কলকাতা: রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের অস্থায়ী কর্মীদের 'সমকাজে সমবেতনে'র দীর্ঘদিনের দাবি এবার পূরণ হতে চলেছে। গত মঙ্গলবার এই প্রক্রিয়া কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। নির্দেশিকা অনুসারে চলতি বছর থেকে রিভিশন অফ পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্স রুল ২০১৯-এর অধীনে রাজ্য সরকারের স্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে সমহারে বেতন পাবেন সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে ওই একই পদে নিযুক্ত অস্থায়ী কর্মচারীরাও।
তবে সংশোধিত বেতন ক্রম অনুসারে বেতন কাঠামো ও বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে তাদের অনলাইনে কোনো অপশন ফর্ম ফিলাপ করতে হবে না। লিখিত আকারে দেওয়া ফর্ম ফিলাপ করে জমা দিতে হবে। অর্থাৎ, তাঁরা অফলাইনে ফর্ম ফিলাপ করতে পারবেন। ফরম ফিলাপ থেকে বেতন নির্ধারণ পুরো প্রক্রিয়াটি অফলাইনেই হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অধিকর্তা অফলাইন মোডেই তাদের বেতন সংশোধন করবেন এবং ডিডিও-রা দ্রুত ইন্টিগ্রেটেড ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর এইচআরএমএস মডিউলে এমপ্লয়িজ মাস্টার-এ প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করে সংশোধিত কাঠামো অনুসারে বেতন নিশ্চিত করবেন।
গত বছর সেপ্টেম্বরে একটি নির্দেশিকায় সম কাজে সম বেতন-এর ইঙ্গিত দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৬ সালের সম কাজে সম বেতন সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে কার্যকর করার লক্ষ্যেই ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯-এ কেন্দ্রীয় পার্সোনেল, পিজি ও পেনশন মন্ত্রক থেকে ওই নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়। নির্দেশিকায় বলা হয়, সরকারি যে সমস্ত সংস্থা সরাসরি কোনও পদে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করেছে, তাঁদের সমপদে স্থায়ী কর্মীদের একদিনের সমতুল্য হারে বেতন দিতে হবে। অবশ্য স্থায়ী কর্মীরা অন্যান্য যে সব ভাতা পান, সেই সুযোগ অস্থায়ী কর্মীরা পাবেন না বলেও উল্লেখ করা হয় । অন্য কোনও সংস্থা বা কন্ট্রাক্টরদের মাধ্যমে কোনও সরকারি সংস্থায় কেউ নিযুক্ত হলে সেই কর্মীরাও এই সুযোগ পাবেন না বলেও উল্লেখ করা হয় ওই নির্দেশিকায়।
২০১৬-এ সু্প্রিম কোর্টের রায়ে বলা হয়েছিল যে,সম কাজে সম বেতন দেওয়া না হলে তা বিভাজন তৈরি করতে পারে। রায় দেওয়ার সময় ওই চুক্তির শর্তগুলিকেও উল্লেখ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৯৩ সালে এই সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক চুক্তিতেও স্বাক্ষর করেছিল ভারত সরকার। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর থেকেই সরকারের কাছে সম কাজে সম বেতনের দাবিতে সংগঠিতভাবে সোচ্চার হয় সরকারি নানা সংস্থায় কর্মরত অস্থায়ী কর্মীরা।