কলকাতা: ফিটমেন ফ্যাক্টরসহ ন্যায্য বেতনের দাবিতে ফের বিকাশ ভবনে নিজেদের দাবি-দাওয়া তুললেন প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা৷ উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্যক্তিগত সচিবের সঙ্গে দেখা করে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছেন শিক্ষক প্রতিনিধি দলের সদস্যরা৷ আর সেই বিষয়ে এবার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরলেন শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্ব৷
শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিবের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি সন্দীপ ঘোষ ও রাজ্য সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘গত ২৬ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত যে নির্দেশ প্রকাশ হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে শুধুমাত্র ১০০০টাকা গ্রেড পে বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ কিন্তু সঠিক ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর প্রদানের জন্য সবরকম তথ্যসমৃদ্ধ কাগজপত্র প্রদান করা সত্ত্বেও শিক্ষামন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব বলছেন, আপনারা যে ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর চাইছেন তা ফিন্যান্সকে বোঝানো কার্যতঃ অসম্ভব৷ দ্বিতীয় যে বিকল্প দেওয়া হয়েছিল, যে ২০০৬ থেকে নেশনাল এফেক্ট দিতে হবে সেটা নাকি অসম্ভব৷ সরকার ১.১.২০১৬ থেকে নেশনাল এফেক্ট দিতে প্রস্তুত, এরপর আর তাঁর পক্ষে কিছু বলা সম্ভব নয়৷ কারণ তিনি আর কিছু বিকল্প পথ পাচ্ছেন না৷ এর ফলস্বরূপ মন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরামর্শ তিনি দিয়েছেন৷’’
শিক্ষক সংগঠনের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, ‘‘গত ১ অক্টোবর ২০১৯ নবান্ন থেকে পে কমিশনের একটি রেজুলেশনে দেখা যাচ্ছে, পে কমিশনের এফেক্ট সমস্ত সরকারি কর্মচারী, হায়ার সেকেন্ডারি এডুকেশন, সেকেন্ডারি এডুকেশন ও মাদ্রাসা এডুকেশনেকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনও অজ্ঞাত কারণে সেখানে প্রাথমিকের কোনও উল্লেখ নেই! এটি কি অনিচ্ছাকৃত ভুল? নাকি এর পিছনে ও গভীর ষড়যন্ত্র রচিত হয়েছে? এর বিরুদ্ধেও উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে শিক্ষাদপ্তরে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে! এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে না পারলে ভবিষ্যতে হয়তো অশনিসংকেত প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য অপেক্ষা করছে!’’
শিক্ষক সংগঠনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ‘‘বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শিক্ষকদের থেকে অনৈতিক চাঁদা আদায়ের প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত সচিব স্পষ্ট জানিয়েছেন, চাঁদা প্রদান একটি ঐচ্ছিক বিষয়৷ শিক্ষকরা না চাইলে দেবেন না৷ এতে সরকারের কিছু বলার বা করার নেই৷ ফলে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সরকারি বরাদ্দেই হবে৷ শিক্ষকদের থেকে কোথাও ২০০ কোথাও ২০০০ জোরপূর্বক আদায়ের প্রথা বন্ধ হোক৷ আমরা আমাদের শিশুদের জন্য যা করবো তা স্বেচ্ছায়৷ তাতে কোনও রকম জোর করা যাবে না৷ উপরিউক্ত তিনটি বিষয়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার যদি দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন পুনরায় পথে নামতে বাধ্য হবে৷ খুব শীঘ্রই৷ সরকার যদি চায় শিক্ষকরা পথে নামুক, পথেই থাকুক, তবে পথের আন্দোলনই পথ দেখাক৷ নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সর্বশক্তি দিয়ে পথে নামবো আমরা৷ সারা রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক ও শিক্ষিকার কাছে আবেদন, আপনারা প্রস্তুত হোন৷’’