কলকাতা: দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান৷ চার বছর পর ফের শুরু হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ‘টেট’ পরীক্ষা৷ আগামী ডিসেম্বর মাসে পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সূত্রের খবর৷
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা বোর্ডের ২০১৭ সালে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া হবে৷ সূত্রের খবর, কয়েকদিনের মধ্যে খোলা হবে রেজিস্ট্রেশন পোর্টাল৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘গোটা রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন স্কুল মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ করা হবে৷ সরকারের অনুমোদন পাওয়ার পর পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে৷’’ এবার থেকে পরীক্ষায় পাশ করলেও থাকতে হবে প্রাথমিক শিক্ষকের ট্রেনিং৷ তা না হলে প্রার্থীকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে৷
২০১৩ সালে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ প্রার্থী টেট পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছিলেন৷ এরপর ২০১৫ সালে এই রাজ্যে টেট বা টিচার্স এলিজিবিলিটি টেস্ট বা টেট নেওয়া হয়৷ সেবছর কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষক নিয়োগের জন্য যথাযথ যোগ্যতার নিয়মাবলির সংশোধন করেছিল৷ তাই পরীক্ষায় পাশ করলেও প্রাথমিক শিক্ষকের প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে বহু প্রার্থীকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল৷ ৪০হাজার শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল সেবছর৷
আজ থেকে ঠিক দু’বছর আগে ২০১৭ সালের অক্টবরে আরও একবার টেটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলেও শূন্যপদ বা পরীক্ষার সময়সূচি জানানো হয়নি৷ এনিয়ে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের হয়৷ আদালতের হস্তক্ষেপের পরও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি৷ এরপর মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে টেট পরীক্ষার দিনক্ষণ প্রকাশের দাবিতে দায়ের হওয়ার মামলার শুনানিতে পর্ষদকে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত৷
সেবছর ১৮ জুন টেট মামলার শুনানিতে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, পরীক্ষার না নেওয়ার কারণ জানিয়ে ২৭ জুনের মধ্যে আদালতকে রিপোর্ট জমা করতে৷ অভিযোগ, সেই রিপোর্ট জমা হলেও প্রকাশিত হয়নি টেট পরীক্ষার দিনক্ষণ৷ সেদিন টেট মামলার শুনানিতে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, গরিব ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে পরীক্ষার ফি বাবদ কোটি কোটি টাকা তুলে এখনও কেন টেট পরীক্ষা নেওয়া হয়নি? বিষয়টি রিপোর্ট আকারে জানাতেও নির্দেশ দেন বিচারপতি৷ ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন বা এনসিটিইর নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রতি বছরই রাজ্য সরকারের টেট নেওয়ার কথা থাকলেও ২০১৬, ২০১৭ সালে টেট হয়নি৷ এর আগে রাজ্যে যে দু’টি টেট পরীক্ষা নেওয়া হয়৷ সেখানে পরীক্ষায় বসেন ৩৪ লক্ষ পরীক্ষার্থী৷ ৪৩ হাজার শূন্যপদে নিয়োগও হলেও সেখানেও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল৷