কোনও চাকরিই আর স্থায়ী নয়! বিরোধীশূন্য সংসদে ৩টি শ্রম বিল পাস কেন্দ্রের

কোনও চাকরিই আর স্থায়ী নয়! বিরোধীশূন্য সংসদে ৩টি শ্রম বিল পাস কেন্দ্রের

নয়াদিল্লি:  বিরোধীশূন্য রাজ্যসভার অধিবেশনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ৭টি বিল পাস করিয়ে মঙ্গলবার পাস করিয়ে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার৷ এবার বুধবার বিরোধীশূন্য সংসদ অভিবেশনে রাজ্যসভায় পাস ৩টি শ্রম বিল৷ কেন্দ্রের শ্রম আইন পাস হয়ে গেলেই বেসরকারি সংস্থা কর্মী ছাঁটাইয়ে ঢালাও অনুমতি পাবে৷ এছাড়াও সরকারি চাকরিতে আর কোনও ভাবেই স্থায়ী নিয়োগ হবে না৷ চুক্তির ভিত্তিতে এবার থেকে কেন্দ্রীয় সরকারি পদে নিয়োগের পথ আরও প্রশস্ত হয়ে যাবে৷ কোনও চাকরিই আর স্থায়ী হবে না৷

আজ বিরোধীশূন্য অধিবেশনে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস কোড ২০২০, অকুপেশনাল সেফটি, হেলথ অ্যান্ড ওয়ার্কিং কন্ডিশনস কোড ২০২০ ও কোড অন সোশ্যাল সিকিউরিটি ২০২০ বিল পাস করিয়ে নেয় কেন্দ্র৷ সংসদে পাস হাওয়ার পর ওই ৩ বিলে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সই করলেই তা আইনে পরিণত হয়ে যাবে৷ কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ারের দাবি, এই বিল কর্মীদের ‌সুরক্ষিত কাজের পরিবেশ তৈরি করে দেবে৷ আইনে শ্রম নীতিতে সংস্কার আসবে৷

এর তিনটি বিলের মধ্যে রয়েছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশনস কোড ২০২০৷  তাতে সাফ জানিয়ে দেওয়া আছে, বেসরকারি সংস্থাগুলি সরকারের অনুমতি ছাড়া কর্মীদের ছাঁটাই করতে পারবে৷ আগে ১০০ জনের কম কর্মী থাকা সংস্থাগুলি অনুমতি ছাড়া ছাঁটাই করতে পারত৷ কিন্তু, এখন কেন্দ্রের তরফে সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০০ করা হয়েছে৷ অর্থাৎ ৩০০ জনের কম কর্মী থাকা সংস্থা সরকারের অনুমতি ছাড়া কর্মী ছাঁটাই বা ক্লোজার করতে পাবনে৷ নতুন বিলে ‘মাস ক্যাজুয়াল লিভ’কেও শাস্তি হবে ধার্য করা হয়েছে৷ অর্থাৎ ধর্মঘট করা যাবে না৷ ধর্মঘট করলে গণহারে চড়া জরিমানা ও শাস্তি দিতে পারবে সংস্থা৷

অন্যদিকে, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল রিলেশনস ২০২০ বিলে জানানো হয়েছে, এবার আর স্থায়ী চাকরি বলে কিছু থাকবে না৷ যা হবে সব চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ৷ নতুন শ্রম বিধিতে চুক্তিভিত্তিক চাকরির উপর সব থেকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে৷ আর তার ফলে কর্মী ছাঁটাই করতে সরকারি কিংবা বেসরকারি কোন প্রতিষ্ঠান আর কোন বাধ্যবাধকতা থাকবে না৷ সারা দেশে স্থায়ী চাকরির পরিবর্তে চুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট মেয়াদের নিয়োগ হবে৷ যার মেয়াদ থাকবে তিন থেকে ছমাস৷ এতদিন সরকারি ও বেসরকারি, সবক্ষেত্রেই অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হত৷ কিন্তু, নয়া ব্যবস্থায় ঠিকাদারের সংস্থার পরিবর্তে চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করতে পারবে সরকার ও বেসরকারি সংস্থা৷

এই নয়া বিধি যদি কার্যকর করা হয়, তাহলে দেশে কর্মসংস্থানের সুদুরপ্রসারী প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে৷ কারণ স্থায়ী চাকরির জন্য বহু পরিশ্রম করেন চাকরিপ্রার্থীরা৷ সে বেসরকারি ক্ষেত্রে হোক কিংবা সরকারি৷ এবার যদি সরকারি চাকরিতে স্থায়ী ব্যবস্থা উঠে যায়, তাহলে অর্থনৈতিকভাবে চূড়ান্ত সঙ্কটে পড়তে পারে দেশের জনতা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − 5 =