চাকরির আবেদনের নামে বছরে কত কোটি টাকা উপার্জন করে ভারতীয় রেল?

নয়াদিল্লি: দুই ধাপে আগামী দু’বছরে সাড়ে চার লক্ষ শূন্যপদের নিয়োগ করতে চলেছে ভারতীয় রেল৷ একথা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল৷ তবে, নিয়োগের আবেদন জমা হলেও হয়নি নিয়োগ৷ কিন্তু, কেন এই পরিস্থিতি? এর পেছনে রয়েছে রেলের আয়ের উৎস্য? চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট উঠে এসেছে তথ্য জানার অধিকার আইনের সৌজন্যে৷ জানা গিয়েছে, গত বছরের চাকরির পরীক্ষায় রেল বেকারদের কাছ থেকে

চাকরির আবেদনের নামে বছরে কত কোটি টাকা উপার্জন করে ভারতীয় রেল?

নয়াদিল্লি:  দুই ধাপে আগামী দু’বছরে সাড়ে চার লক্ষ শূন্যপদের নিয়োগ করতে চলেছে ভারতীয় রেল৷ একথা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল৷ তবে, নিয়োগের আবেদন জমা হলেও হয়নি নিয়োগ৷ কিন্তু, কেন এই পরিস্থিতি? এর পেছনে রয়েছে রেলের আয়ের উৎস্য? চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট উঠে এসেছে তথ্য জানার অধিকার আইনের সৌজন্যে৷ জানা গিয়েছে, গত বছরের চাকরির পরীক্ষায় রেল বেকারদের কাছ থেকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা উপার্জন করেছে৷

রিপোর্ট বলছে, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে যখন রেল প্রায় লক্ষাধিক শূন্যপদে নিয়োগের ঘোষণা করা হয়, তখন প্রায় ২ কোটি ৩৭ লাখ প্রার্থীর আবেদন জমা পড়ে৷ সম্প্রতি আরটিআই-এর উত্তরে জানা গিয়েছে,  পরীক্ষার জন্য আবেদন মূল্য হিসেবে রেল প্রায় ৯০০ কোটি টাকাও রোজগার করেছে৷ ভোপালের আরটিআই কর্মী ডাঃ প্রকাশ অগ্রবাল বলেন, ‘‘রেল স্বীকার করে নিয়েছে যে আবেদনের টাকা হিসেবে ১ লক্ষ ২৭ হাজার প্রার্থীর থেকে ৯০০ কোটি টাকা উপার্জন হয়েছে৷ এর মধ্য থেকেই পরীক্ষায় উপস্থিত হতে না পারা প্রার্থীদের টাকাও অবশ্য ফেরত দিয়েছে রেল৷’’

রেল পরীক্ষার আবেদনের মূল্যের দু’টি বিভাগ রেখেছিল৷ সাধারণ ও সংরক্ষিত বিভাগ৷ সাধারণ শ্রেণির প্রার্থীদের থেকে ৫০০ টাকা নেওয়া হয়৷ যার মধ্য থেকে যারা পরীক্ষাতে বসতে পারেননি তাঁদের ৪০০ টাকা করে ফেরত দেওয়া হয়৷ অন্যদিকে সংরক্ষিত প্রার্থীদের জন্য ২৫০ টাকা করে আবেদনের মূল্য নেওয়া হয়৷ পরীক্ষায় অনুপস্থিতদের এই পুরো টাকাই তাঁদের অ্যাকাউন্টে রেল পাঠিয়ে দিয়েছে৷ রেলওয়ে বোর্ডের প্রাক্তন সদস্য সুবোধ জৈন জানান, পরীক্ষার আবেদনপত্রের জন্য একটি নির্দিষ্ট মূল্য ধার্য করার নেপথ্যের কারণ হল মূলত দুটি৷ প্রথমত, এই সূত্রে জমা হওয়া বিপুল অর্থ সাহায্যে পরীক্ষার প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা৷ দ্বিতীয়ত, পরীক্ষা দিতে অনিচ্ছুক প্রার্থীদের আবেদন পাঠানোর রাস্তা বন্ধ করা৷  পরীক্ষার আবেদন মূল্য ফেরত দেওয়ার পরেও ৮৮৭ কোটি টাকার থেকে রেলের মোট রোজগার হয়েছে ৪২৭ কোটি টাকা৷ ২ কোটি ৩৭ লক্ষ প্রার্থী আবেদন করেছেন৷ এর মধ্যেও সাধারণ ও সংরক্ষিত শ্রেণির মোট ৮৩ লাখ ৮৮ হাজার প্রার্থী পরীক্ষা দিতেই আসেননি না৷ তাই এঁদের পুরো টাকাই রেলের অ্যাকাউন্টে গিয়েছে৷

রেল সূত্রে খবর, পরীক্ষা না দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশই সাধারণ শ্রেণির যাঁদের থেকে রেল ৫০০ টাকা করে নিয়েছে৷ সুতরাং এই বিভাগ থেকে আয় হয়েছে ২৫১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা৷ এদিকে অনুপস্থিত থাকা প্রায় ৩৩,৫৫,২০০ জন সংরক্ষিত বিভাগের প্রার্থীদের থেকেও প্রথমে ২৫০ টাকা নেওয়া হয়৷ তাহলে রেলের অ্যাকাউন্টে ৮৩ কোটি ৮৮ লক্ষ টাকা আসে৷ ফর্ম পূরণের পরেও পরীক্ষা দিতে আসেনি এমন প্রার্থীদের কাছ থেকে রেলওয়ে ৩৩৫ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা রোজগার করেছে৷

রেল সূত্রের খবর, পরীক্ষায় উপস্থিত ছিলেন মোট ১ কোটি ৫৩ লাখ প্রার্থী৷ এখন, যদি ৬০ শতাংশ প্রার্থী সাধারণ বিভাগের হন, যাঁদের থেকে নেওয়া ৫০০ টাকার মধ্যে ৪০০ টাকা ফেরত দেওয়ার পরেও রেলের কাছে প্রার্থী পিছু ১০০ টাকা করে থাকে, তাহলে রোজগার হয়েছে ৯১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা৷ উপস্থিত ও অনুপস্থিতি মিলিয়ে রেলের রোজগার হয়েছে মোট ৪২৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা৷ যদি রেলমন্ত্রীর কথা অনুযায়ী ফের ২ লাখ ৩২ হাজার নয়া শূন্যপদে নিয়োগের কথা ওঠে তাহলে রেলের আয় কত হতে পারে? আন্দাজ করা খুব একটা কঠিন নয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 3 =