৯০ বছরের পরম্পরা বাঁচিয়ে দেশের IAS-দের অন্ন যোগাচ্ছে ‘গঙ্গা ধাবা’

আজ বিকেল: চা, আপামর ভারতীয়র কাছে এই পানীয়র গুরুত্ব অপরিসীম চিন্তা দূর করতে হোক বা উন্তেজনা কাটাতে চা ভিন্ন কারোর গতি নেই। পড়াশোনার ফাঁকে মাথা ধরলে এক কাপ চায়েই নিজেকে সতেজ করে নিন। আরও একটু এগিয়ে ভাবতে হলে যাঁরা ছাত্রজীবনে হস্টেলে কাটিয়েছেন,তাঁদের কাছে চা তো বন্ধুর মতো। একাকীত্বে কিম্বা আড্ডায় চা মহান। ছাত্রজীবনে চা খাওয়া

৯০ বছরের পরম্পরা বাঁচিয়ে দেশের IAS-দের অন্ন যোগাচ্ছে ‘গঙ্গা ধাবা’

আজ বিকেল: চা, আপামর ভারতীয়র কাছে এই পানীয়র গুরুত্ব অপরিসীম চিন্তা দূর করতে হোক বা উন্তেজনা কাটাতে চা ভিন্ন কারোর গতি নেই। পড়াশোনার ফাঁকে মাথা ধরলে এক কাপ চায়েই নিজেকে সতেজ করে নিন। আরও একটু এগিয়ে ভাবতে হলে যাঁরা ছাত্রজীবনে হস্টেলে কাটিয়েছেন,তাঁদের কাছে চা তো বন্ধুর মতো। একাকীত্বে কিম্বা আড্ডায় চা মহান। ছাত্রজীবনে চা খাওয়া যেখান থেকে শুরু সেই জায়গার নাম প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরে অনেক নামী সরকারি কর্তাব্যক্তি তা ভুলতে পারেন না। নিজের প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চায়ের সেই ছোট্ট দোকানটির স্মৃতিচারণও কতো মধুর যাঁরা এভাবে ছাত্রজীবন কাটিয়ে এসেছেন তাঁরাই শুধু মনে করতে পারবেন।

৯০ বছরের পরম্পরা বাঁচিয়ে দেশের IAS-দের অন্ন যোগাচ্ছে ‘গঙ্গা ধাবা’হিমাচলের লালবাহাদুর শাস্ত্রী জাতীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম সকলেরই প্রায় জানা, আর যাঁরা সিভিল সার্ভিস উত্তীর্ণ তাঁদের স্মৃতিতে তো উজ্জ্বল হয়ে আছে দেশের অন্যতম এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। যাঁরাই আইএএস, আইপিএস হয়েছেন তাঁদের প্রায় সকলকেই কর্মজীবনে যোগ দেওয়ার আগে মুসৌরির এই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গেই আড়ে বহড়ে এবং অভিজ্ঞতায় বেড়ে উঠেছে সেদিনের ওম চাইনিজ রেস্টুব়্যান্ট থুড়ি আজকের গঙ্গা ধাবা। হ্যাঁ দেখতে দেখতে ৯০টি বছর চালিয়ে ব্যাটিং করে ফেলল দেশের মেধাবী ও সফল ছাত্রদের চা জলখাবারের প্রিয় দোকান। ১০ বছর বয়সে সেই দোকানের হাল ধরেছিলেন দীপক গর্গ সালটা ১৯৭৮, এরপর যত ঝড়ঝাপটা আসুক না কেন সেদিন ওম চাইনিজ রেস্টুব়্যান্টকেই উপার্জনের একমাত্র রাস্তা ধরে নিয়েছিলেন। হতাশ হননি বলেই ৬৫ বছর বয়সেও সমানে প্রিয় হোটেল চালিয়ে যাচ্ছে শুধু খরিদ্দারদের ভালবাসার কথা মাথায় রেখে দোকানের নতুন নামকরণ হয়েছে গঙ্গা ধাবা।

৯০ বছরের পরম্পরা বাঁচিয়ে দেশের IAS-দের অন্ন যোগাচ্ছে ‘গঙ্গা ধাবা’মজার বিষয় হল ৯০ বছর কাটিয়ে আজ অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ আইএএস ছাত্রদের প্রিয় এই গঙ্গা ধাবা। সাতের দশকে যখন চিনে খাবার সবে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে তখনই কিশোর দীপক তাঁর ধাবার মেনুতে চিলি চিকেন,থেকে গ্রেভি নুডুলস কোনও কিছুই বাদ দেননি। জনপ্রিতাও বেড়েছে ধাপে ধাপে, অ্যাকাডেমির ছাত্রা চা খেতে হলেও চৌহদ্দির বাইরের এই গঙ্গা ধাবাতেই আসতেন,এখনও সেই ছবির কোনও বদল হয়নি। সেইসময় মোবাইল ফোন আসেনি,দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ছাত্ররা বেশ কিছুদিনের জন্য পাহাড়ের কোলের এই অ্যাকাডেমিকেই তাঁদের আশ্রয় করে নেন। তাঁদের প্রত্যেকের কথা মাথায় রেখে দীপকবাবু পিসিও তৈরি করেন,যাতে বাড়ি ছেড়ে এসে পরিজনদের সঙ্গে ছাত্ররা কথা বলারসুযোগ পান। এই পিসিও অল্পদিনের মধ্যেই জনপ্রিয়তা পেলে বেশকয়েকটি নতুন ল্যান্ডলাইন কানেকশন নেন ধাবা মালিক, প্রত্যেকটি ফোনের জন্যই কাচের পৃথক ঘর বানিয়ে বড়সড় টেলিফোন বুথ তৈরি করা হয়। খাবার খেতে এসে সুন্দর ব্যবহার ও ফোনে কথা বলার সুযোগ পেয়ে ছাত্ররা বিদেশ বিভুঁইয়ে স্বস্তি বোধ করেন৷

৯০ বছরের পরম্পরা বাঁচিয়ে দেশের IAS-দের অন্ন যোগাচ্ছে ‘গঙ্গা ধাবা’দেখতে দেখতে একটা সময় প্রশিক্ষণ শেষ হয়, সরকারি আধিকারিকের তকমা নিয়ে প্রত্যেকেই ফিরে যান, কিন্তু ফের যখন তাঁদের সন্তানরা প্রশিক্ষণ নিতে আসেন তখন এই গঙ্গা ধাবাতেই ছেলেমেয়েদের দেভালের আশ্বাস পেয়ে যান। চৌহদ্দির বাইরে হলেও ন্যাশনাল অ্যাকাডেমির সঙ্গে গঙ্গা ধাবার সম্পর্ক একদম অটুট, একেবারে আত্মার আত্মীয়। পরস্পর পরস্পরের পরিপূরক।গঙ্গার কাছেই দীপকবাবুর হোটেল, ফোনে কথা বলার সময় পরিজনদের কাছে ছাত্রা একে গঙ্গা ধাবা নামেই উল্লেখ করতেন। তাই নাম পরিবর্তনের জন্য দ্বিতীয়বার ভাবেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + three =