ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ দেড় হাজার চাকরিপ্রার্থী, মামলার পর মামলা! কবে কাটবে নিয়োগ জট?

ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ দেড় হাজার চাকরিপ্রার্থী, মামলার পর মামলা! কবে কাটবে নিয়োগ জট?

নিজস্ব প্রতিনিধি:   শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারির জেরে কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ আজ অনিশ্চয়তার মুখে। কবে তাঁদের জীবনে নতুন সূর্য আসবে সে কথা জানা নেই কারও। আর কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন অনিয়ম এবং অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ধারাবাহিক ভাবে নিত্য নতুন মামলা দায়ের হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টে। শুক্রবার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে ফের মামলা দায়ের হয়েছে।  প্রাথমিকের শূন্যপদে নিয়োগে চাকরি চেয়ে শুক্রবার প্রায় দেড় হাজার আবেদন জমা পড়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। এরপর  জরুরি আবেদনের ভিত্তিতে মামলা শোনার আর্জি গ্রহণ করেছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। আগামী মঙ্গলবার মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের এজলাসে। এখানেই শেষ নয়, আদালত সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, একই আবেদন নিয়ে আরও দু’ হাজার টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী আদালতের দ্বারস্থ হতে চলছেন। ফলে মোট মামলার সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। যেখানে শূন্যপদ মাত্র ৩৯২৯। তার চেয়ে মামলাকারীর সংখ্যা অনেক বেশি হবে। তাই এত জনকে কীভাবে চাকরি দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তবে কী ধারাবাহিক জট জটিলতার কারণেই থমকে যাবে চাকরির প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবন? এর উত্তর খুঁজছেন সবাই।

২০১৪ সালের টেটের প্রেক্ষিতে দুটি নিয়োগ প্রক্রিয়া সংগঠিত হয়। একটি ২০১৬ সালে, যেখানে ৪২০০০ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে বলে আদালতে জানায় পর্ষদ। অপরটি হয় ২০২০ সালে, যেখানে ১৬৫০০ শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল। তবে ঠিক কত শূন্যপদ রয়েছে, তা নিয়েই জটিলতা রয়েছে। অভিযোগ, নিয়োগ সংক্রান্ত একাধিক মামলায়, মামলা দায়েরের আগে তথ্য জানার আইনে শূন্যপদের সংখ্যা জানতে চেয়েছিলেন মামলাকারীরা। সেখানে মামলাকারীদের এক রকম তথ্য দেয় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। আবার এই সংক্রান্ত একাধিক মামলায় আদালতে অন্যরকম তথ্য দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। মামলায় বোর্ডের সভাপতিকে মামলাকারীদের সঙ্গে বসে শূন্যপদের সঠিক পরিসংখ্যানও দিতে বলেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে শূন্যপদে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ ছিল আদালতের। সেই মতোই বিজ্ঞপ্তি জারি করে পর্ষদ। তার পরই হয়েছে একাধিক মামলা।

এদিকে একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, ২০১৪ সালের টেট-এর ভিত্তিতে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর ৮২ হাজার টেট-উত্তীর্ণ প্রার্থী রয়ে যান। তার মধ্যে ২০২০ সালে ১২ হাজারের কিছু বেশি টেট-উত্তীর্ণকে চাকরি দেওয়া হয়। ফলে এখন প্রায় ৬০ হাজারের কাছাকাছি টেট-উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে মামলা দায়েরের পর সবাইকে কীভাবে চাকরি দেওয়া হবে তা নিয়ে চিন্তায় চাকরিপ্রার্থীরা। যদিও বিষয়টি নিয়ে পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতের নির্দেশ মতো মেধা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে এগিয়ে থাকা প্রার্থীদের চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হবে। অর্থাৎ এটা স্পষ্ট কিছুতেই জট জটিলতা কাটছে না নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে। ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়ে চলেছে। এই জায়গা থেকে কবে বা কীভাবে সমাধান সূত্র বের হয়ে আসবে সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − 13 =