দুর্নীতি ধরে পদ গেল প্রধান শিক্ষকের, ইস্তফা দিয়ে ফিরলেন পুরানো চাকরিতে

দুর্নীতি ধরে পদ গেল প্রধান শিক্ষকের, ইস্তফা দিয়ে ফিরলেন পুরানো চাকরিতে

83da476d5629d24b31fcd2a554f06971

কলকাতা: প্রধান শিক্ষককের পদে বসে এমনটা হবে, তা কল্পনাও করেননি বড়িশা শশীভূষণ জনকল্যাণ বিদ্যাপীঠের শিক্ষক কৃষ্ণাশিস গোস্বামী৷ অভিযোগ, অনিময়মের বিরুদ্ধে মুখ খুলে পরিচালন কমিটির চাপে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে ইস্তফা দিতে সহ-শিক্ষকে চাকরিতে যোগ দিতে বাধ্য হলেন প্রতিবাদী শিক্ষক৷

দিন কয়েক আগে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব পেয়েছিলেন তিনি৷  কিন্তু বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সাথে মতান্তরের জেরে বিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হন ওই শিক্ষক৷ মাত্র মাস খানেকের জন্য খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধানসভা কেন্দ্রের বড়িশার ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ স্থায়ী নিয়োগ পান কৃষ্ণাশিস গোস্বামীর৷ বিদ্যালয়ের পরিচালন সমতির একাংশের তৈরি করা চাপে কাছেই নতি স্বীকার করতে কার্যত বাধ্য হন তিনি৷

জানা দিয়েছে, এতদিন পর্যন্ত ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদের দায়িত্ব অস্থায়ী ভাবেই পালন করছিলেন বিদ্যালয়ের একজন সাধারণ শিক্ষক৷ পরে স্কুল সার্ভিস কমিশন পরিচালিত প্রধান শিক্ষকের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে যোগদান করেন কৃষ্ণাশিসবাবু৷ কাজে যোগদানের পরে তিনি  লক্ষ্য করেন, বিদ্যালয়ের পরিচালনা ব্যবস্থার কাজ কর্মে ব্যাপক গোঁজামিল রয়েছে৷ তিনি যোগদান করার আগে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন প্রায় ২৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়৷ কিন্তু যে ঠিকাদার ওই ভবন নির্মাণ করেছেন, তার পাওনা দেওয়া এখনও বাকি৷ এই বকেয়া টাকার পাওয়ার আশায় অসুস্থ্য ঠিকাদার একদিন প্রধানশিক্ষকের কাছে এসে পাওনা টাকার দাবি করেন৷ প্রধান শিক্ষক স্বভাবতই হতবাক হয়ে যান৷

পরে তিনি জানতে পারেন, এখনও ১৮ লক্ষ টাকা বকেয়া রয়েছে৷ এছাড়াও পাঁচ জন পার্শ্বশিক্ষকের বেতন বাবদ মাসিক ২৩ হাজার টাকা ব্যয় হয় বিদ্যালয় তহবিল থেকে৷ এই সময় ১৮ লক্ষ টাকা পাওনা মেটানো সামান্য তহবিলের টাকা নির্ভর করে প্রায় অসম্ভব৷ বিদ্যালয় তহবিলের সঞ্চয় বৃদ্ধির জন্য প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণাশিস বাবু চেয়েছিলেন চাকরীর পরীক্ষার জন্য বিদ্যালয় ভবন ব্যবহার করতে দিলে পরীক্ষা পরিচালন সংস্থার থেকে যে অর্থ সাহায্য পাওয়া যায়, সেটা বিদ্যালয় তহবিলে জমা হোক৷ শুধু পরীক্ষা পরিদর্শক হিসেবে যদি কোনও শিক্ষক কাজ করেন, তার কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে পাওনা টাকা ওই শিক্ষক গ্রহণ করুন৷ প্রধান শিক্ষকের এই প্রস্তাব পরিচালন সমিতির একাংশ সমর্থন করতে পারেনি৷

এছাড়াও সরকারি কোষাগার থেকে পার্শ্ব শিক্ষকদের বেতন নিয়ে আসার জন্য কৃষ্ণাশিস বাবুর উদ্যোগকেও কড়া ভাষায় সমালোচনা করে পরিচালন সমিতি৷ সব মিলিয়ে তাঁর কাজের যাবতীয় সুযোগ কেড়ে নিতে বদ্ধ পরিকর হয়ে ওঠে কমিটি৷ বাধ্য হয়ে তিনি প্রধান শিক্ষকের পদে ইস্তফা দেন৷ ইস্তফা দিয়ে পুরানো কর্মস্থলে সাধারণ শিক্ষক পদে যোগদান করেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *