কলকাতা: করোনা পরিস্থিতিতে জারি লকডাউনেই ধুঁকতে শুরু করেছিল ভারতের অর্থনীতি৷ কিন্তু বাগে আসেনি করোনা৷ সংক্রমণ রুখতে তাই আরও ১৯ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ দীর্ঘ এই লকডাউনে বিপর্যয়ের মুখে দেশের অর্থনীতি৷ কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে একাধিক সংস্থা৷ এবার সেই তালিকায় জুড়ল কোকাকোলা কোম্পানির নাম৷
গত ২৮ মার্চ কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকায় বলা হয়, দেশের সমস্ত কর্পোরেট, কোম্পানি, বেসরকারি সংস্থা কোনও ভাবেই কর্মী ছাঁটাই করবে না। লকডাউন চলাকালীন সংস্থার সমস্ত কর্মীদের সবেতনে ছুটি দিতে হবে। এর ঠিক পরের দিন, অর্থাৎ ২৯ মার্চ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একই ধরনের নির্দেশিকা জারি করা হয়৷ এরপর দ্বিতীয় দফা লকডাউন ঘোষণার সময়ও বিভিন্ন সংস্থার কাছে কর্মী ছাঁটাই না করার আর্জি জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ কিন্তু দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ কোম্পানিই সরকারের নির্দেশিকা মানছে না।
বৃহস্পতিবার রাতে হুগলী জেলার পার ডানকুনিতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর অবস্থিত বেঙ্গল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড কর্মীদের ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করে৷ এই কোম্পানিটি কোকাকোলার একটি ফ্রাঞ্চাইজি। বেঙ্গল বেভারেজের হরাইজেন্টাল এক্সিকিউটিভরা মূলত কোম্পানির বিক্রি বাড়ানোর দায়িত্ব পালন করে থাকেন৷ এই সংস্থায় ৩০০ জনের বেশি কর্মী রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কোম্পানির এইচআর কর্মীদের ফোন করে জানান, তাঁদের আর কাজে বহাল রাখা হবে না৷ তাঁরা যেন তাঁদের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দেন৷ কিন্তু পদত্যাগ করতে অস্বীকার করেন কর্মীরা৷ তাঁদের পালটা দাবি, কর্তৃপক্ষ চাইলে ই-মেল পাঠিয়ে বরখাস্ত করুক। কিন্তু কর্মীদের দাবি মানতে চাননি এইচআর৷ উলটে পদত্যাগ করার জন্য কর্মীদের হুমকি দেওয়া হয়৷
অভিযোগ, বেঙ্গল বেভারেজ খুব ভালোভাবেই কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল৷ ২০০৫ সালের ডিজাস্টার্স ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট সম্পর্কেও তারা জ্ঞাত। কর্তৃপক্ষ জানে, এই মুহূর্তে কর্মীদের বরখাস্ত করা হলে আইনি জটিলতায় পরতে হবে৷ তাই কর্মীদের ফোন করে শাসানো শুরু হয়েছে৷ তাঁদের পদত্যাগ পত্র জমা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে৷ এই পরিস্থিতিতে সংস্থার কর্মীরা সিটু’র সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ঘটনাটি জানার পরই লেবার কমিশনারকে গোটা বিষয়টি জানানো হবে জানিয়েছেন ইন্দ্রজিৎ ঘোষ৷ কর্মী ছাঁটাই রুখতে তারা আন্দোলনের পথে হাঁটবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে৷