কলকাতা: কেন্দ্র কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে ছাড় দিয়েছে। বিপর্যয়ের পরে তাঁরা ব্যাবসায় বাড়তি সুবিধা পাবে। কিন্তু, সরকারি কর্মীরা পাবেন না মহার্ঘ ভাতা। সারার্থ, কর্পোরেট সংস্থাগুলি নিজের ব্যাবসা টিকিয়ে রাখার জন্য পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে। সঙ্গে পাবে কেন্দ্রীয় সরকারি ছাড়। কিন্তু, সরকারি কর্মীরা করোনা পরবর্তী দূর্দিনের অগ্নিমূল্য বাজারের সঙ্গে পাল্লা দেবে। সরকারি সাহায্য তো দূরের কথা, পাওয়া যাবে না মহার্ঘ ভাতাও।
এসব বিষয়গুলি নিয়ে এদেশের বামপন্থীরাই সাধারণত সরব হয়। এক্ষেত্রেও অন্যথা হয়নি। রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুপ্ত বলেছেন, কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে বাড়তি ছাড় না দিলেই বাড়তি টাকা উঠে আসে। কর্মীদের উপর বোঝা চাপে না।
সম্প্রতি, কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০২১ সাল পর্যন্ত কোনও বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা পাবে না কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। পুরান হারেই দেওয়া হবে মহার্ঘ ভাতা। এমনকি, চলতি বছরের জুলাই থেকে প্রাপ্য মহার্ঘ্য ভাতাও পুরান হারে দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের একটি হিসাব বলছে, ২০২০-২১ এবং ২০২১-২২ অর্থবর্ষে কম করে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার ফলে ৩৭ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা।
বামপন্থীদের যুক্তি, কেন্দ্রীয় দরকার এই অর্থবর্ষে কর্পোরেট ছাড় দিয়েছে ১ কোটি ৪৫ লক্ষ কোটি টাকা। এই ছাড় যদি না দেওয়া হত, তবে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা কমত না। যদিও কোনও রাজ্য সরকার মহার্ঘ ভাতা কমানোর কথা ঘোষণা করেনি। বাম অর্থনীতিবিদ অসীম দাশগুপ্ত বলেছেন, কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের মহার্ঘ ভাতা ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা, যা কর্পোরেট কর ছাড়ের তুলনায় কম।
বিজেপি প্রভাবিত রাজ্যের সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশীষ শীলের বক্তব্য, ” কর্পোরেটের যুক্তি দিয়ে লাভ নেই। দেশের বড় কর্পোরেট গুলি করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী কেয়ারে কোটি কোটি দান করেছে। কেউ দিয়েছে হাসপাতাল। আবার অন্যদিকে দেখতে গেলে কেরালায় বাম সরকার সরকারি কর্মীদের এক মাসের বেতন কেটে নিচ্ছে। প্রতি মাসে ৬ দিনের বেতন ৫ মাস ধরে কেটে নেওয়া হবে।”
দেবাশীষ বাবু আরও জানান, “কেন্দ্র মহার্ঘ্য ভাতা কম দিচ্ছে, আবার প্রতি মাসে এক দিনের মাইনে প্রধানমন্ত্রী কেয়ারে দিতে হচ্ছে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত। এই দুই রকম ব্যবস্থা কেন কর্মীদের উপর লাগু হল। তা কেন্দ্রীয় সরকারকে আমরা ভেবে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।”