কলকাতা: দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে টালবাহানা চলছে৷ নিয়োগের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে অস্বচ্ছতা এবং দুর্নীতি৷ মেরিট প্যানেলের নাম থাকা যোগ্য প্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ, ২০১৮ সালে স্কুল সার্ভিস কমিশন নবম-দ্বাদশ এবং ওয়ার্ক ফিজিক্যাল এডুকেশনের প্যানেল প্রকাশ করার সময় থেকেই স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির স্পষ্ট হয়ে যায় চাকরিপ্রার্থীদের সামনে৷ পরবর্তীকালে আপার প্রাইমারি এবং প্রাইমারির ক্ষেত্রেও একই জটিলতা তৈরি হয়৷ ২০১৮ সাল থেকে প্রতিবাদে সোচ্চার হয় ছাত্র অধিকার মঞ্চ৷
আরও পড়ুন- ১৭৩টি শূন্যপদে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর নিয়োগ
যে সকল কারণগুলিকে সামনে রেখে আন্দোলন শুরু হয়েছিল তার প্রধান কারণগুলি হল- স্কুল সার্ভিস কমিশনের গেজেট অমান্য করা, স্বচ্ছ মেরিট প্যানেল প্রকাশ না করা, এসএমএসের মাধ্যমে গুপ্ত ভাবে নিয়োগ করা, মেরিট প্যানেলে নাম না থাকা ক্যান্ডিডেটদের নিয়োগ করা, ব়্যাঙ্ক জাম্প করে নিয়োগ করা ইত্যাদি।
এরই মধ্যে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের নাম হঠাৎ করে মেরিট প্যানেলে চলে আন্দোলনের মাত্রা আরও তীব্র হয়৷ কলকাতা প্রেসক্লাবের সামনে অনশন আন্দোলনে বসেন চাকরি প্রার্থীরা। আন্দোলনের ২৯ দিনের মাথায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনশন মঞ্চে উপস্থিত হন। সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনা করে তিনি এটা স্বীকার করে নেন নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে৷ সেইসঙ্গে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন মেরিট প্যানেলের মধ্যে থাকা কাউকে বঞ্চিত করা হবে না৷ তারপর সেই আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে একটা কমিটি তৈরি করেন তিনি। অভিযোগ, দুর্ভাগ্যজনকভাবে পরবর্তীকালে সেই কমিটির সদস্য, তাঁদের সহকারিগণ এবং আত্মীয় পরিজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দেওয়া হয় আন্দোলন দমাতে। আরও অভিযোগ, এমন অনেককেই চাকরি দেওয়া হয় যাঁদের নাম মেরিট প্যানেলে ছিল না৷ এর পর আদালতের অনুমতি নিয়ে বিকাশ ভবনের ঢিলছোড়া দূরত্বে সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নম্বর গেটের সামনে শুরু হয় ধর্না। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে আন্দোলন চললেও সরকার পক্ষের ভ্রুক্ষেপ নেই৷
যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের বক্তব্য, কোনও লুকোচুরি, রহস্যময়তা নয়। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে যাবতীয় দুর্নীতি,অসঙ্গতির প্রমাণ তাঁদের হাতে আছে। সেই প্রমাণগুলো কমিশন দেখুক এবং মেরিট প্যানেলের মধ্যে থাকা যোগ্য ক্যান্ডিডেটদের সুবিচার দিক।
গতকাল শিক্ষক দিবসে গণ কনভেনশনের মধ্য দিয়ে তারা বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে-
১)দুর্নীতির কারণ বঞ্চিত, মেধা তালিকা ভুক্ত সকলের নিয়োগ সুনিশ্চিত করতে হবে। ২)শিক্ষক নিয়োগ সহ সমস্ত ধরনের সরকারি নিয়োগের নথি সংরক্ষণ করতে হবে এবং নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য জানতে চাইলে আইন মোতাবেক সমস্ত তথ্য জানাতে হবে।
৩) গনতান্ত্রিক ভাবে আন্দোলনকারী এস এস সি ক্যান্ডিডেটদের উপর চাপানো সমস্ত মামলা নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহার করতে হবে।