শিক্ষিকাদের ‘স্ত্রী-রোগ’ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য শিক্ষামন্ত্রীর

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বৈঠক মঞ্চ থেকে শিক্ষকদের বার্তা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ নজরুল মঞ্চে থেকে বদলি ইস্যুতে শিক্ষকদের কাঠগড়ায় তুলে শিক্ষামন্ত্রী৷ শিক্ষিকাদের ‘স্ত্রী-রোগ’ নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি৷ শিক্ষিকাদের নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য শুনে হো-হো করে হেঁসে ওঠেন তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বৈঠকে থাকা অন্য শিক্ষকরা৷ বলেন, ‘‘মিউচুয়াল ট্রান্সফার আমি করে দেব৷ বলেছিলাম না,

শিক্ষিকাদের ‘স্ত্রী-রোগ’ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য শিক্ষামন্ত্রীর

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বৈঠক মঞ্চ থেকে শিক্ষকদের বার্তা দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ নজরুল মঞ্চে থেকে বদলি ইস্যুতে শিক্ষকদের কাঠগড়ায় তুলে শিক্ষামন্ত্রী৷ শিক্ষিকাদের ‘স্ত্রী-রোগ’ নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি৷ শিক্ষিকাদের নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য শুনে হো-হো করে হেঁসে ওঠেন তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির বৈঠকে থাকা অন্য শিক্ষকরা৷

বলেন, ‘‘মিউচুয়াল ট্রান্সফার আমি করে দেব৷ বলেছিলাম না, অসুস্থ হলে বদলি করা হবে৷ এখন দেখছি সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছে৷ সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ছে৷ আর এত বেশি মহিলা শিক্ষিকা, তারা স্ত্রীরোগের ভুগছেন, আমি নিজে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে। এটা কি হচ্ছে? জেনুইন কিছু থাকলে আমরা অবশ্যই দেখবো৷ আমি তো বলেছি জেলা শিক্ষিকাদের জেলায় রাখতে৷ আপনি যখন মহিলা ছিলেন, মানে যখন অবিবাহিত মহিলা, আপনি কল্যাণীতে কাজ করতেন৷ বিয়ে করে চলে গেলেন কাকদ্বীপে৷ এবার ট্রান্সফারের কারণ কী? বর আছে বেহালায়৷ সেই কারণে ট্র্যান্সফার লাগবে৷ কিন্তু কেউ এসে বলল না ওখানে ছাত্র-ছাত্রী বেশি আছে আমি ওখানে যেতে চাই৷’’

বলেন, ‘‘আমার ডিপারমেন্টকে বলে দিয়েছি, মেয়েদেরকে যতটা পারো জেলার মধ্যে রাখো৷ শিক্ষিকাদের জেলার মধ্যে রাখতে যদি না পারো, পাশের জেলায় দাও৷ এটা তো আমরা নতুন নিয়োগে করেছি৷ আমরা ট্রান্সফার চালু করেছি৷ ৭০ হাজারের ওপর বদলি করা হয়েছে৷ মিউচুয়াল ট্রান্সফারের জন্য আবেদন করুন আমরা দেখছি৷ কিছু করা যায় কিনা, দেখছি৷ কিন্তু এটা বলে রাখছি, যেখানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কম, সেখানে বদলি করা হবে না৷ কাউকে মুড়ি খাওয়ার জন্য ট্রান্সফার করা হবে না৷ আমরা চাই যেখানে শিক্ষক কম আছে অথচ ছাত্র-ছাত্রী বেশি, সেখানে আমরা পাঠাবো৷ আমরা চাই শিক্ষক তাঁর সম্মান, আত্মমর্যাদা নিয়ে কাজ করুক৷ ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা দেবেন তাঁরা৷ পড়াবেন৷’’

এদিন শিক্ষকদের গ্রেড পে বৃদ্ধির ঘোষণা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা আপনাদের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করছি৷ আপনাদের গ্রেড-পে ৩২০০টাকা সুপারিশ করেছিলাম৷ কিন্তু, ৩৬০০টাকা গ্রেড পে করা যায় কি না, তা ভেবে দেখা হচ্ছে৷ কবে এটা চালু হবে তা আমরা জানিয়ে দেব৷ এই টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা তো আমাদের করতে হবে৷ দেখি, কোথা থেকে তা আনা হবে তা দেখা হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রী চান শিক্ষকদের গ্রেড পে ৩৬০০ টাকা করা হোক৷’’ পে-স্কেল নিয়ে আওয়াজ উঠলেও তা এড়িয়ে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানান, ‘‘দাঁড়ান নির্দেশ প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন৷’’ যদিও, আজ বিকেল ডট কম প্রতিবেদন প্রকাশ করে আগেই জানিয়েছিল, প্রাথমিক শিক্ষকদের গ্রেড-পে ৩৬০০ টাকা করা হতে পারে৷

সূত্রের খবর, প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন কাঠামো ৭১০০টাকা থেকে ৩৭ হাজার ৬০০ টাকার করা হতে পারে৷ নয়া এই হার কার্যকর হলে কমপক্ষে ৬ হাজার টাকার বেশি বেতন বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে৷ নয়া হারে বেতন বাড়লে রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে প্রতিবছর অতিরিক্ত ১১৭০ কোটি টাকা খরচ হবে৷

শিক্ষকদের বার্তা দিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, ‘‘আপনারা বেতন বৃদ্ধির কথা বলছেন৷ কিন্তু, নিজেদের দায়িত্ব বোধ থাকা উচিত৷ কারণ, ছাত্র-ছাত্রীরা না থাকলে কোনও গুরুত্ব নেই৷ কারণ শিক্ষকদের প্রধান কাজ শিক্ষা দেওয়া৷’’ কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘লোক বলছে শিক্ষকরা বেতন বাড়ানোর জন্য রাস্তায় বসে আছে৷ কিন্তু, শিক্ষার উন্নয়নের জন্য কেন আপনারা আন্দোলন করছেন না ?’’ জানান, এই মুহূর্তে শিক্ষকরা মাস পয়লা বেতন পান৷ কেন আপনারা এটা নিয়ে কিছু বলছেন না? বলেন, শিক্ষকরা পাওনা চান, কিন্তু দায়িত্ব নেন না৷ আপনারা দায়িত্ব দিন, পাওনাও কেন চাইবেন না কেন? আপনাদেরও এগিয়ে আসবেন৷ এদিন অনশনরত শিক্ষকদের অনশন তুলে নেওয়ার আর্জি জানান৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 + 4 =