মোদী জমানায় শহরে দ্বিগুণ, গ্রামে তিনগুণ বেড়েছে বেকারত্ব, বলছে রিপোর্ট

মোদী জমানায় শহরে দ্বিগুণ, গ্রামে তিনগুণ বেড়েছে বেকারত্ব, বলছে রিপোর্ট

নয়াদিল্লি:  এখন সরকারের তরফে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির ‘অজুহাত’ দেওয়া হতেই পারে। কিন্তু এই পরিস্থিতির আগে থেকেই যে দেশের বেকারত্বের হার খুব একটা ভালো জায়গায় ছিল না তা মানতেই হবে। এখন ভাইরাস পরিস্থিতি এবং লকডাউন কার্যকরের ফলে দেশের বেকারত্বের হার আরও সঙ্গীর হচ্ছে দিন দিন। সাম্প্রতিক সময়ে, এক বেসরকারি পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, শহরাঞ্চলে দ্বিগুণ এবং গ্রামের দিকে তিন গুণ হারে বাড়ছে বেকারত্ব। এক কথায়, কংগ্রেস জমানা থেকে খারাপ অবস্থা বিজেপি জমানার।

প্রথমবার যখন বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন বছরে ২ কোটি করে চাকরি দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু যতদিন গেছে, সেই প্রতিশ্রুতি অন্য অনেক প্রতিশ্রুতির মত চাপা পড়ে গিয়েছে। গত বছরই প্রকাশ পেয়েছিল যে, গত ৪৫ বছরের তুলনায় দেশের বেকারত্বের হার সবচেয়ে কম। সেই নিয়ে কংগ্রেসসহ একাধিক বিরোধীদল আওয়াজ তোলে। যদিও কেন্দ্রের তরফে কোনরকম পাল্টা বক্তব্য প্রকাশ করা হয়নি। এবছর সত্যিই অন্যরকম। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এবং লকডাউনের জন্য কর্মহীনের সংখ্যা বেড়েছে ভারতের। সেই কারণে বেকারত্বের হার আরো চওড়া হচ্ছে। রিজার্ভ ব্যাংক একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করে দাবি করেছে, ২০০৯-১০ সালে গ্রাম এবং শহরের প্রতি হাজার জনে ১৯-৪০ জন কর্মহীন ছিল, এখন সেই সংখ্যাটাই দাঁড়িয়েছে ৩৫-৪৯! অর্থাৎ মোদি জমানায় যে কর্মহীনের সংখ্যা বেড়েছে তা একেবারেই স্পষ্ট।

ক্ষমতায় আসার আগে এবং পরে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে একাধিকবার কাঠগড়ায় তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দাবি করেছিলেন, তিনি বা তাঁর সরকার ক্ষমতায় এলে দেশের বেকারত্বের চিত্রের পরিবর্তন হবে। পরিবর্তন হয়েছে বটে, কিন্তু তা একেবারেই আশানুরূপ নয়। যতদিন গেছে ঋনাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ভারতের বেকারত্বের ইস্যুতে। বিগত কিছু বছরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে রিজার্ভ ব্যাংক আরো জানিয়েছে, ২০১১-১২ সালে গ্রামে প্রতি হাজার জনে কর্মহীন ছিলেন ১৭ জন, শহরে ৩৪ জন। সেই জায়গায় ২০১৮-১৯ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৫০-৭৭! গত বছরেই বেকারত্বের হার নিয়ে যে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছিল তাতে দেশের অবস্থা মোটামুটি স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এখনো যে পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি তা ফের একবার বোঝা গেল।

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নোটবন্দী এবং জিএসটি ভারতের বেকারত্বের সমস্যা আরো প্রবল করেছে। এর পরবর্তী ক্ষেত্রে মহামারী এবং লকডাউন গোদের ওপর বিষফোঁড়া। নোবেলজয়ী বাঙালি অর্থনীতিবীদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন। একাধিক পন্থা অবলম্বনের কথা বলেছিলেন। যদিও সেই বিষয়ে বিশেষ আমল দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তবে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্যকে সম্মান জানিয়েছেন, তার সঙ্গে দেশের অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা পর্যন্ত করেছেন। যদিও, কেন্দ্রীয় সরকার সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য কি পরিকল্পনা করেছে তা জানতে চাওয়া হলেও কেন্দ্রের তরফে কোনো বক্তব্য পেশ করা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 − 2 =