শিক্ষামন্ত্রীর নিয়োগ আশ্বাসেও কাটল না জট! পাল্টা কৌশল চাকরিপ্রার্থীদের

শিক্ষামন্ত্রীর নিয়োগ আশ্বাসেও কাটল না জট! পাল্টা কৌশল চাকরিপ্রার্থীদের

কলকাতা: মেধা তালিকায় অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে উচ্চপ্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলা ঝুলছে আদালতে৷ একদিকে মামলার গেরো, অন্যদিকে সফল প্রার্থীদের অবিলম্বে নিয়োগের দাবিতে টানা দু’রাত খোলা আকাশের নীচে ফুটপাতে বসে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ পশ্চিমবঙ্গ আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থী মঞ্চের ডেকে চলছে নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন৷ একদিকে সফল চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন অন্যদিকে মামলা, জোড়া চাপের পর এবার প্রতিক্রিয়া দিলেন মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ রাজ্যের উপর চাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি দাবি জানিয়েছেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীদের একাংশ৷

দ্রুত গেজেট বিধি মেনে যোগ্য প্রার্থীদের বঞ্চিত না করে উচ্চ প্রাথমিকে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ ও গেজেট বিধি অনুযায়ী ইন্টারভিউয়ে সফল প্রার্থীদের বিষয়ভিত্তিক সঠিক অনুপাতে নিয়োগের দাবিতে সরব হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷  এসএসসি ভবনের সামনে টানা দু’রাত ধর্নায় বসেছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ আন্দোলনকারীদের দাবি, গত ৭ বছর ধরে উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি৷ বিভিন্ন কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করেছে রাজ্য সরকার৷ অবিলম্বে নিয়োগের দাবিতে সল্টলেকে এসএসসির দফতরের সামনে কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থী অবস্থানে বসেছেন৷ সফল চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে এবার নিজের অবস্থান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷

আজ বিকেলে চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের  সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী৷ বৈঠকে এখনও পর্যন্ত কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি৷ উল্টে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করছেন চাকরিপ্রার্থীরা৷ চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান-বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘ওদের প্রতিনিধি আমাদের কাছে এসেছিল৷ আমি তাদের বলেছি, বিষয়টি আদালতের বিবেচনাধীন৷ আদালত রায় দিলে, রায়ের কপি সংগ্রহ করে এসএসসিকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি৷’’

শিক্ষামন্ত্রী এই দাবির পরও নিজেদের অবস্থান থেকে সরতে নাজার আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা৷ অবিলম্বে নিয়োগের পক্ষে সওয়াল করছেন তারা৷ বৈঠকের পর চাকরিপ্রার্থীরা ‘হতাশ’ বলেও দাবি করা হয়েছে৷ কেননা, সাত বছর ধরে চাকরিপ্রার্থীরা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ৷ অবিলম্বে নিয়োগ করার পক্ষে জোরালো সওয়াল চাকরিপ্রার্থীদের৷ যতক্ষণ না পর্যন্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের এই অবস্থান বিক্ষোভ চলবে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷

রাজ্য সরকারের উপর চাপ বাড়ানোর পাশাপাশি আদালত  দ্রুত যাতে এই মামলা নিষ্পত্তি ঘটাতে পারে, সেই দাবি তুলতে শুরু করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা৷ কেননা উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে৷ এ নিয়ে শুনানি পর্ব ইতিমধ্যেই শেষ৷ এবার আপনার অপেক্ষা রায় ঘোষণার৷ রায় ঘোষণার আগে চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান-বিক্ষোভ ও শিক্ষামন্ত্রী সমাধানের আশ্বাস যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে৷ যদিও মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আদৌ উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ করা সম্ভব? তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷ উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মেধা তালিকায় অনিয়মের অভিযোগের ইতিমধ্যে নিয়োগের ওপর স্থগিতাদেশ জারি রেখেছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ দীর্ঘদিন ধরে মামলার শুনানির পর এবার আদালতের রায়ের উপর গোটা বিষয়টি নির্ভর করছে বলেই মনে করা হচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − six =