নিউ ইয়র্ক: করোনা ঝড়ে দিশেহারা বিশ্ব অর্থনীতি৷ দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে গোটা বিশ্বের বাজার, ব্যবসা-বাণিজ্য, কর্মক্ষেত্র, সর্বোত্র প্রভাব ফেলেছে মারণ করোনাভাইরাস৷ বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আমেরিকার অর্থনীতি৷ দিন দিন বাড়ছে বেকারত্বের হার৷ চলতি সপ্তাহে চাকরির পরিসংখ্যান নিয়ে বিশ্লেষকরা যা জানালেন, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো৷
মার্কিন শ্রমদফতরের তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র চলতি সপ্তাহেই ৭ লক্ষেরও বেশি মানুষের চাকরি গিয়েছে৷ গত এক মাসের মধ্যে আমেরিকায় বেকারত্বের হার ৩.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪.৪ শতাংশ হয়েছে। চাকরির এই বেহাল দশা শুধুমাত্র একটা সপ্তাহের ঘটনা নয়৷ মার্চের গোড়া থেকেই শুরু হয়েছে দুর্দিন৷ যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ সম্পূর্ণরূপে গ্রাস করেনি আমেরিকাকে৷
বেকারত্বের পরিসংখ্যান দেখে মাথায় হাত পড়েছে৷ মার্কিন শ্রম দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহে বেকার ভাতার জন্য আবেদন জানিয়েছেন ১ কোটি আমেরিকান৷ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বেকারের সংখ্যা৷ ২০০৯ সালের পর থেকে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি ওয়াশিংটন৷ বাণিজ্যিক কাজকর্ম প্রায় সবই বন্ধ রয়েছে আমেরিকায়। গাড়ির কোম্পানি, রেস্তরাঁ, হোটেল, জিম, সিনেমা হলের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো কর্মী ছাঁটাই করছে৷ ফলে এই বছর যেখানে আমেরিকার বেকারত্বের হার ছিল সর্বনিম্ন, করোনার ধাক্কায় সম্পূর্ণ বদলে গেল সেই চিত্র। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার জানিয়েছে, এটি আমেরিকার ইতিহাসের রেকর্ড। অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এপ্রিলের শেষে বেকারের সংখ্যা প্রায় দু’কোটি হতে পারে৷
আমেরিকার মতো কঠিন পরিস্থিতিতে রয়েছে ইউরোপও৷ যদিও এখানকার কর্মীরা সাময়িকভাবে কাজ হারাতে চলেছেন৷ কারণ, সম্পূর্ণ না হলেও, কর্মীদের অর্ধেক বেতন দিচ্ছে সরকার৷ গত দুই সপ্তাহে ফ্রান্সের প্রায় ৪০ লক্ষ কর্মীকে অস্থায়ীভাবে ছাঁটাই করা হয়েছে৷ স্পেনে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ৮ লক্ষ মানুষ৷ যা সে দেশের ইতিহাসে প্রথম৷ ব্রিটেনের হালও প্রায় এক৷ কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার কমতে শুরু করেছে৷ ঋণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন ব্রিটেনের প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ৷