কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগের জট কাটল কলকাতা হাইকোর্টে৷ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এবার বড়সড় স্বস্তি পেল রাজ্য সরকার৷ নিয়োগে প্রক্রিয়া উপর যে চার সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছিল সিঙ্গেল বেঞ্চ, সেই স্থগিতাদেশ আজ উঠে গেল৷ ফলে, সাড়ে ১৬ হাজার শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ কোন বাধা আর থাকল না৷ তবে, সমস্যা দেখা দিতে পারে নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি৷ তবে নিয়ম মেনে মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছে, আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে প্যানেল প্রকাশ করতে হবে৷ যদিও, এই তালিকা এতদিন প্রকাশ করেনি পর্ষদ৷ স্থগিতাদেশ উঠে গেলেও সিঙ্গেল বেঞ্চের মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালতমুখী হয়ে থাকতেই হবে৷ আগামী ১১ এপ্রিল ওই মামলার শুনানি৷
১৬,৫০০ শূন্যপদে প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগের উপর গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ৷ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জে করে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা দায়ের করে প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদ৷ বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সৌগত ভট্রাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের হয়েছে আপিল মামালাটি৷ পাশাপাশি যে সমস্ত প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই চাকরি পেয়ে গেছিলেন, তারাও আজ ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছে সিংগল বেঞ্চের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে৷ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করেছিল রাজ্য সরকার৷ আজ আদালত জানিয়ে দিয়েছে, দু’সপ্তাহের মধ্যে প্রাথামিকের প্যানেল প্রকাশ করতে হবে৷ উঠে গেলে স্থগিতাদেশ৷ প্রত্যেক DI, DPSC, কাউন্সিল অফিসে প্যানেল টানাতে হবে৷ নির্দেশ ডিভিশন বেঞ্চের৷ ফলে, যারা ইতিমধ্যেই নিয়োগপত্র পেয়ে গিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়৷ বাকিদের ক্ষেত্রে কীভাবে নিয়োগ হবে, ভোটের বিধি নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা৷ আইনজীবীদের মতামত নিয়ে কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করবে পর্ষদ৷ তবে, নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি এক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হয় কি না, সেদিকে নজর রাখছে পর্ষদ৷
২০১৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ওপর যে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজ, সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য৷ আজ বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানি৷ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের রাজ্য সরকার৷ ১৬,৫০০ শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের উপর গত ২২ ফেব্রুয়ারি স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ৷ সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জে করে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল মামলা করে প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদ৷ বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের হয়৷ পাশাপাশি যে সমস্ত প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই চাকরি পেয়ে গেছিলেন, তারাও ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় সিঙ্গল বেঞ্চের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে৷ আজ মামলার শুনানিতে সব পক্ষের যুক্তি শুনে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ৷ সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশের উপর ডিভিশন বেঞ্চের স্থগিতাদেশ জারি হওয়ায় আপাতত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে আর কোনও বাধা থাকছে না৷ তবে, স্থগিতাদেশ উঠে গেলেও সিঙ্গেল বেঞ্চের মামলা নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদালতমুখী হয়ে থাকতেই হবে৷ আগামী ১১ এপ্রিল ওই মামলার শুনানি৷
পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৩ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ১৬ হাজার ৫০০ শূন্যপদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করে৷ যাঁরা টেট উত্তীর্ণ এবং যাঁদের প্রশিক্ষণ রয়েছে, একমাত্র তাঁরাই আবেদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছিল পর্ষদ৷ এর পর শুরু হয় নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ মেধা তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ১৫ হাজার ২৮৪ জন৷ জানুয়ারি মাসে ৭ দিন ধরে ইন্টারভিউ হয়৷ পর্ষদ সূত্রে খবর, এই নিয়োগের ক্ষেত্রে পার্শ্বশিক্ষকদের ১০% সংরক্ষণ রাখা হয়৷ এছাড়াও এত কম সময়ের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এযাবত কালে কোন নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে পারিনি বলেই পর্ষদ সূত্রের দাবি৷ কিন্তু ১৫ ফেব্রুয়ারি সোমবার গভীর রাতে প্রকাশিত ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলে দায়ের হয় মামলা৷ নিয়োগে বেনিয়ম ও অস্বচ্ছতার অভিযোগে ছ’টি মামলা দায়ের হয় হাইকোর্টে৷ সেই মামলার প্রেক্ষিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করে আদালত৷ এবার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে বড় জয় রাজ্যের৷
২০১৪ সালের প্রাইমারি টেটের অস্বচ্ছ মেধাতালিকা প্রকাশের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন পরীক্ষার্থী৷ তাঁদের অভিযোগ, মেধাতালিকার কোনও পূর্ণঙ্গা তালিকা প্রকাশ করা হয়নি৷ শুধুমাত্র রোল নম্বর দিয়ে সফর প্রার্থীরা একমাত্র জানতে পারছেন, তিনি ডাক পাচ্ছেন কি না৷ মেধাতালিকা, প্যানেল না থাকার অভিযোগ তোলা হয়৷ মেধাতালিকায় অস্বচ্ছ অভিযোগ সংক্রান্ত মামলা ওঠে কলকাতা হাইকোর্টে৷ বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের বেঞ্চ নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন৷ মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া স্থগিতাদেশ বহাল রাখার নির্দেশ দেয় আদালত৷ ওই নির্দেশ আজ ডিভিশন বেঞ্চে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে৷
