আজ বিকেল: রাজ্য সরকার শিক্ষক নিয়োগ করতে চাইছে না৷ তাই বড় বড় ‘কেলেঙ্কারি’র মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে চাইছে রাজ্য সরকার৷ শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ যদিও, শিক্ষক নিয়োগে কোনও ‘কেলেঙ্কারি’ হয়নি বলেই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার৷
এদিন সাংবাদিক বৈঠক থেকে শিক্ষাদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্য সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন দিল ঘোষ৷ প্রধান শিক্ষক নিয়োগে শূন্যপদের তালিকা তুলে নেওয়ার পেছনে ‘বড় কেলেঙ্কারি’র অভিযোগ তুলে ধরেন দিলীপ৷ বলেন, ‘‘গতকাল একটা কোর্টের রায় এসেছে৷ প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে একটা কেলেঙ্কারি হয়েছে৷ একটা লিস্ট প্রকাশ করে তা তুলে নেওয়া হয়েছে৷ আমাদের যা মনে হয়েছে, উদ্দেশ্য একটাই, দ্রুত নিয়োগ না করা৷ ২০১৬ সাল থেকে চলছে সমস্যা৷ এখনও কোনও নিয়োগ হয়নি৷’’
স্কুল সার্ভিস কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে কর্তৃপক্ষ শূন্যপদের তালিকা তুলে নেওয়ায় সন্দেহ তৈরি হয়েছে প্রার্থীদের মধ্যে৷ বৃহস্পতিবার এসএসসি কর্তৃপক্ষ তালিকাটি তুলে নেয়৷ এতে অনেকেই মনে করছেন, নিশ্চয়ই তালিকা নিয়ে একাধিক অভিযোগ সামনে আসার কারণে এই তালিকা ওয়েবসাইট থেকে তুলে নেওয়া হল৷ অনেকে ধরেই নিচ্ছেন, শূন্যপদ নিয়ে অনিয়ম সামনে আসায় এই সিদ্ধান্ত নিতে হল এসএসসিকে৷
যদিও এই প্রসঙ্গে কমিশনের যুক্তি, ভেকেন্সি লিস্ট তুলে নেওয়ার মানে এই নয় যে, সেখানে কোনও অনিয়ম রয়েছে৷ কাউন্সেলিং কবে হবে, তা ২৯ জানুয়ারি কোর্টে শুনানির পরেই ঠিক করা সম্ভব হবে৷ কিন্তু আগের ওই লিস্ট থাকলে সেখান থেকে ইন্টিমেশন ডাউনলোড করে নিতে পারতেন প্রার্থীরা। অর্থাৎ, সেই অনুযায়ী জানতে পারতেন, কার কবে কাউন্সেলিং৷ শূন্যপদের তালিকা উধাও ইস্যু নিয়ে এদিনই ওয়েবসাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে এসএসসি৷ সচিব সেই নির্দেশে জানিয়েছেন, মেধা তালিকায় যে ব়্যাঙ্কগুলি দেখা যাচ্ছে না, তা কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ীই গোপন রাখা হয়েছে৷
শিক্ষাদপ্তরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলীপে মন্তব্য, ‘‘শিক্ষা দপ্তর কীভাবে চলছে? এই ধরনের উদাসীনতা দেখে বোঝা যাচ্ছে৷ সেই কারণে স্কুল-কলেজে ডামাডোল চলছে৷ এটা একটা খুব বড় কলেঙ্কারি৷ সরকার নতুন চাকরি দিতে চাইছে না৷ বেতন দিতে চাইছে না৷ তাই প্রক্রিয়াগুলি সব বন্ধ করে গিতে চাইছে৷ একবার লিস্ট দেওয়া হচ্ছে৷ একবার তুলে নেওয়া হচ্ছে৷ তারা বুঝে উঠতে পারছে না কী করা উচিত৷’’
কমিশন সূত্রে খবর, প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদ রয়েছে ২২৪৩টি৷ সেখানে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া গিয়েছে ১৮৬৪ জন৷ শেষ পর্যন্ত শূন্যপদের সংখ্যা বাড়বে, এমন বলা যাচ্ছে না৷ কারণ, ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত যে শূন্যপদ তৈরি হয়েছে, তার ভিত্তিতেই তালিকা তৈরি হয়েছে৷ এর পরের শূন্যপদ যোগ করতে গেলে আইনি ঝঞ্ঝাট হতে পারে৷ উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের শূন্যপদ রয়েছে ১৩,০৮০টি৷ ২৯ জানুয়ারি প্রায় ১৭ হাজার প্রার্থীকে ডক্যুমেন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য ডাকা হতে পারে বলে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর৷