধাতালিকা৷ মূলত, এই অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের হয় মামলা৷ নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগে মেধাতালিকা প্রকাশ না হওয়ায় কমিশনকে কড়া সমালোচনা করে আদলত৷ কোন নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হল না, তাও কমিশনের তরফে কৈফিয়ত তলব করেছেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থার৷ সোমবার হাইকোর্টে হাজিরার নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি৷ মামলাকারীদের অভিযোগ, মেধাতালিকা না প্রকাশ করেই কমিশন নবম-দশমে শিক্ষক নিয়োগ করেছে৷ এদিকে, নতুন করে ফের শিক্ষক নিয়োগ শুরু করায় মামলার কোপ পড়েছে এসএসসি’র ঘাড়ে৷
অন্যদিকে, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া কলকাতা হাইকোর্টে হোঁচট খেয়েছে৷ আপাতত এক মাসের জন্য সম্পূর্ণভাবে থমকে গিয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ বিচারপতি শেখর ববি শরাফ ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে জানিয়েছেন, সোমবার বিষয়টির চূড়ান্ত শুনানি শুরু হবে৷ ওই দিন কমিশনের প্রতিনিধিদের হাজির থাকতেও বলা হয়েছে৷ আইনানুগ ভাবে নিয়োগ হচ্ছে না, এই অভিযোগে গত সোমবার আদালত বলেছিল, মামলাকারীদের ‘পার্সোনালিটি টেস্ট’ নিয়ে এবং মেধা তালিকা প্রকাশ করার পরেই যেন প্রার্থীদের নতুন চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়৷ তারপরই করা যাবে প্রার্থীদের কাউন্সেলিং৷ ততদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত থাকবে৷
কিন্তু, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে পরপর তিনটি মামলায় বেশ বিপাকে কমিশন৷ আদালতের নির্দেশ মেনে কমিশনের তরফে ‘জবাব’ তৈরি করতে গিয়ে আদৌ পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলি ঝুলে যাবে না তো? উদ্বেগ বাড়ছে চাকরিপ্রার্থীদের অন্দরে৷