কলকাতা:দিদিকে বলোয় ফোন করে সরকারি চাকরি পেলন দুর্ঘটনায় পা হারানো এক যুবক।
‘দিদিকে বলো’ পশ্চিমবঙ্গে মমতা সরকারের একটি উদ্যোগ, যার মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের জনগণ সরাসরি তাদের অভিযোগ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাতে পারেন। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক বিপর্যয়ের পর জনসংযোগ বাড়াতে প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ অনুযায়ী শাসক শিবির দিদিকে বলো কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় বলেই অনেকে মনে করেন।
কর্মসূচি অনুযায়ীএকটি টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে উপকৃত হয়েছেন রাজ্যের বহু মানুষ কেউ আবাস যোজনার টাকা পেয়েছেন, বহু বয়স্ক মানুষের বার্ধক্যভাতার ব্যবস্থাও হয়েছে এই কর্মসূচির মাধ্যমে। বকেয়া বেতনও পেয়েছেন অনেকেই।
বেহালা সরশুনার রায়দিঘির বাসিন্দা সুরজিৎ হালদার। তারাতলার বেসরকারি সংস্থায় ‘ডেলিভারি বয়’ হিসেবে কাজ করতেন তিনি। গত ৩ জানুয়ারি কাজ সেরে নিজের বাইকে চড়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। তারাতলার মোড়ে হঠাৎই পিছন থেকে একটি ফোর্ড গাড়ি সুরজিতের বাইকে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনি।
ঠিক তখনই পায়ের উপর দিয়ে চলে যায় আরও একটা গাড়ি। দু’ টুকরো হয়ে যায় জিতের ডান পা। একবালপুরের নার্সিং হোমে মাস তিনেক ভর্তি থাকার পর সংক্রমণের জেরে ডান পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে বাদ দিতে হয়। পরিবারের রোজগারের একমাত্র ভরসা সুরজিতের পা বাদ যাওয়ার পর ছেলে জিৎ, স্ত্রী সুস্মিতা ছাড়াও বাবা-মাকে নিয়ে চরম আর্থিক অনটনের সম্মুখীন হয় হালদার পরিবার।
গত ২৮ নভেম্বর ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে রায়দিঘি এলাকায় গেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সুরজিতের অবস্থা দেখে ও তাঁর পরিবারের দুর্দশার কথা শুনে কিছু একটা করবেন বলে আশ্বাস দেন তিনি।
এর কয়েকদিন পর সুরজিৎকে নাকতলার বাড়িতে ডেকে পাঠান শিক্ষামন্ত্রী। আশ্বাস মত সুরজিতকে স্কুল শিক্ষা দফতরের অধীনস্থ ব্যানার্জিহাটে গ্রুপ-ডি পদে গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করেন তিনি।
দিদিকে বল কর্মসূচি নিয়ে নানান কটূক্তি এবং ব্যঙ্গ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। তবে রাজ্য সরকারের এই কর্মসূচী যে সত্যিই দুর্দশাগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য, তার একটি বড় উদাহরণ সুরজিৎ। তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেছেন যে এই কর্মসূচি তাঁর পরিবারকে বাঁচিয়েছে।