শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, কোন পথে SSC-র তদন্ত?

কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগে আকাশ ছোঁয়া কেলেঙ্কারির রিপোর্ট পেশ করেছিল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়া বা ক্যাগ৷ ক্যাগের প্রকাশিত রিপোর্টে প্রশ্নের মুখে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা৷ ক্যাগের রিপোর্ট ঘিরে রাজ্যজুড়ে বিতর্ক তৈরি হতেই তড়িঘড়ি তদন্তের নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তদন্তের নির্দেশ দেন৷ কিন্তু সেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও ঠিক

শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, কোন পথে SSC-র তদন্ত?

কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগে আকাশ ছোঁয়া কেলেঙ্কারির রিপোর্ট পেশ করেছিল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়া বা ক্যাগ৷ ক্যাগের প্রকাশিত রিপোর্টে প্রশ্নের মুখে শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা৷

ক্যাগের রিপোর্ট ঘিরে রাজ্যজুড়ে বিতর্ক তৈরি হতেই তড়িঘড়ি তদন্তের নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে তদন্তের নির্দেশ দেন৷ কিন্তু সেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার এক মাস পেরিয়ে গেলেও ঠিক কতটা এগল কমিশন? কমিশনের ভূমিকা নিয়েও এবার উঠল প্রশ্ন৷

গত ২২ জুলাই সাংবাদিক বৈঠক করে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, আমরা ক্যারিয়ের রিপোর্ট দেখেছি৷ অলরেডি এসএসসিকে বলেছি, ‘‘ওই সমস্ত কাগজপত্র বের করে আপনারা আমাদের দপ্তরে রিপোর্ট করবেন৷ আমরা তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব৷ সিএজি অডিট রিপোর্ট যদি বিধানসভায় তোলা হয়, তার আগে আমরা যেন তৈরি থাকি৷ আমরা এই বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেব৷’’

কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী স্কুল সার্ভিস কমিশনকে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তের দায়িত্বে দিলেও এখনও পর্যন্ত সেভাবে তদন্তের খাতা খুলতে পারেনি স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ এই বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান৷ বলেন, তিনি যেহেতু নতুন এই পদে দায়িত্ব নিয়েছেন, ফলে গোটা বিষয়টি বুঝতে একটু সময় লাগবে৷ এছাড়াও ক্যাগ যে রিপোর্ট দিয়েছে সেই রিপোর্ট বিস্তারিত খতিয়ে দেখার পরই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছিলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান৷ যদিও চলতি বছরের শুরুতেই কমিশনের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব নেন সৌমিত্র সরকার৷

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আসার পর শিক্ষামন্ত্রী পূর্বতন সরকারের উপর দায় চাপিয়ে বলেন, সিএজি যে রিপোর্ট পেশ করেছে তা ২০০৮,২০০৯, ২০১০ সালের মধ্যে ঘটনা৷ ২০১২ যে আরএলএসপি হয়েছে সেই আরএলএসপি পর্যন্ত সিএজি সেটাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে আনেনি৷ যখন আসবে তখন আমরা নিশ্চয়ই উত্তর দেব৷ কিন্তু, যে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে তা বাম সরকারের আমলেই৷ এবিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রী দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দেন স্কুল সার্ভিস কমিশকে৷ কিন্তু গত ২২ জুলাই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরেও আজ ২৩ আগস্ট পর্যন্ত সেভাবে তদন্তের অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি বলে স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রে খবর৷ বিষয়টি যথাযথভাবে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান৷

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে হঠাৎ কেন এত গড়িমসি? একমাস সময়ের মধ্যেও কেন তদন্তের কোনও গতি আনতে পারল না কমিশন৷ এক্ষেত্রে ২০০৮ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত যে বিস্তর শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে৷ তা কেন এড়িয়ে চলছে স্কুল সার্ভিস কমিশন? যেখানে কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করছে৷ এই তদন্তের উপর সেখানে দাঁড়িয়ে শিক্ষক নিয়োগের স্বচ্ছতা৷ তদন্তের দির্দেশ পাওয়ার পরও কেন এই গড়িমসি? প্রশ্ন তুলছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷

গত জুলাই মাসের মাঝামাঝিতে ক্যাগ তার রিপোর্টে উল্লেখ করে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত পর্যায়ের দুর্নীতি হয়েছে৷ সেখানে জানানো হয়েছে, ৪.০৭ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার সঠিকভাবে দেওয়া হয়নি ৪৬ হাজার পরীক্ষার্থীর৷ ৩২ শতাংশ চাকরিপ্রার্থীর নম্বার বাড়ানো হয়েছে৷ ১৩ হাজার প্রার্থীর নম্বার কমানো হয়েছে৷ এছাড়াও প্রশিক্ষণ না নিয়েও অনেকের চাকরি পেয়ে গিয়েছেন বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে৷ পরীক্ষায় পাশ না করেও চাকরি পাওয়ার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে৷ সিএজির রিপোর্ট ঘিরে রাজ্যের রাজনীতি তোলপাড় পড়ে যায়৷ তড়িঘড়ি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তদন্তের নির্দেশ দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ কিন্তু তারপরও স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে তেমন সদর্থক ভূমিকা না দেখে ক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *