কলকাতা: গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৬০ হাজার গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ করবে সরকার, এমনই ঘোষণা করেছিলেন। কার্যক্ষেত্রে মাত্র ৬ হাজার কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বেরলেও ৫৪২২ জন নিয়োগ করেছিল রাজ্য সরকার। বিজ্ঞপ্তি অনুসারে শূন্যপদ খালি থাকা সত্ত্বেও ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়নি। একাধিক ডেপুটেশন দিয়েও কোনও সদুত্তর পাননি তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা? ওয়েটিং লিস্টে থাকা ১০০০ প্রার্থীদের যাতে নিয়োগ করা হয়, সেই আবেদন জানিয়েছে তাঁরা।
২০১৫ সাল থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ৬০ হাজার গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগের কথা বলেছিলেন। ধাপে ধাপে পূরণ করা হবে সেই শূন্যপদ, এমনই ঘোষণা করেছিলেন তিনি। ২০১৭ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল গ্রুপ ডি রিক্রুটমেন্ট বোর্ড ৬০০০ কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। অনেক টালবাহানার পর ৫,৪২২ জন সফল প্রার্থীর মেধাতালিকা প্রকাশ করে বোর্ড। অর্থাৎ ৫৭৮টি শূন্যপদ এখনও রয়েছে। এদিকে ওয়েটিং লিস্ট প্রকাশ নিয়েও শুরু হয় টালবাহানা। ডেপুটেশন জমা দিয়েও কোনও লাভ হয়নি।
চাকরিপ্রার্থীদের কথা অনুযায়ী, ব়্যাঙ্ক ও প্রাপ্ত নম্বর জানার জন্য তাঁরা আরটিআই করে। তার জবাবে বোর্ড জানায় যে, অনলাইনে প্রকাশ করা হবে সেই ততঝ্য। এই ঘটনার পর অনেকটা সময় কাটলে বোর্ড একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, অনলাইনে প্রকাশ করার সমস্ত প্রযুক্তিগত কাজ প্রায় শেষ। খুব শিগগিরই লিংক দেওয়া হবে। কিন্তু তার প্রায় ছয় মাস কেটে গেলেও ওয়েবসাইটে তা জানায়নি বোর্ড। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়েও ডেপুটেশন জমা দিয়ে আসেন চাকরিপ্রার্থীরা। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দফতর থেকে খোঁজ নিয়ে তাঁরা জানতে পারেন যে, কমবেশি ১২০০ নন-জয়েনিং প্রার্থী রয়েছেন। যদিও বোর্ডের তরফে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছিল, ১০০০ জনের কিছু বেশি রয়েছেন ওয়েটিং তালিকায়। আগেই ৫৭৮টি শূন্যপদ ছিল। তার ওপর অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ায় শূন্যপদ যা বেড়েছে তা-ও প্রায় হাজারখানেক বলেই জানিয়েছে চাকরিপ্রার্থীরা।
এই অবস্থায় অসহায় চাকরিপ্রার্থীদের প্রশ্ন একটাই, ওয়েটিং তালিকায় থাকা প্রার্থীদের কেন নিয়োগ করছে না বোর্ড? ৬০ হাজার নিয়োগের স্বপ্ন দেখিয়ে মাত্র ৬ হাজার কর্মী নিয়োগপ্রক্রিয়া কেন সম্পূর্ণ করল না সরকার, প্রশ্ন তুলছেন অসহায় চাকরিপ্রার্থীরা।