কলকাতা: নাম রয়েছে মেধা তালিকায়৷ কিন্তু চাকরি জোটেনি তাঁদের৷ স্কুল সার্ভিল কমিশনের ‘দুর্নীতি’র বিরুদ্ধে তাই সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কের ৫ নম্বর গেটের সামনে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এসএসসি চাকরি প্রার্থীরা৷ টানা ১৫০ দিন ধরে চলছে এই আন্দোলন৷ আজ একটি ডেপুটেশন জমা দেওয়ার কথাও রয়েছে তাঁদের৷ সম্প্রতি রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যেখানে মেধাই হবে শেষ কথা৷ কোনও লবি নয়, সাফ জানিয়েছেন তিনি৷ অথচ ১৫০ দিন ধরে রাজপথের ধুলো মেখে পড়ে রয়েছেন হবু শিক্ষকরা৷ কোথায় সরকার?
আরও পড়ুন- কলকাতা ট্যাঁকশালে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগে হয়েছিল এসএলএসটি পরীক্ষা হয়৷ আন্দোলনরত প্রার্থরা প্রত্যেকেই এই পরীক্ষা দিয়েছিলেন এবং মেধা তালিকায় তাঁদের নাম রয়েছে৷ অভিযোগ, মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্বেও তাঁরা বঞ্চিত৷ বছরের পর বছর তাঁদের নিয়োগ করা হয়নি৷ আজ দেড়শ দিন হল সমস্ত প্রতিকূলতা সহ্য করে রাস্তায় পড়ে রয়েছেন হবু শিক্ষকরা৷ অথচ সরকারি উদাসীন৷ মুখ্যমন্ত্রী ভোটের আগে দেওয়া সকল প্রতিশ্রুতি পালনের উদ্যোগ নিয়েছেন৷ এমনকী অ্যাপেনডিক্সের মতো বাদ পড়া বিধান পরিষদকে ফের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ শুরু হয়েছে৷ কিন্তু নবম থেকে দ্বাদশের এই চাকরি প্রার্থীদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি এখন অস্তাচলে৷
আন্দোলনরত এক চাকরি প্রার্থী বলেন, ‘‘আমরা সকলেই প্রথম এসএলএসটি-র মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থী৷ ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে প্রেস ক্লাবের সামনে আমরা ধরনায় বসেছিলাম৷ অনশন আন্দোলনের ২৯ দিনের মাথায় তদানীন্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মেধা তালিকাভুক্ত কেউ বঞ্চিত হবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন৷’’ যদিও সেই প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ করা হয়নি৷ তবে এখনও মুখ্যমন্ত্রীর উপর আস্থা রাখছেন প্রার্থীরা৷ ওই প্রার্থীর কথায়, ভোটের আগে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পথে এগোচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাই আমারাও আশাবাদী৷
আরও পড়ুন- ডিসট্রিক্ট পাবলিক রিলেশন অফিসার পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি
ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দিনের পর দিন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের হবু শিক্ষকরা৷ তাঁদের ঠিকানা হয়েছে রাস্তার ধারে টাঙানো ত্রিপল৷ অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে রয়েছেন মহিলারা৷ জানুয়ারি মাসে প্রবল শীত থেকে গ্রীষ্মের দাবদাহ সহ্য করার পর বৃষ্টির জল যন্ত্রণা ভোগ করে একই ভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা৷ দুর্বিসহ যন্ত্রণার মধ্যে রয়েছেন নেয়েরা৷ শৌচাগারের জন্য বহু দূর যেতে হয় তাঁদের৷ বৃষ্টির মধ্যে ভিজে কাপড়ে সারা রাত রাস্তায় কাটাতে হয়৷ কথা বলতে গিয়ে চোখে জল আসে এক মহিলা চাকরি প্রার্থীর৷ অথচ এখনও সরকার নিরুত্তাপ৷ এর আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল৷ তবে লকডাউন শুরু হওয়ায় সেই বিষয়টি আর অগ্রসর হয়নি৷