কলকাতা: মেধাতালিকায় অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে ফের থমকে গেল উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া! উচ্চ প্রাথমিকে শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগে আরও ছ’সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ মেধাতালিকা হাইকোর্টে জমা দেওয়ার নির্দেশ উচ্চ আদালতের৷ ভোট মিটলে ফের এই মামলা শুনানি হওয়ার কথা৷
২০১৬ সালের পরীক্ষা নেওয়া হলেও ২০১৭ ফল প্রকাশ করা হয়। মামলাকারীদের অভিযোগ, নিয়োগে অসঙ্গতি রয়েছে। বিধি না মেনে নিয়োগ হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। ২২ সেপ্টম্বর ২০১৬ সালে আপার প্রাইমারির বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। পরীক্ষা নেওয়া হয় ২০১৭ সালে। শুরু হয় নিয়োগ প্রক্রিয়া। সেই নিয়োগেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়৷ অভিযোগ, ওই প্যানেলে অসঙ্গিত রয়েছে বলে দায়ের হয় মামলা৷
চাকরির পরীক্ষায় সফল ১৬৮০ জনের নাম সুপারিশ করেছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। সেই সূত্রে ৮১০ জন চাকরিতে যোগও দেন। কিন্তু, তারপরই ওয়েটিং লিস্টের পিছনের সারিতে থাকা বেশকিছু প্রার্থী অভিযোগ তোলেন, প্রাসঙ্গিক তালিকায় গণ্ডগোল রয়েছে। সেই সূত্রে হাইকোর্ট থেকে সামগ্রিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি হয়। এই অবস্থায় যাঁরা চাকরিতে যোগ দেওয়ার সুপারিশ পেয়েছিলেন, তাঁরা হাইকোর্টে আসেন। তাঁদের আইনজীবী এক্রামুল বারি এদিন আদালতকে জানান, যে সুপারিশ মামলাকারীরা পেয়েছেন, তার মেয়াদ ৯০ দিনের। সুপারিশ এসেছিল জানুয়ারি মাসে। ফলে চাকরি পাওয়ার সুযোগ এঁরা স্রেফ মামলার কারণে হারাতে চলেছেন। সেই সূত্রে আদালত বলেছে, ওই সুপারিশ বহাল রাখতে হবে।
অন্যদিকে, দীর্ঘ জট কাটিয়ে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেও পিছু ছাড়ছে না ‘দুর্নীতি’র বিতর্ক৷ কলকাতা হাইকোর্টে চূড়ান্ত সমালোচনার মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ কলকাতা হাইকোর্টের সমালোচনার মুখে রাজ্য সরকারও৷ মামলাকারী ও রাজ্যের সওয়াল জবাব শোনার পর উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ হাইকোর্টের৷
আবেদনকারীর আইনজীবী সামিম আহমেদ জানিয়েছেন, ‘‘আপার প্রাইমারিতে নিয়োগের দ্বিতীয় দফায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরি প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও স্কুল সার্ভিস কমিশন বহু অপ্রশিক্ষিতদের ডেকেছে৷ আমার এই বিরোধিতা করেছি৷ আদালত আমাদের পক্ষে নির্দেশ দিয়েছে৷’’
আবেদনকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের হয়ে বৃহস্পতিবার সওয়াল করেন আইনজীবী সামিম আহমেদ৷ আদলতে দাঁড়িয়ে তিনি উচ্চ প্রাথমিকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের অগ্রাধিকার দেওয়ার আবেদন জানান৷ আদালতের তরফে কমিশন-রাজ্য ও মামলাকারীদের সওয়াল শুনে সমস্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মামলাকারীদের ২৭ মের পর ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য কমিশনকে নির্দেশ দেন৷ আদালতের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, অবিলম্বে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সমস্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীদের ডাকতে হবে৷ ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের সুযোগ দিতে হবে বলেও জানানো হয়৷ আগামী জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে অপ্রশিক্ষিতদের মামলার শুনানি রয়েছে হাইকোর্টে৷