কলকাতা: পদ বন সহায়ক৷ শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাশ৷ কাজ, হাতি তাড়ানো৷ কখনও কখনও বনভূমির পাহারা দেওয়া৷ তবে, তাও চুক্তিভিত্তিক৷ বেতন মেরেকেটে ১০ হাজার টাকা৷ কিন্তু, এই চুক্তিভিত্তিক কাজ চেয়ে হাতে হাতে আবেদন জমা ঘিরেও তৈরি হয়েছিল বিতর্ক৷ জীবিকা চেয়ে জীবনকে ঝুঁকি নিয়ে করোনা আবহে বন দফতরে গিয়ে আবেদন জমা দেন বাংলার বহু চাকরিপ্রার্থী৷ তাকতে লাটে ওঠে দূরত্ব বিধি৷ এবার বেকারত্ব ঘোচাতে বন সহায়ক পদে আবেদন করলেন রাজ্যের বহু পিএইচডি থেকে শুরু করে এমএসসি, এমএ পাশ যুবক-যুবতীরা৷ চাকরিপ্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখে চক্ষু চড়কগাছ বনকর্তাদের! যদিও, সরকারি কিংবা দলগত ভাবে দাবি করা হয়, বাংলায় নাকি ১ কোটি ৩৬ লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে৷ বাংলায় বেকারত্ব কমেছে ৪০ শতাংশ৷ কিন্তু, হাতি তাড়ানোর অস্থায়ী কাজের জন্য আবেদনের ঘিরে সেই দাবি ফের প্রশ্নের মুখে৷
হাতি তাড়ানোর অস্থায়ী কাজের জন্য উচ্চ শিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে আবেদনের ব্যাপক সাড়া৷ মাত্র দু’হাজার বন সহায়ক শূন্যপদের জন্য বুধবার ছিল আবেদন জমা দেওয়ার শেষ দিন৷ সূত্রের খবর, আবেদনের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০ লক্ষের বেশি৷ লিখিত পরীক্ষার পরিবর্তে নিয়োগ হবে ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে৷ করোনা আবহে সেই প্রক্রিয়া এখন কীভাবে হবে, তা ভেবে ঘুম ছুটেছে বন দফতরের আধিকারিকদের৷ শুধুমাত্র পুরুলিয়া জেলায় সমস্ত আবেদনকারীকে ইন্টারভিউ নিতে গেলে কম করে হলেও সময় লাগবে কম করে এক হাজার দিন! আবেদনের প্রবণতা এমন যে, খবরে প্রকাশ, ওই জেলার চাকরিপ্রার্থীদের আবেদন ৪টি বড় ট্রাঙ্কেও করার জায়গা হয়নি৷ পরে তা ৪৫টি বস্তায় চেপেচুপে ধরানো হয়েছে আবেদনপত্র!
বন দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যুবকদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এই প্রথমবার সিভিক ভলান্টিয়ারের ধাঁচে বন সহায়ক পদে নিয়োগ হতে চলেছে৷ কিন্তু এত আবেদন জমা পড়বে, তা তাঁরা ভাবতে পারেনি৷ যোগ্যতার বিচারে কাকে বাদ দেবেন, তা ভাবাচ্ছে বনকর্তাদের৷ অফিসারদের দাবি, প্রতিদিন ৬ ঘণ্টায় সর্বাধিক ১০০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া যেতে পারে৷ ঠিক এভাবে ২৩ জেলায় আবেদনকারীদের ইন্টারভিউ নিতে কয়েক হাজার দিন লাগার কথা৷ যদিও সংবাদমাধ্যমে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আবেদনের সংখ্যা স্ক্রুটিনির পর জানা যাবে৷ প্রয়োজনে ইন্টারভিউ বোর্ডের সংখ্যা বাড়ানো হবে৷ দরকারে শনিবার ও রবিবার ইন্টারভিউ নেওয়া হবে৷