বন সহায়ক পদের ইন্টারভিউয়ে হেসে লুটোপুটি খেলেন প্রশ্নকর্তা, উল্টে প্রার্থী করলেন প্রশ্ন

বন সহায়ক পদের ইন্টারভিউয়ে হেসে লুটোপুটি খেলেন প্রশ্নকর্তা, উল্টে প্রার্থী করলেন প্রশ্ন

তমলুক: আবেদনের যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি পাস, অথচ আবেদন জমা পড়েছে গবেষকদেরও। কাজ, হাতি তাড়ানো৷ কখনও কখনও বনভূমির পাহারা দেওয়া৷ তবে, তাও চুক্তিভিত্তিক৷ বেতন মেরেকেটে ১০ হাজার টাকা৷ ২৩ জেলায় কমপক্ষে ২০ লক্ষের বেশি অবেদন জমা পড়েছে৷ সেই আবেদনের ভিত্তিতে রাজ্যে বনসহায়ক পদে নিয়োগের জন্য চলছে ইন্টারভিউ৷ কিন্তু, সেই ইন্টারভিউয়ে চাকরিপ্রার্থীর জবাব শুনে কার্যত চোখ কপালে উঠেছে  প্রশ্নকর্তার বন আধিকারিকদের৷

কাজ যেহেতু হাতি তাড়ানো কিংবা বনভূমির পাহারা দেওয়া, ফলে পদ অনুযায়ী চাকরিপ্রার্থীকে করা হয়েছিল খুব সাধারণ প্রশ্ন৷ বনসহায়ক পদে নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে এক চাকরিপ্রার্থীর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, বাড়িতে বিষধর সাপ ঢুকলে কী করবেন? চাকরিপ্রার্থীকে করা প্রশ্নের উত্তর শুনে ভিমড়ি খাওয়া অবস্থা বনকর্তাদের৷  ইন্টারভিউ বোর্ডের আধিকারিকদের চমকে চাকরিপ্রার্থী জবাব, ‘বাড়িতে সাপ ঢুকলে হিসহিস আওয়াজ করব৷ তাতেও না বের হলে লাঠি দিয়ে মেরে ফেলব৷’’

চাকরিপ্রার্থীর এহেন জবাবে বিস্মিত প্রশ্নকর্তার৷ ফের জানতে চান, ‘মেরে ফেলবেন? কেন, বন দফতরে খবর দেবেন না?’ পাল্টা প্রশ্নের জবাব দিতে বিন্দুমাত্র সময় দেননি ওই চাকরিপ্রার্থী৷ সপাটে তাঁর জবাব, ‘‘স্যার, যতক্ষণে বন দফতরের লোক আসবে, ততক্ষণে সাপকে যমের দুয়ারে পাঠিয়ে দেবে৷’’ পূর্ব মেদিনীপুরে জেলায় বন সহায়ক পদের ইন্টারভিউয়ে প্রার্থীর জবাব শুনে বিস্মিত প্রশ্নকর্তা৷

জানা গিয়েছে, গত ৫ অক্টোবর থেকে তমলুকের নিমতৌড়িতে বন দফতরের নবনির্মিত অফিসে শুরু হয়েছে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া৷ দিনে প্রায় ৪০০ আবেদনকারীকে ফোন করে ইন্টারভিউয়ে ডাকা হচ্ছে৷ আসছেন দু’শো-তিনশো প্রার্থী৷ কিন্তু, তাঁদের অধিকাংশের ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছেন দফতরের আধিকারিকরা৷ ইন্টারভিউয়ে এক প্রার্থীর কাছে জানতে চাওয়া হয় দু’টি বন্যপ্রাণীর নাম৷ উত্তরে চাকরিপ্রার্থী সাফ জানান, ‘কেন, গোরু ও মোষ!’ জবাবে প্রশ্নকর্তা পাল্টা প্রশ্ন করেন৷ বলেন, ‘গোরু, মোষ বন্যপ্রাণী?’ ভুল শুধরে প্রার্থীর জবাব বলেন, ‘‘ও আচ্ছা, আচ্ছা! বন্যপ্রাণী? তাহলে বন্য গোরু ও বন্য মোষ৷’’ উত্তর শুনে হো হো করে হেসে ফেলেন প্রশ্নকর্তারা৷ বলেন, ‘বন্য গোরু, বন্য মোষ বলে কিছু হয়?’ জবাবে প্রার্থীর উল্টে প্রশ্নকর্তাকে প্রশ্ন ছুড়ে জানান, ‘‘কেন স্যার, বনে ঘুরে বেড়ানো গোরু-মোষকে বন্য বলা যায় না?’’

পূর্ব মেদিনীপুরে বন সহায়ক পদের সংখ্যা মাত্র ১০টি৷ আবেদন জমা পড়েছে ১৮ হাজার৷ গত ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া৷ দু’মাস ধরে চলবে এই ইন্টারভিউ৷ গত দু’সপ্তাহে ইন্টারভিউয়ে বহু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন বোর্ডে হাজির বন দফতরের অফিসাররা৷ বহু প্রশ্নে হাসি চেপে রাখতে পারেননি তাঁরা৷ আবার কারও কারও উত্তর শুনে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন প্রশ্নকর্তারা৷ আগামী দিনগুলিকে কী কী জবাব তাঁদের শুনতে হবে, তা ভেবে বিস্মিত প্রশ্নকর্তার৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + 6 =