কলকাতা: কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের দীপাবলীর সুখবর শুনিয়েছে শুনিয়েছে নরেন্দ্র মোদি সরকার৷ ৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতার দেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা৷ কেন্দ্রের তরফে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণার পর রাজ্যের কর্মীদের মধ্যে ছড়িয়েছে তীব্র অসন্তোষ৷ মহার্ঘ ভাতার মামলার স্যাটের রায়কে মনে করিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া প্রসঙ্গে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন কর্মচারীদের একাংশ৷ পরিসংখ্যান দিয়ে মহার্ঘভাতার বঞ্চনার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন কর্মচারীদের একাংশ৷
দীর্ঘ মামলার জট কাটিয়ে গত ২৬ জুলাই স্যাটের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, রায় ঘোষণা হওয়ার তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বিষয়ে নীতি নির্ধারণ করতে হবে৷ কেন্দ্রের হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের দিতে হবে মহার্ঘ ভাতা৷ বছরে দু’বার মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার কথাও স্যাটের রায় উল্লেখ করা হয়েছে৷ স্যাটের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২৬ জুলাই রায় ঘোষণা হওয়ার তিন মাসের মধ্যে অর্থাৎ আগামী ২৫ অক্টোবরের মধ্যে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকারকে নীতি নির্ধারণ করতে হবে৷ ছ’মাসের মধ্যে তা কার্যকর করতে হবে৷ এক বছরের মধ্যে বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে অথবা ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হওয়ার আগে৷
কিন্তু ২৬ জুলাই রায় ঘোষণা হওয়ার পর আজ পর্যন্ত সেই বিষয়ে কোনও ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের৷ স্যাটের নির্দেশ অনুযায়ী মহার্ঘভাতার মামলার অনুযায়ী রাজ্য সরকারকে নীতি নির্ধারণের জন্য হাতে আর মাত্র ১৫ দিনের সময় রয়েছে৷ আগামী ২৫ অক্টোবরের মধ্যে এই নীতি নির্ধারণ করে ফেলার কথা ছিল৷ কিন্তু ষষ্ঠ বেতন কমিশনের বিয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত কোনও তথ্য না থাকায় সেই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে৷ এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের এক দফায় মহার্ঘ ভাতা বাড়ানো হয়েছে৷ ফলে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সরকারি কর্মচারী মহলে৷
এবিষয়ে পরিসংখ্যান তুলে ধরে কনফেডারেশন অব স্টেট গভঃ এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার আরও এক কিস্তি অর্থাত ৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করল৷ কেন্দ্রীয় কর্মচারীরা যা চার মাস বকেয়া সহ হাতে পাবেন৷ বর্তমানে কেন্দ্রীয় কর্মীরা নয়া বেতনে ১২ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা পাচ্ছিলেন৷ যা মূল্যসূচক অনুযায়ী আমাদের ২৯ শতাংশ৷ আরও এক দফায় ৫ শতাংশ মহার্ঘভাতা যা মূল্যসূচক অনুসারে বিগত বেতনের ১১ শতাংশ৷ ফলে ১/৭/১৯ থেকে ২৯ শতাংশ +১১ শতাংশ= মোট ৪০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা আমরা কম পাচ্ছি৷ কারণ এখন আমরা পাচ্ছি ১২৫ শতাংশ৷ কেন্দ্রীয় কমর্চারী যাদের পুরনো বেতন তাঁরা পাবে ০১/০৭/১৯ থেকে ১৬৫ শতাংশ৷ দেখুন আমাদের সঙ্গে ওঁদের পার্থক্য গিয়ে দাঁড়াবে (১৬৫ শতাংশ – ১২৫ শতাংশ= ৪০ শতাংশ) বলা বাহুল্য আমাদের, ০১/০১/২০ থেকে ডিএ ব্যতীত বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে৷ এবার যদি ধরে নেওয়া হয়, ০১/০১/২০ কেন্দ্রের আরও ৫ শতাংশ ডিএ হল, এবং ওই ৫ শতাংশ ডিএ কম বেশি আমাদের বেতনে সিপিআই অনুসারে তা যদি ১০ শতাংশ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে বকেয়া গিয়ে দাড়াবে ১৭৫ শতাংশ – ১২৫ শতাংশ = ৫০ শতাংশ৷ ভাবা যায়? কারণ এবার ১ নং স্কেল ৬৬০০ টাকার সঙ্গে ১৭৫ শতাংশ ডিএ যোগ করে দেখুন তো কত হয়? ১৮,১৫০ টাকা৷ আর ১ নং স্কেল ৬৬০০ ষষ্ঠ বেতন কমিশনে ০১|০১|২০ থেকে কত হচ্ছে? ১৭,০০০ টাকা৷ এবার যাঁরা নয়া বেতনে লালায়িত হচ্ছেন, তাঁদের বলব সরকারের তাবেদারি না করে, আন্দোলন-আন্দোলন গল্প না শুনিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে ডিএটা ছিনিয়ে আনুন তো?’’