অবশেষে শিক্ষকদের জন্য কার্যকর নয়া DA, নেটপাড়ায় ভাইরাল ‘নির্দেশ’!

অবশেষে শিক্ষকদের জন্য কার্যকর নয়া DA, নেটপাড়ায় ভাইরাল ‘নির্দেশ’!

কলকাতা: রাজ্যের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের জন্য খুশির খবর! শিক্ষকদের জন্য সংশোধিত হারে মহার্য ভাতার ‘নির্দেশ’ ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল নয়া ‘বিজ্ঞপ্তি’৷

চলতি সপ্তাহে রাজ্যের সোশ্যাল মিডিয়ায় ডেপুটি সেক্রেটারির দেওয়া শিক্ষা দপ্তরের একটি নির্দেশ ভাইরাল হয়৷ সেখানে জানানো হয়, পয়লা জানুয়ারি ২০১৯ থেকে মাধ্যমিক স্কুলের পূর্ণ সময়ের শিক্ষকদের মহার্ঘ ভাতা কার্যকরের নির্দেশ দেন৷ ভাইরাল ওই নির্দেশে জানানো হয়, ‘‘এই রাজ্যে যেসব মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষকদের বেতন রোপা ২০০৯ অনুসারে ধার্য হয়েছে, তারা পয়লা জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ১২৫ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন৷ যাঁরা নতুন হারে বেতনক্রমের আওতাভূক্ত হলেন, তাঁরা রোপা ১৯৯৮ অনুসারে ২৫,৪০০ বেতনক্রমের মধ্যে থাকা শিক্ষকেরা ২১৩ শতাংশ হারে ডিয়ারনেস অ্যালাউন্স বা মহার্ঘ ভাতা পাবেন৷ যার সুফল পাওয়া যাবে ১লা জানুয়ারি ২০১৯ থেকে৷  রাজ্যপাল জানিয়েছেন, মহার্ঘ ভাতার অতিরিক্ত কিস্তি প্রতি মাসের বেতন সাথে যোগ করে দেওয়া হবে৷’’

কিন্তু, বিজ্ঞপ্তির তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০২০ উল্লেখ করা হলেও বিজ্ঞপ্তি মূল বিষয়বস্তু ছিল পুরোপুরি ২০১৯ সালের ভিত্তিতে৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় এহেন ‘বিজ্ঞপ্তি’ ঘিরে শিক্ষক মহলে ছড়িয়ে পড়ে বিভ্রান্তি৷ পরে, ‘বিজ্ঞপ্তি’ খতিয়ে দেখা জানা গিয়েছে, গত বছরের বিজ্ঞপ্তির সাল কোনও ভাবে ‘পরিবর্তন’ করে চলতি বছরের জন্য চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে নেট দুনিয়ায়৷ ফলে, এহেন ভুয় বিজ্ঞপ্তি দেখে বিভ্রান্ত হবে না, আর্জি শিক্ষকদের একাংশের৷

কেননা, বকেয়া মহার্ঘ ভাতার মামলার শুনানি চলছে স্যাটে৷ মামলার শুনানি প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান আইনজীবী মহম্মদ আমজাদ আলি জানিয়েছেন, ২৬ জুলাই ২০১৯ সালে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী পরিষদ পরিষদের পক্ষ থেকে কনফেডারেশন অব স্টেট গভঃ এমপ্লয়িজের মহার্ঘ ভাতা মামলা রায় ঘোষণা করে রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল৷ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হচ্ছে না৷ এই মামলায় রাজ্য প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল চূড়ান্ত রায় দিয়েছিল গত ২৬ জুলাই৷ সেই রায়ের ট্রাইবুনাল বলেছিল, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার আগে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতা  দিতে হবে অর্থাৎ নতুন পে কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করার আগে৷ কিসের ভিত্তিতে এই মহার্ঘ ভাতা দিতে হবে প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল তাদের রায়ে উল্লেখ করে দিয়েছিল৷

কিন্তু, দুর্ভাগ্যক্রমে রাজ্য সরকার সেই নির্দেশ কার্যকর করা তো দূরের কথা, কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি৷ রাজ্য সরকার ও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য দেওয়া হয়নি৷ এরফলে কনফেডারেশন স্যাটের রায় পালন না করার জন্য আদালত অবমাননার দায়ে করে৷ অন্যদিকে রাজ্য সরকার স্যাটের রায় পুনর্বিবেচনা করার জন্য একটি এপ্লিকেশন ফাইল করে৷ সেই দুটো আবেদন শুনানি চলছে আদালতে৷

রাজ্য সরকারের তরফে শেষ শুনানিতে স্যাটের রায় পুনর্বিবেচনা করার কারণ উল্লেখ করে জানায়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা পাওয়ার বিষয়টি আইনগত কোন অধিকার নেই৷ দ্বিতীয়ত, রাজ্য সরকারের আর্থিক ক্ষমতা নেই সেটা মিটিয়ে দেওয়ার৷ তৃতীয়তঃ, প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল তাদের রায় দেওয়ার সময় কিছু আইন বিবেচনা করেনি৷ ফলে, রায় পুনর্বিবেচনা করা হোক৷

এর পাল্টা সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে কনফিগারেশনের পক্ষে আইনজীবী আমজাদআলি তার তীব্র বিরোধীতা করেন৷ রাজ্যের আইনজীবিদের তোলা সমস্ত প্রশ্নের জবাব দেন তিনি৷ জানান, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ভাতা না দিয়ে বিষয়টি নিয়ে শুধুশুধু আইনি জটিলতার মধ্যে ফেলা হচ্ছে৷ দীর্ঘ সময় কাটানোর চেষ্টা করছে রাজ্য৷ কারণ, রাজ্যের তিনটি আপত্তির মধ্যে দু’টি আপত্তি নিয়ে আগেই শুানানি হয়েছে৷ ফলে, একই বিষয় দ্বিতীয়বার তুলে সময় কেনার চেষ্টা চলছে৷ কর্মচারী সংগঠনের আইনজীবী বলেন, ‘‘সরকারের এই পদক্ষেপ রীতিমতো হয়রানিমূলক৷ বেআইনি এবং রিভিউ করার যে আইনগত নীতি আছে সেই নীতি বিরোধী৷’’ সব পক্ষের সওয়াল শোনার পর ট্রাইব্যুনাল বেশ কিছুয়া সময় চেয়ে নিয়েছে৷ আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 3 =