শিক্ষা, চাকরি, অর্থনীতি: রাজ্যের বাজেট ‘প্রতারণা’র পর্দাফাঁস সুজনের

শিক্ষা, চাকরি, অর্থনীতি: রাজ্যের বাজেট ‘প্রতারণা’র পর্দাফাঁস সুজনের

কলকাতা: ফের রাজ্য বাজেটকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ রাজ্যের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতারণার অভিযোগ তুলে তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি৷ শিক্ষা, কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন এই বাম নেতা৷

আজ শনিবার বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে গত বছরে বাজেট ভাষণ সঙ্গে এবারের বাজেট ভাষণ মিলিয়ে বেশ কিছু অসঙ্গতি তুলে ধরেন তিনি৷ সেখানে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কমা ও কর্মসংস্থান সংক্রান্ত রাজ্যের তথ্য প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন তিনি৷ সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি জানান, রাজ্য সরকার তার বাজেট পেশ করে ২০১১ সালে কী ছিল বাংলা, আর ২০২০ সালে রাজ্যের কি অবস্থা তার তুলে ধরার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু রাজ্য সরকারের এটা বলছে না, এরমধ্যে দেশের অনেক পরিবর্তন হয়েছে৷ রাজ্য সরকার যে হারে আগে কর আদায় করত সেটাও বেড়েছে৷ কর শেয়ার ২৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪২ শতাংশ পাচ্ছে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু রাজ্য সরকার এমন বাজেট পেশ করেছে, মনে হচ্ছে যেন বিরাট কিছু করে ফেলেছে সরকার৷

গত বছরের বাজেট ঘোষণার সঙ্গে এই বছরের বাজেট ভাষণের পার্থক্য তুলে ধরেন সুজন৷ বলেন, ‘‘শিল্পে গতবছরের থেকে বাজেট কমেছে, সেটা স্বীকার করেনি রাজ্য৷ সংখ্যালঘুদের জন্য গত বছর বলা ৪ হাজার কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছিল৷ এবারের বাজেটে ২০-২১ পাতায় তাতে বলা হয়েছ ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে৷ কিন্তু একবারও বলা হয়নি, এবার বাজেট বরাদ্দ কমানো হল৷ উচ্চশিক্ষা গত বছরের বলা হয়েছিল ৩৯৪৬ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছিল৷ এই বছর ২৮ পাতায় বলা হয়েছে মাত্র ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ করা হয়েছে৷ যদি  বরাদ্দ কমিয়ে থাকেন, তাহলে গোপন করছেন কেন? আসলে মনের মাধুরী মিশিয়ে পরিবার চলতে পারে, রাজ্য সরকার চল না৷ আমি বারবার চ্যালেঞ্জ করে বলছি, এই সরকার বাজেটের নামে প্রতারণা করছে৷’’

এরপর কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে সুজন বাবু দাবি, বাজেট আলোচনায় আমাদের পক্ষে থেকে অনেকেই বক্তব্য রেখেছিলেন৷ আমি আজ নির্দিষ্টভাবে বিধানসভায় বলেছি, কর্মসংস্থান গত বছরে এই সরকার যা হিসাব দিয়েছে আমি তার যোগ করে দেখিয়েছি৷ এই ন’বছরে রাজা পরিসংখ্যান দিয়েছে, ৯০ লক্ষ৷ তারপর গতবারের আগের বছরে ২০ লক্ষ, তার মানে দাঁড়াল ১ কোটি ১০ লক্ষ৷ গতবছর দেখালেন ৯ লক্ষ ৪ হাজার৷ এবছর আবার দেখানো হয়েছে ৯ লক্ষ ১১ হাজার৷ অর্থাৎ ১ কোটি ২৯ লক্ষ৷ রাজ্যের পরিসংখ্যান দেখলে মনে হচ্ছে, বাংলায় বেকার ছেলে মেয়েদের চাকরির পিছনে আর ঘুরতে হবে না৷ বেকার যুবকের পিছনে চাকরি তাড়া করে বেড়াবে৷  তৃণমূল বিধায়কের আমরা চ্যালেঞ্জ করছি, কোন একজন বিধায়ক তাঁর বুথে চাকরি প্রার্থীদের তালিকা টানিয়ে দিন, যাঁদের আপনি চাকরি দিয়েছেন৷ তালিকা এলাকায় দিলে ছুটে পালাতে হবে৷ পাবলিক ঘিরে ধরবে আপনাদের৷ বিধানসভায় অসত্য বলা?’’

অর্থনীতি প্রসঙ্গে সুজনের মন্তব্য, ‘‘রাজ্য সরকার অর্থ থছরুপ করছে৷ টাকা তছরুপের নির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে৷ নির্মাণশ্রমিকদের জন্য সরকারের কাছে জমা থাকা ১৪ কোটি টাকা এসবিআই থেকে তুলে সরকারের ট্রেজারিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ রিজার্ভ ব্যাংকের টাকা তুললে আমরা আপত্তি করছি৷ আর স্টেট ব্যাংক থেকে শ্রমিকদের টাকা তুলে নেওয়ার মানেটা কী? শ্রমিকদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার প্রতারণা করছে৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + 18 =