কলকাতা: দীর্ঘ আন্দোলনের পর অবশেষে মিলল সাফল্য। অনলাইনে স্টাফ প্যাটার্ন সংক্রান্ত শিক্ষক বিদ্রোহের মুখে পড়ে অবশেষে নিজেদের অবস্থান শক্ত করল রাজ্য সরকার। রাজ্যের শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের দাবি মেনে অনলাইন স্টাফ প্যাটার্ন প্রক্রিয়ায় ধোঁয়াশা কাটাতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর৷ এই মর্মে জারি হয়েছে বিজ্ঞপ্তি৷
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নরমাল সেকশন টিচারদের হয় উচ্চ প্রাথমিক নাহলে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকতা করতে পারবেন৷ সেক্ষেত্রে উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষকশিক্ষিকাদের ভূমিকা ও দায়িত্ব অপরিবর্তিত থাকবে৷ পুনর্নিমিত এই স্টাফ প্যাটার্নে পে-স্কেল ও অন্যান্য শর্তাবলীর ওপর কোনও প্রভাব পড়বে না৷ উপযুক্ত যোগ্যতার নিরিখে যেকোনও শিক্ষক শিক্ষিকা প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকা পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন৷ প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে এই ওয়েব এনামেল স্টাফ প্যাটার্ন কার্যকর করতে হবে৷
তাদের দাবি মেনে শিক্ষা দপ্তর দ্রুত এই বিজ্ঞপ্তি জারি করার জন্য স্বভাবতই খুশি মাধ্যমিক শিক্ষকও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র এক বার্তায় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা দপ্তরের মুখ্য সচিব অনলাইন স্টাফ পাটান ক্লারিফিকেশন সংক্রান্ত যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছেন আমরা তাকে স্বাগত জানাচ্ছি৷ তিনি বলেন গত একমাস ধরে তাদের সমিতির পক্ষ থেকে জেলায় জেলায় ডি আই মারফত এবং শিক্ষা দপ্তরের শিক্ষামন্ত্রীও মুখ্য সচিবের কাছে ডেপুটেশনের মাধ্যমে যে আন্দোলন হয়েছে এটা তারই ফলশ্রুতি৷ এটা রাজ্যের শিক্ষক শিক্ষা কর্মীদের আন্দোলনের জয়৷ আমরা রাজ্য শিক্ষা দপ্তরে জানিয়েছিলাম ওয়েব এনাবেল সটাফ প্যাটার্ন এ যে সমস্যাগুলি হচ্ছে তা সমাধান করে দ্রুত একটি মেমো সরকারিভাবে জারি করার জন্য৷ তা নাহলে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নানান আশঙ্কা ও আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন তার প্রতিবাদে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে আমরা বাধ্য থাকব৷’’
এই প্রসঙ্গে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানিয়েছেন, ‘‘যথাযথ ক্লারিফিকেশন না দিয়ে স্টাফ প্যাটার্ণ দাখিলের জন্য বিদ্যালয় গুলিতে নির্দেশিকা জারি করেছিল স্কুল শিক্ষা দপ্তর৷ তার ভিত্তিতে সারা রাজ্য জুড়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়৷ আমরা শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের পক্ষ থেকে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর এবং বিভিন্ন জেলার শিক্ষা দপ্তরে প্রতিবাদ জানিয়ে ডেপুটেশন দিয়েছিলাম এবং সারা রাজ্য জুড়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম যথাযথ ক্লারিফিকেশন না দিলে যেন স্টাফ প্যাটার্ণ দাখিল না করা হয়৷ সারা রাজ্যে তার প্রভাব পড়ে এবং স্টাফ প্যাটার্ণ দাখিলের প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে৷ শেষ পর্যন্ত শিক্ষা দপ্তর বাধ্য হয়ে আজ নতুনভাবে এ বিষয়ে ক্লারিফিকেশন দিল৷ এটি সারা রাজ্য জুড়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতিবাদের ফল৷ আমাদের দাবি মেনে নেওয়ায় শিক্ষা দপ্তরকে অভিনন্দন জানাচ্ছি৷ আর সারা রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলনে পাশে থাকবার জন্য রাজ্যের সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাকেও অভিনন্দন জানাই৷’’