কলকাতা: গত রবিবার স্কুলের চাকরি প্রার্থীদের বিক্ষোভের আঁচ পৌঁছে গিয়েছিল শিক্ষামন্ত্রী বাড়ির দোরগোড়ায়৷ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর মেধা তালিকাভুক্ত চাকরি প্রার্থীরা। পরিস্থিতিতে সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন লেকটাউন থানার ওসি৷ সেই সময় শিক্ষামন্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। লেকটাউন থানার ওসি শিক্ষামন্ত্রীকে সরাসরি ফোন করেন৷ গোটা বিষয়টি তাঁকে জানান৷
আরও পড়ুন- চাকরির সুযোগ দিচ্ছে এসসিবি
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নিয়োগের দাবিতে প্রায় ৬ মাস ধরে সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নম্বর গেটের সামনে ধরনায় বসেছেন চাকরি প্রার্থীরা৷ কিন্তু অভিযোগ, সরকার পক্ষ, আচার্য সদন বা বিকাশ ভবনের কোনও আধিকারিক তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি৷ এই অবস্থায় নিজেদের করুন অবস্থা জানাতে ১ অগাস্ট শিক্ষমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা৷ তবে কোনও রকম বিক্ষোভ দেখানো য়নি৷ শান্তিপূর্ণ অবস্থান করা হয়৷ সেই সময় লেকটাউন থানার ওসি সেখানে এসে পৌঁছন৷ শিক্ষামন্ত্রীর আপ্তসহায়ক ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয় তাঁর৷ এর পরেই ২ অগাস্ট সকাল ১১টায় তাঁদের আচার্যভবনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়া হয়৷
জানা গিয়েছে, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ মেধা তালিকাভুক্ত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের অভিযোগ শোনার পরেই শিক্ষামন্ত্রী নিজে সরাসরি ফোন করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান শুভ শংকর সরকার এর সঙ্গে কথা বলেন৷ এর পরেই লেকটাউন থানার ওসি আন্দোলনকারীদের জানান, তাঁদের আগামীকাল সকাল ১১ টার সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে হবে৷ তাঁর কাছেই তাঁদের বঞ্চনা ও অভাব-অভিযোগের কথা জানানোর সুযোগ পাবেন। লেকটাউন থানার ওসির কথাতেই আন্দোলনকারীরা আশ্বস্ত হন ও তাঁদের অবস্থান বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেন।
২ তারিখ চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা৷ তিনি দুর্নীতির কথা কবুল করে নেন বলে জানা গিয়েছে৷ ৩ তারিখ ফের আচার্য ভবনে যান আন্দোলনরত প্রার্থীদের প্রতিনিধিরা৷ এদিকে সেদিন প্রবল বৃষ্টি হয় কলকাতায়৷ রাস্তায় হাঁটু জল৷ আশ্রয় নিতে করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ডের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েন প্রার্থীরা৷ তবে মূল মঞ্চে ছিলেন বেশ কয়েকজন৷ অভিযোগ, সেই সুযোগেই বিধাননগর নর্থ এর পুলিশ অকথ্য অত্যাচার চালায় মঞ্চে থাকা ছেলেদের উপর৷ তাঁদের গালাগালি করা হয় এবং মঞ্চের চারদিক ঘিরে ফেলা হয়৷ মঞ্চের লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ পুলিশ নির্মমভাবে মঞ্চের ত্রিপল, বাঁশ ও প্রার্থীদের ব্যাগ লুঠ করে৷ তাঁদের কথায়, ‘আমাদের একটাই অপরাধ আমরা কৃষক ঘরের সন্তান৷ বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থী।’
ওই দিন ১৫ জন মামলাকারীকে গ্রেফতারও করা হয়। এই ১৫ জনকে এখনও ছাড়া হয়নি৷ তাঁদের জামিনের চেষ্টা করা হচ্ছে৷ চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০১৬ সালে তাঁরা SLST পাশ করেছেন। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত তাঁদের নিয়োগ করা হয়নি। নিয়োগে দুর্নীতি হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাঁদের। এর পরেই ব্যানার পোস্টার হাতে তাঁরে পৌঁছেছিলেন শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে।